গেল প্রায় দেড় মাস ধরে পতনের ধারা থেকে বের হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে শেয়ারবাজার। এ সময়ে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির মধ্যে ৩২৬টির বা ৯০ শতাংশের দর বেড়েছে। গত ২৮ মের পর গড়ে শেয়ারদর বেড়েছে সোয়া ৯ শতাংশ। এদিকে গত জুন শেষে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রকাশিত শেয়ার ধারণের হার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার বেড়েছে। দরবৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণ ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্টরা।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩২৮টি শেয়ার ধারণের তথ্য প্রকাশ করেছে। যে ৩২টি কোম্পানি এখনও এ তথ্য প্রকাশ করেনি, সেগুলোর অন্তত ১৫টি গত চার মাস থেকে চার বছর পর্যন্ত তথ্য প্রকাশ করছে না। গত জুনে ১৮৪ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার বেড়েছে। তবে একই সময়ে কমেছে ১২১টিতে। আবার প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার বাড়লেও বিপরীত চিত্র ছিল বিদেশিদের বিনিয়োগে। এ সময়ে বিদেশিদের শেয়ার ধারণের হার বেড়েছে ১৩টিতে, কমেছে ২৯টিতে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম পাঁচ মাস পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের হ্রাস-বৃদ্ধির ধারা ছিল মিশ্র। তবে জানুয়ারি থেকে এ ধারার বদল ঘটে। যেমন– ২০২৪ সালের তুলনায় ডিসেম্বরে ১৬০ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার বৃদ্ধির বিপরীতে ১৬৯টিতে কমেছিল। তবে গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়কালে ২০১ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার বেড়েছে, কমেছে ১২৪টিতে। প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণের হার কমেছে।

জানতে চাইলে প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, সার্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অর্থনীতি ধসে পড়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটিয়ে একটি নির্বাচনের দিকেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সবগুলো বিষয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানোর কৌশলী বিনিয়োগকারীদের অনেকে শেয়ারে ঝুঁকছেন– এর প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার বৃদ্ধির তথ্যে।

যেসব কোম্পানিতে বেশি বেড়েছে

শতাংশীয় পয়েন্ট বিবেচনায় গত জুনে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সী পার্ল হোটেল, বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশীয় পয়েন্ট। এর পরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে নাহী অ্যালুমিনাম, হাক্কানি পাল্প, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, দেশ গার্মেন্টস, ইন্দোবাংলা ফার্মা, ড্রাগন সোয়েটার, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, স্টাইল ক্রাফট, কপারটেক, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, লাভেলো, ন্যাশনাল টিউবসসহ কিছু কোম্পানি।

সী পার্লসহ কয়েকটি কোম্পানির প্রকৃত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে কিনা, তা জানতে চাইলে একাধিক ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা সন্দেহ প্রকাশ করেন। তারা জানান, গত মে শেষে এ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার ছিল সাড়ে ১২ শতাংশ, যা গত জুনের শেষে বেড়ে ২৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এক সময়ের কারসাজির শীর্ষে থাকা শেয়ারটিতে নানা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা আছে। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে এর দর ৩০ টাকা থেকে বেড়ে সর্বশেষ প্রায় ৬০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। অর্থাৎ গত পাঁচ মাসে দর বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। 

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, টাকার অঙ্কে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সী পার্ল শীর্ষে ছিল। এর পরিমাণ প্রায় ৮৫ কোটি টাকা। বাজার মূল্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৩০ কোটি টাকার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে লাভেলোর। তৃতীয় অবস্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মারও প্রায় ৩০ কোটি টাকার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে। এর পরের অবস্থানে থাকা কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সে প্রায় ১০ থেকে ৩০ কোটি টাকার বিনিয়োগের তথ্য মিলেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র গত জ ন

এছাড়াও পড়ুন:

তেলবাহী ট্যাংকারের সঙ্গে ঝুলছিল যুবকের মরদেহ

ফেনীর দাগনভূঞায় তেলবাহী ট্যাংকার লরির সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থান এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বসুরহাট রোডের নতুন পোলের পাশে ভূঁইয়া এলপিজি ফিলিং স্টেশন থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত যুবকের নাম সুজন চন্দ্র ভৌমিক (৪০)। তিনি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর ফকিরা ইউনিয়নের চরখালী গ্রামের প্রফুল্ল কুমার ভৌমিকের ছেলে। সুজন ভূঁইয়া এলপিজি ফিলিং স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী, ফিলিং স্টেশন ও পুলিশ সূত্র জানায়, সুজন রাতে কাজ শেষে দিনে একটি দোকান পরিচালনা করতেন। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন পাম্প ভবনের উত্তর পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা তেলের গাড়ির রেলিংয়ের সঙ্গে সুজনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।

ফিলিং স্টেশনের মালিক আবুল হোসেন ভূঁইয়া জানান, ‘সুজনের কাছে আমি প্রায় তিন লাখ টাকার বেশি টাকা পেতাম। তিনি টাকা না দেওয়ায় ফিলিং স্টেশনের কাজে আসতে নিষেধ করেছিলাম। এরপরের বিষয়গুলো আমার জানা নেই।’

নিহত সুজনের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁর বাবা সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং মা ভারতে থাকেন। সুজন নোয়াখালীর বাড়িতে একাই থাকতেন।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহিদ পারভেজ জানান, ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে—এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ