মাগুরায় পেট্রলবোমা হামলায় পাঁচজন নিহতের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণার দিন মঙ্গলবার (২২ জুলাই) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন আসামিরা।

এতে করে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়নি। আসামিদের ওই আবেদন আমলে নিয়ে আগামী ২৪ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য করেছেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (প্রথম) বিচারক নাছির উদ্দীন।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এ মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল। সকালে মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া তিন আসামির জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

আরো পড়ুন:

জীবন দিয়ে ২০ শিক্ষার্থীকে বাঁচানো মাহরিন জিয়াউর রহমানের ভাতিজি

দগ্ধদের চিকিৎসায় সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে: সাখাওয়াত 

আসামিপক্ষের আইনজীবী কুমুদ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “এ মামলায় যারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা জবানবন্দি প্রত্যাহার করতে চান। কারণ, তাদের বিগত সরকারের আমলে বলপ্রয়োগ করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল। রাজনৈতিকভাবে বিএনপি ও জামায়াতকে ধ্বংস করার জন্যই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছিল।”

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, “আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ বিচারক আগামী ২৪ আগস্ট ওই মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।”

২০১৫ সালের ২১ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে মাগুরা-যশোর মহাসড়কের মঘির ঢাল এলাকায় একটি ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ট্রাকচালক ও শ্রমিকসহ নয়জন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে পাঁচজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ঘটনায় পরদিন ২২ মার্চ মাগুরা সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুস সালাম বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের ২৬ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে পেট্রলবোমা ছুড়ে অগ্নিসংযোগ, হত্যাকাণ্ড ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন শালিখা উপজেলার ভাটোখালী গ্রামে বালু নামিয়ে ট্রাকটি মাগুরা শহরের দিকে ফিরছিল। মঘির ঢাল এলাকায় পৌঁছালে ট্রাকটিতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে ট্রাকে থাকা ৯ আরোহী দগ্ধ হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন, ট্রাকচালক ইমরান মোল্লা, মতিন বিশ্বাস, শাকিল, ইয়াদুল ও রওশন আলী। দগ্ধ হলেও প্রাণে বেঁচে যান ফারুক, আরব আলী, নাজমুল হোসেন ও ইলিয়াস বিশ্বাস। তদন্ত শেষে ওই বছরের আগস্টে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো.

ইমাউল হক ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে আছেন, মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ, সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু তাহের, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ, জেলা বিএনপির সদস্য মাসুদ হাসান খান, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আলমগীর হোসেন, বর্তমান আমির এমবি বাকের, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আমির ফারুক হোসেন এবং জেলা বিএনপির সদস্য ও আইনজীবী মিজানুর রহমান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই এ মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। বিচার চলাকালে ৬২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এ ছাড়া তিনজন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে তারা ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ষ র আইনজ ব প ট রলব ম ন আস ম সদস য ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

খেজুর ও জায়নামাজ নিয়ে আদালতে মডেল মেঘনা আলম

রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে হওয়া মামলায় জব্দ করা মডেল মেঘনা আলমের ম্যাকবুক, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না, তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এসব ডিভাইসের মালিকানা যাচাই করে আগামী ৩১ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।  

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।  

এদিন মেঘনা আলমকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১১টা ৯ মিনিটে মামলার শুনানি শুরু হয়। এ সময় মেঘনা আলম খেজুর ও জায়নামাজ হাতে নিয়ে আদালতের কাঠগড়ায় ওঠেন।  

আরো পড়ুন:

সুস্মিতার অসম প্রেম চর্চায়

‘মাসুদ রানা’ সিরিজের গল্প নিয়ে ওয়েব ফিল্ম, প্রধান চরিত্রে মৌ

এরপর মেঘনার আইনজীবী মহসিন রেজা ও মহিমা বাঁধন মেঘনার ম্যাকবুক, ল্যাপটপ, মোবাইল ও পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিতে শুনানি করেন।  

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হারুন অর রশিদ বিরোধিতা করে বলেন, “এটা অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর মামলা। এর আগে গত ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে মডেল মেঘনাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তার ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল হয়েছিল। গত ১৭ এপ্রিল ধানমন্ডি থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে গত ২৮ এপ্রিল আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। ২৯ এপ্রিল তিনি কারামুক্ত হন।”  

মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেঘনা আলম ও দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাত ২-৩ জন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা সুন্দরী তরুণীদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক/প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলেন।  

এরপর অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে বিভিন্ন উপায়ে তাদের সম্মানহানীর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছেন। দেওয়ান সমির কাওয়াই গ্রুপের নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের ফার্মের মালিক বলে জানা গেছে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দণ্ডাদেশের রায় বাতিল, খালাস পেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক
  • শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আদালত চত্বরে অবস্থান, সড়ক অব
  • কিশোরগঞ্জে আইনজীবীর বাড়িতে ডাকাতি, ২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট
  • আবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন
  • খেজুর ও জায়নামাজ নিয়ে আদালতে মডেল মেঘনা আলম
  • দুদকের মামলায় রাজশাহীর সাবেক জেলা রেজিস্ট্রার কারাগারে
  • বরগুনায় বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে নাকচ
  • লাল চাঁদ হত্যাকাণ্ড: তদন্তে বিচারিক কমিশন গঠন চেয়ে রিট কার্যতালিকা থেকে বাদ
  • এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি মুলতবি
  • প্রথমে পুলিশ নিয়ে বাসায়,পরে হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেন বৈষম্যবিরোধী নেতারা