খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের নির্বাচনী মাঠে হঠাৎ করেই সবচেয়ে আলোচিত শব্দ হয়ে উঠেছে ‘বেহেশতের টিকিট’। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে তীব্র বাগ্‌যুদ্ধ শুরু হয়েছে। পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত হচ্ছে ভোটের মাঠ।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কয়রা উপজেলার ফুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত নির্বাচনী প্রচার সভায় দলের মনোনীত প্রার্থী ও খুলনা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব মনিরুল হাসান অভিযোগ করেন, দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়ার ‘টিকিট’ মিলবে—জামায়াত এমন প্রলোভন দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, এ ধরনের মিথ্যা প্রচার ধর্মীয় অনুভূতির অপব্যবহার। যারা এসব বলে এবং যারা বিশ্বাস করে, উভয়ই সমানভাবে দায়ী।

মনিরুল হাসান দাবি করেন, জামায়াত ধর্মের ভয় দেখিয়ে সরলমনা নারীদের বিভ্রান্ত করে ভোট নিতে চাচ্ছে। বিএনপির কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের এসব বিভ্রান্তি সম্পর্কে সচেতন করছেন।

সভায় মনিরুল হাসান বলেন, ধানের শীষের প্রার্থীকে ‘বহিরাগত’ বলে যে প্রচার চালানো হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। তিনি উল্লেখ করেন, যদিও তিনি খুলনার অন্য একটি উপজেলার সন্তান, তবু এই এলাকার উন্নয়নে কাজ করার ক্ষেত্রে তাঁর কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, ‘খুলনা-৬ আসনের জামায়াত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদও খুলনা শহরে থাকেন এবং কয়রা-পাইকগাছায় তাঁর স্থায়ী বাড়ি নেই। উনি যে খুলনা থেকে এসে নির্বাচন করছেন, আমিও একইভাবে করছি।’

মনিরুল হাসান বলেন, ‘জামায়াত প্রার্থীর জন্ম ভারতে এমন কথাও মাঠে শোনা যাচ্ছে। অথচ আমার জন্ম খুলনায়, এ কারণে এই জনপদে আমার অগ্রাধিকার বেশি।’ অতীতে বিএনপি-জামায়াত জোটের সময় জামায়াতের প্রার্থীকে এমপি নির্বাচিত করা হলেও কয়রা-পাইকগাছায় উন্নয়ন হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও একই আসনের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বেহেশতের টিকিট’ দেওয়া বা বিক্রির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ‘উনি যদি এমন কোনো টিকিট কারও কাছ থেকে দেখাতে পারেন, তাহলে বুঝব তাঁর অভিযোগ সঠিক। এটি নিছক অপপ্রচার।’ নিজের জন্মস্থান ও বাড়ি নিয়ে প্রচারকে তিনি মিথ্যাচার উল্লেখ করে বলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর কয়রা গ্রামেই তাঁর পৈতৃক বাড়ি আছে।

এদিকে ‘বেহেশতের টিকিট’ নিয়ে সর্বশেষ ব্যাখ্যা এল জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের কাছ থেকে। তিনি বলেন, তাঁরা কোনো টিকিট বিক্রি করেন না। কোরআন-হাদিসে জান্নাত-জাহান্নামের পথ স্পষ্টভাবে বর্ণিত—সেটাই তাঁরা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেন। তাঁর ব্যাখ্যা, সৎ প্রার্থীকে ভোট দিলে ভোটারও সওয়াব পান, আর দুর্নীতিবাজকে ক্ষমতায় বসালে তার পাপের একটি অংশ সেই ভোটারের ওপরও বর্তায়। এটাকে যদি কেউ ‘বেহেশতের টিকিট’ বলে মনে করেন, সেটা তাঁর নিজস্ব ব্যাখ্যা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব হ শত র ট ক ট মন র ল হ স ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবি উপাচার্যের নামে ফেসবুকে ভুয়া আইডি, পাঠানো হচ্ছে রিকোয়েস্ট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নামে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খোলা হয়েছে। আইডি থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো হচ্ছে। 

রবিবার (১৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, হবিগঞ্জে তরুণী গ্রেপ্তার

মেটার রোবট দেখতে হবে মানুষের মতো

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের ছবি ব্যবহার করে তার নামে কে বা কারা ফেসবুকে একটি ভুয়া আইডি খুলেছে। এই ভুয়া আইডি থেকে অনেকের কাছে ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠানো হচ্ছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, Niaz Ahmed Khan নামে মাননীয় উপাচার্যের একটি মাত্র ফেসবুক আইডি রয়েছে। তার ফেসবুক লিঙ্ক হলো- https://www.facebook.com/Khan.niaz.ahmed

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ