আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা
Published: 16th, November 2025 GMT
টেলিভিশনকে বাংলায় বলা হয় ‘দূরদর্শন’। মাত্র কয়েক বছর আগেও এটি সত্যিই ছিল দূরদর্শনের মাধ্যম—দূরের কোনো ঘটনা চোখের সামনে এনে দেওয়ার একটি যন্ত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে টিভির সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও ব্যবহার। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে আজকাল টিভি হয়ে উঠেছে একটি ‘স্মার্ট হাব’, যেখানে সিনেমা দেখা, গেম খেলা, ভিডিও কল করা, এমনকি বাড়ির অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আধুনিক টিভিগুলোর সুবিধা কেবল ছবি বা সাউন্ডে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এগুলো এখন ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স।
স্মার্ট অপারেটিং সিস্টেমবর্তমান প্রজন্মের টিভিগুলো শুধু নাটক কিংবা সিনেমা দেখার একটি স্ক্রিন নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ স্মার্ট ডিভাইস। স্মার্ট টিভিতে অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) হিসেবে টাইজেন, অ্যান্ড্রয়েড টিভি, রোকু টিভি এবং ওয়েবওএস ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এই সিস্টেমগুলোর মাধ্যমেই বর্তমান যুগের টিভিগুলো হয়ে উঠছে আধুনিক থেকে আধুনিকতর। ব্যবহারকারীরা এখন চাইলেই স্মার্ট টিভিগুলোতে নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যামাজন প্রাইম কিংবা যেকোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মও সরাসরি উপভোগ করতে পারেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ‘অ্যাপ স্টোর ইন্টিগ্রেশন’। টিভিতেই এখন মোবাইলের মতো অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। ওয়েদার অ্যাপ, গেমস, নিউজ—এমনকি ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপও ব্যবহার করা যায় টিভির বড় স্ক্রিনে।
ভয়েস কন্ট্রোল: কথা বলেই নিয়ন্ত্রণরিমোট খোঁজার ঝামেলা এখন যেন অতীত। আগে টিভির সবকিছু রিমোট দ্বারা পরিচালিত হলেও এখনকার আধুনিক টিভিগুলোতে আছে ভয়েস কন্ট্রোল—যেখানে ব্যবহারকারীর ভয়েস দ্বারাই টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই প্রযুক্তি বিক্সবি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যালেক্সার মতো ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে কাজ করে। এর পাশাপাশি কিছু হাই-এন্ড মডেলে রয়েছে জেসচার কন্ট্রোল—যেখানে হাত নাড়লেই টিভি রেসপন্স করে। টিভি চালু-বন্ধ করা, চ্যানেল পরিবর্তন—এমনকি ভলিউম বাড়ানো-কমানোর মতো কাজও করা যায় হাতের ইশারায়। এ ক্ষেত্রে গ্যালাক্সি ওয়াচের কথা বলা যায়। এটি হাতের নড়াচড়াকে শনাক্ত করে এসব কমান্ড কার্যকর করে।
মাল্টি-ডিভাইস কানেকটিভিটি: এক স্ক্রিনে সব সংযোগবর্তমানে টিভি শুধু সম্প্রচার মাধ্যম নয়; এটি হয়ে উঠেছে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল ইউনিট। মোবাইল ফোন, স্পিকার, ল্যাপটপ, গেমিং কনসোল—সব ডিভাইস এখন টিভির সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করা যায়।
বেশির ভাগ স্মার্ট টিভিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এইচডিএমআই এআরসি, এয়ার প্লে, মিরাকাস্টসহ বিভিন্ন সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে নিজের ফোনের ছবি, ভিডিও বা প্রেজেন্টেশন মুহূর্তেই বড় স্ক্রিনে শেয়ার করতে পারেন। সেই সঙ্গে আধুনিক টিভিগুলোতে রয়েছে গেমারদের জন্য এইচডিএমআই ২.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জামায়াতসহ ৮ দলের
জুলাই জাতীয় সনদ জারির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দল। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করার যে সিদ্ধান্ত, সেটির নিন্দা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে সমমনা আট দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই সনদ জারির জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ। তবে এই সনদের কার্যকারিতার জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অপরিহার্য। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা গণভোট ও নির্বাচন একসঙ্গে হবে বলে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন। দলগুলো এর নিন্দা জানাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা যেন এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন, সেই আহ্বান জানাচ্ছে দলগুলো।
রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচন এবং বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে যে জট লেগে আছে, সেটির সুষ্ঠু সমাধান হবে, এমনটাই আশা করেছিল সমমনা দলগুলো। কিন্তু ভাষণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জাতির মুক্তির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে কিছু বিষয় আছে যা বিবেচনায় নেওয়া যায়। আবার কিছু বিষয় আছে, যেটির কারণে ভালো দিকগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে।
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, সমমনা দলগুলো বলে আসছে, কোনটি জনগণ গ্রহণ করেছে আর কোনটি গ্রহণ করেনি, সেটির জন্য গণভোট আগে নির্ধারণ হয়ে যাওয়া দরকার। জনগণ কিছুই গ্রহণ না করলে আগের মতো নির্বাচন হবে। আর জনগণ যদি কিছু গ্রহণ করে বা পুরোটা গ্রহণ করে, তার ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে।
প্রধান উপদেষ্টা গণভোটের বিষয়ে দুটো ‘ঠুনকো যুক্তি’ দিয়েছেন অভিযোগ করে জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, প্রথমত টাকা সাশ্রয়ের কথা বলা হয়েছে। সাশ্রয় কিছুটা হবে। তবে জাতির প্রয়োজনেই যেমন বাজেট হয়, বাজেট খরচও হয়। সে হিসেবে গণভোটে যেটি খরচ হবে, সেটি উপকারের চেয়ে নগণ্য। আর দ্বিতীয়ত একসঙ্গে নির্বাচন ও গণভোট হলে গণভোটে জনগণ যেগুলো ‘হ্যাঁ’ করবে, সেগুলো বাস্তবায়নে জটিলতা তৈরি হবে।
আট দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আগামীকাল শুক্রবার বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আট দলের পূর্বঘোষিত দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।