ফরিদপুরে মোটর ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণার দাবিতে শ্রমিকদের একাংশের ডাকা মানববন্ধনে হামলা করেছে অপর পক্ষ। এর জেরে শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর পৌর বাসস্ট্যান্ড ও সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ১০ আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জেরে দুপুর ১২টা থেকে ফরিদপুরের সব পথে বাস চলাচল বন্ধ আছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ‘অবৈধ’ নির্বাচনের মাধ্যমে ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়ন দখলের অভিযোগ তুলে ‘প্রহসনের কমিটি’ বাতিলের দাবিতে বেলা ১১টার দিকে মানববন্ধনের আয়োজন করে শ্রমিকদের একটি পক্ষ। কর্মসূচি শুরুর কিছুক্ষণ পর অপর পক্ষের ‘নির্বাচিত’ সভাপতি ইয়াছিন মোল্লার (৪০) নেতৃত্বে অর্ধশত লোক সেখানে লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। এ সময় এলোপাতাড়ি শ্রমিকদের পেটানো হয়। হামলাকারীরা মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে স্লোগানও দেন।

এ ঘটনার পর সাধারণ শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে দুপুর ১২টা থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। তাঁরাও লাঠি নিয়ে বাস টার্মিনালে অবস্থান নেন। পরে বেলা দুইটার দিকে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে রূপ নেয় বাসস্ট্যান্ড এলাকা। আহত হন অন্তত ১০ জন শ্রমিক। তাঁদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত বর্তমান সভাপতি ইয়াসিন মোল্লা ও অপর পক্ষের নিয়ন্ত্রণ করেন সাবেক সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন।

শ্রমিক ও সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিক ইউনিয়নে ৭ হাজার ২০০ সদস্য আছেন। এর মধ্যে এক হাজার দুজন শ্রমিককে সদস্য দেখিয়ে একপাক্ষিকভাবে ২৫ জুলাই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ১৭ জুলাই সবাইকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার।

তবে ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের অধিকাংশ শ্রমিকদের না জানিয়ে গোপনে নির্বাচন করা হয়। কোনো তফসিল ঘোষণা না করে এবং ভোটার তালিকা না টানিয়ে অবৈধভাবে নির্বাচন দেখিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নটি দখল করা হয়, যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হলে সেখানেও ইয়াছিন মোল্লার নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এরপর সাধারণ শ্রমিকেরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেন।’ তিনি বলেন, তাঁরা সুষ্ঠু একটি নির্বাচন ও শ্রমিকদের ওপর হামলার বিচারের দাবি জানাচ্ছেন। অন্যথায় শ্রমিকেরা কোনো বাস চালাবেন না।

তবে ইয়াছিন মোল্লা বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো চাঁদাবাজি করতেছে। আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে আজ এই অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আজ আওয়ামী লীগের দোসররা একত্রিত হয়েছিল, তখন আমরা সাধারণ শ্রমিকেরা বাধা দিয়েছি।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আসাদউজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের নির্বাচন ও মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের উত্তেজনা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্রুতই বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে আলোচনা চলছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে  মানববন্ধন, স্মারকলিপি

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্টেনর এক কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে বন্দরে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের শিক্ষক-শিক্ষকারা।

সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১টায় বন্দর উপজেলা কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বন্দর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবারে স্মারকলিপি দাখিল করা হয়। 

মানববন্ধরে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের প্রধান এ এইচ এম শামীম আহমেদ, মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান, সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম রুবেল, শিক্ষক হাসান কবির, আনোয়ার হোসেন, আরিফ হোসেন, মাহবুব আলম, শামীমা আক্তার বর্ণা, রোকসানা আক্তার প্রমুখ। 

বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে ৬৫ হাজার ৭শ’ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। যা দেশেরন ৫০ শতাংশ শিক্ষার চাহিদা পূরণ করে থাকে।  আর এ সকল স্কুলে প্রায় ১ কোটির অধিক শিশু শিক্ষার্থী লেখা পড়া করে। আর ৫ম শ্রেণীতে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। যারা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সরকারি বৃত্তিতে অংশ নিয়েছে। 

কিন্তু গত ১৭ জুলাই বর্তমান সরকার একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বৃত্তিতে অংশ গ্রহণ বাতিল করে। যার কারণে ১ কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মুখে পতিত হয়েছে। 

বক্তরা আরো বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে ১৭ অনুচ্ছেদে দেশের সকল শিশুদের সমান অধিকার দেয়া হয়েছে। বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিশুদের বুত্তিতে অংশগ্রহণ করতে না দেয় মানে সংবিধানের ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমরা এ প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। যাতে শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে সম্মান কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন
  • ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন, স্মারকলিপি
  • ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে  মানববন্ধন, স্মারকলিপি