আবারও খালেদের ৪ উইকেট, আবারও জয় রংপুরের
Published: 14th, July 2025 GMT
শেষ ওভারে হোবার্ট হারিকেনসের দরকার ছিল ১৩ রান। প্রথম বলে ওয়াইড দিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। পরের বল ছক্কা মোহাম্মদ নবীর। এরপর ২ রান। রংপুর রাইডার্সকে হারাতে তখন ৪ বলে মাত্র ৪ রান দরকার হোবার্টের। সেখান থেকেই কিনা ম্যাচ জিতে গেল রংপুর। শেষ ৪ বলে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২ রান তুলতে পারে হোবার্ট। ১ রানে জিতে গায়ানায় গ্লোবাল সুপার লিগে টানা দ্বিতীয় জয় পেলে বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি রংপুর। আজমতউল্লাহ নন, ৪ উইকেট নিয়ে আগের ম্যাচের মতো আজও রংপুরের জয়ের নায়ক পেসার খালেদ আহমেদ।
আরও পড়ুনপ্রীতি জিনতার সঙ্গে ডু প্লেসির ভিডিও পোস্ট করে সমালোচনার মুখে দিল্লি৩ ঘণ্টা আগেরংপুর করেছিল ৬ উইকেটে ১৫১ রান। রান তাড়ায় হোবার্ট প্রথম পাঁচ ওভারে ৫১ রান তুলে ফেলে।ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে এসে ১৯ বলে ৩৪ রান করা বেন ম্যাকডরমেটকে ফিরিয়ে প্রথম উইকেট পান খালেদ। নিজের পরের ওভারে কোনো উইকেট না পেলেও মাত্র ৪ রান দেন খালেদ। ১৭তম ওভারে খালেদ যখন নিজের তৃতীয় ওভার করতে আসেন, তখন হোবার্টের দরকার ২৪ বলে ৩৬ রান।
শুরুতে একটা চার হজম করলেও ওই ওভারেই খালেদ ফিরিয়ে দেন ১৩ বলে ২০ রান করা ওডিন স্মিথকে। ১৯তম ওভারে নিজের শেষ ওভার করতে এসে আরও ২ উইকেট নেন খালেদ। ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে সব মিলিয়ে ৪ উইকেট পান তিনি।
বোলিংয়ে খালেদ ভালো করলেও রংপুরের বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা তেমন ভালো করতে পারেননি। ওপেনার সৌম্য সরকার ৬ বলে ৫, ইয়াসির আলী ১২ বলে ৯ আর নুরুল হাসান ৮ বলে ৩ রান করেন। তবুও ইব্রাহিম জাদরানের ৩১ বলে ৪৩ ও কাইল মেয়ার্সের ৪২ বলে ৬৭ রানের ইনিংসে ভর করে ১৫১ রানের সংগ্রহ পায় রংপুর।
ওই রান তাড়ায় নেমে হোবার্টের নবী ৩৬ বলে ৪৪ রান করেন। বেন ম্যাকডরমটের ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ৩৪ রান। তবে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার ব্যাট করলেও ১৫০ রানে অলআউট হয়েছে হোবার্ট।
আরও পড়ুনছন্দে ফিরলেন লিটন, সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খলাপাড়ার গণহত্যা দিবস: স্বাধীনতার প্রান্তে শহীদ হন ১০৬ জন
১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বাঙালি জাতির ইতিহাসে বেদনাবিধুর একটি দিন। এদিন, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের ন্যাশনাল জুট মিলস রক্তাক্ত হয়। মিলের ভেতর কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী সন্দেহে আটক ১০৬ জন নিরীহ বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
সেই থেকে প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর শহীদদের স্মরণে কালীগঞ্জ গণহত্যা দিবস পালিত হয়ে আসছে। উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসমূহ শহীদদের গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারা দোয়া ও মোনাজাত করেন শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায়।
আরো পড়ুন:
‘১৭ বছরে ৯৪ হাজার থেকে মুক্তিযোদ্ধা আড়াই লাখ করা হয়েছে’
১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল
কালীগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম হুমায়ুন মাস্টার সেই দিনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি জানান, ১৯৭১ সালের সেই সকালে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা নাস্তার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখনই পাশের ঘোড়াশাল ক্যাম্প থেকে নদী পার হয়ে হানাদার বাহিনী মিল চত্বরে প্রবেশ করে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধানে অভিযান চালানোর নামে সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরস্ত্র বাঙালিদের ধরে ধরে জড়ো করে।
সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে চলে ব্রাশফায়ার। প্রাণহীন হয়ে পড়ে একের পর এক শরীর। ন্যাশনাল জুট মিলে নেমে আসে নীরবতা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গণহত্যা শেষে পাকবাহিনী মিলের দক্ষিণ পাশের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়। শহীদদের মরদেহ পড়ে ছিল মিলের সুপারি বাগানে। ভয় ও আতঙ্কে কেউ কাছে যাওয়ার সাহস পাননি। মরদেহগুলো শেয়াল-শকুনের খাদ্যে পরিণত হয়। স্বাধীনতার পর এলাকাবাসী মিল চত্বরে প্রবেশ করে বিকৃত অবস্থায় ১০৬ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করেন। তারপর মিলের দক্ষিণ পাশে কবর খুঁড়ে একসঙ্গে শহীদদের সমাহিত করেন তারা।
শহীদদের স্মরণে মিল কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করেন একটি স্মৃতিস্তম্ভ ‘শহীদের স্মরণে ১৯৭১’। গণকবরের পাশেই পরবর্তীতে গড়ে ওঠে একটি পাকা মসজিদ-যেখানে প্রতিনিয়ত দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া হয়।
কালীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এটিএম কামরুল ইসলাম বলেন, “খলাপাড়ার সেই ১০৬ শহীদের রক্তগাথা কেবল অতীত নয়-এটি জাতির কাছে এক চিরন্তন দায়বদ্ধতার স্মারক। নতুন প্রজন্মের কাছে এই ইতিহাস পৌঁছে দেওয়া আর শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি ন্যায্য সম্মান জানানোই হোক আমাদের প্রতিদিনের অঙ্গীকার।”
ঢাকা/মাসুদ