২৪৪ তাড়া করে ১৪.২ ওভারে জয়, ইতিহাস গড়ল বুলগেরিয়া
Published: 12th, July 2025 GMT
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইতিহাস গড়ল বুলগেরিয়া। ২০ ওভারে ২৪৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে জয় তো পেলই, সেটাও মাত্র ১৪.২ ওভারে! জিব্রাল্টারের বিপক্ষে ৩৪ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় বুলগেরিয়া। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ২০০ বা তার বেশি রান তাড়ার রেকর্ড।
এদিন বুলগেরিয়ার রানরেট ছিল ১৭.
এই তালিকায় বুলগেরিয়া-জিব্রাল্টার ম্যাচের পর দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ২০২৫ সালের রোমানিয়া-বেলজিয়াম ম্যাচ (রানরেট ১৩.৬৮)। এরপর রয়েছে ২০২৩ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৩.৩১) ও ২০১৯ সালের নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড ম্যাচ (১৩.২৭)।
শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নয়, টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের হিসেবেও পিছিয়ে পড়েছে আইপিএলের রেকর্ড। এতদিন অবিচ্ছিন্ন ম্যাচে সর্বোচ্চ রানরেটের রেকর্ড ছিল ২০২৪ সালের আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ম্যাচের (১৩.৭২)। এবার সেটিও ছাড়িয়ে গেছে বুলগেরিয়া-জিব্রাল্টার লড়াই।
একইসঙ্গে আইসিসির অ্যাসোসিয়েট দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রানের ম্যাচগুলোর তালিকাতেও দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এই ম্যাচটি (৪৮৭ রান)। শীর্ষে রয়েছে ২০২২ সালের বুলগেরিয়া-সার্বিয়া ম্যাচ, যেখানে উঠেছিল ৪৮৮ রান। তৃতীয় স্থানেও রয়েছে বুলগেরিয়া-সার্বিয়ার আরেক ম্যাচ (৪৫৪ রান)।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র কর ড
এছাড়াও পড়ুন:
খলাপাড়ার গণহত্যা দিবস: স্বাধীনতার প্রান্তে শহীদ হন ১০৬ জন
১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বাঙালি জাতির ইতিহাসে বেদনাবিধুর একটি দিন। এদিন, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের ন্যাশনাল জুট মিলস রক্তাক্ত হয়। মিলের ভেতর কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী সন্দেহে আটক ১০৬ জন নিরীহ বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
সেই থেকে প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর শহীদদের স্মরণে কালীগঞ্জ গণহত্যা দিবস পালিত হয়ে আসছে। উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসমূহ শহীদদের গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারা দোয়া ও মোনাজাত করেন শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায়।
আরো পড়ুন:
‘১৭ বছরে ৯৪ হাজার থেকে মুক্তিযোদ্ধা আড়াই লাখ করা হয়েছে’
১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল
কালীগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম হুমায়ুন মাস্টার সেই দিনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি জানান, ১৯৭১ সালের সেই সকালে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা নাস্তার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখনই পাশের ঘোড়াশাল ক্যাম্প থেকে নদী পার হয়ে হানাদার বাহিনী মিল চত্বরে প্রবেশ করে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধানে অভিযান চালানোর নামে সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরস্ত্র বাঙালিদের ধরে ধরে জড়ো করে।
সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে চলে ব্রাশফায়ার। প্রাণহীন হয়ে পড়ে একের পর এক শরীর। ন্যাশনাল জুট মিলে নেমে আসে নীরবতা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গণহত্যা শেষে পাকবাহিনী মিলের দক্ষিণ পাশের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়। শহীদদের মরদেহ পড়ে ছিল মিলের সুপারি বাগানে। ভয় ও আতঙ্কে কেউ কাছে যাওয়ার সাহস পাননি। মরদেহগুলো শেয়াল-শকুনের খাদ্যে পরিণত হয়। স্বাধীনতার পর এলাকাবাসী মিল চত্বরে প্রবেশ করে বিকৃত অবস্থায় ১০৬ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করেন। তারপর মিলের দক্ষিণ পাশে কবর খুঁড়ে একসঙ্গে শহীদদের সমাহিত করেন তারা।
শহীদদের স্মরণে মিল কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করেন একটি স্মৃতিস্তম্ভ ‘শহীদের স্মরণে ১৯৭১’। গণকবরের পাশেই পরবর্তীতে গড়ে ওঠে একটি পাকা মসজিদ-যেখানে প্রতিনিয়ত দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া হয়।
কালীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এটিএম কামরুল ইসলাম বলেন, “খলাপাড়ার সেই ১০৬ শহীদের রক্তগাথা কেবল অতীত নয়-এটি জাতির কাছে এক চিরন্তন দায়বদ্ধতার স্মারক। নতুন প্রজন্মের কাছে এই ইতিহাস পৌঁছে দেওয়া আর শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি ন্যায্য সম্মান জানানোই হোক আমাদের প্রতিদিনের অঙ্গীকার।”
ঢাকা/মাসুদ