চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যাসহ পাঁচ মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন। চিন্ময় দাসের জামিন আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে আজ চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

এর আগে গত ৩ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় দাসের জামিনের আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর হয়েছিল। এই আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মফিজুল হক ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরসহ পাঁচ মামলায় জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তাঁর জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।

চিন্ময় দাসের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনানিতে আমরা বলেছি, মামলাগুলোর এজাহারে তাঁর (চিন্ময় দাস) নাম ছিল না। পরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে এসব মামলায় আসামি করা হয়। চিন্ময় দাস অসুস্থ। তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত।’

আদালত সূত্র জানায়, ১ জুলাই চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে আসামি করে আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এতে বলা হয়, চিন্ময় দাসের উসকানি ও নির্দেশে আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ মে চিন্ময় দাসকে আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। পরে অন্য মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আদালত সূত্র জানায়, আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই মামলায় চিন্ময় দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, আইনজীবী-বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয় মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।

এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।

যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।

আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল
  • বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা
  • শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আদালত চত্বরে অবস্থান, সড়ক অব
  • কিশোরগঞ্জে আইনজীবীর বাড়িতে ডাকাতি, ২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট
  • আবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন
  • দুদকের মামলায় রাজশাহীর সাবেক জেলা রেজিস্ট্রার কারাগারে
  • বরগুনায় বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে নাকচ
  • লাল চাঁদ হত্যাকাণ্ড: তদন্তে বিচারিক কমিশন গঠন চেয়ে রিট কার্যতালিকা থেকে বাদ
  • এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি মুলতবি
  • প্রথমে পুলিশ নিয়ে বাসায়,পরে হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেন বৈষম্যবিরোধী নেতারা