নড়াইলে পুকুরে ডুবে মামাতো-ফুফাতো দুই ভাইয়ের মৃত্যু
Published: 13th, July 2025 GMT
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়নের উত্তর খাশিয়াল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই শিশু হলো শাকিব শেখ (৫) ও মানিক ইসলাম (৪)। তাঁরা মামাতো-ফুফাতো ভাই। শাকিব উত্তর খাশিয়াল গ্রামের জাকাত শেখের ছেলে। মানিক তাঁর ভাগনে। মানিকের বাবার নাম আরিফুল ইসলাম। তাঁদের বাড়ি বরিশালে হলেও মানিক দীর্ঘদিন ধরে তাঁর মায়ের সঙ্গে মামাবাড়ি উত্তর খাশিয়াল গ্রামে থাকত।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো গতকাল বিকেলে বাড়ির আঙিনায় একসঙ্গে খেলছিল শাকিব ও মানিক। এ সময় পরিবারের লোকজন কাজে ব্যস্ত ছিলেন। খেলতে খেলতে এক পর্যায়ে দুই শিশু বাড়ির পাশে থাকা একটি ছোট পুকুরে পড়ে যায়। সন্ধ্যায় বাড়ির লোকজন তাঁদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে পুকুরে এক শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। পরে পুকুর থেকে অন্য শিশুর মরদেহও উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা।
দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে খাশিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বি এম বরকত উল্লাহ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার গ্রামেই ঘটেছে। দুই শিশু খেলা করছিল। একপর্যায়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের দুজনের দাফনের প্রস্তুতি চলছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।