কালিয়াকৈরে মকস বিলে নৌকা ডুবে নিখোঁজ আরও এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
Published: 27th, July 2025 GMT
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মকস বিলে নৌকাডুবির ঘটনায় আরও এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে গতকাল শনিবার সকালে একজন ও বিকেলে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করে ডুবুরি দল।
মৃত তিনজন হলেন কালিয়াকৈর উপজেলার সুরিচালা এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (১৯), একই এলাকার মজনু মিয়ার ছেলে শিমুল হোসেন (১৮) ও সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের হালিম মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (১৭)। তাঁরা এ বছর এসএসসি পাস করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার সুরিচালা এলাকায় তাঁর খালার বাড়িতে বেড়াতে যায় রফিকুল ইসলাম। বিকেলে সে মেহেদী, শিমুল, আরও দুই বন্ধুসহ মোট পাঁচজন মিলে একটি ছোট নৌকায় করে মকস বিলে ঘুরতে যায়। ঝোড়ো বাতাস ও ঢেউয়ের কারণে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন সাকিব হোসেন ও আরাফাত হোসেন। তবে মেহেদী, শিমুল ও রফিকুল পানিতে তলিয়ে যান।
পরে স্থানীয় লোকজন ও কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধারকাজ শুরু করে। গতকাল সকাল আটটার দিকে রফিকুল ও বিকেল পাঁচটার দিকে শিমুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আজ সকালে কচুরিপানার নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় মেহেদীর মরদেহ।
আরও পড়ুনকালিয়াকৈরে মকশ বিলে নৌকা ডুবে নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার১৩ ঘণ্টা আগেমৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম বলেন, মকস বিলে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মানুষ এখানে স্বস্তির জন্য ঘুরতে আসে। কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইফতেখার হোসেন রায়হান চৌধুরী বলেন, মকস বিলে নৌকা ডুবে তিনজন নিখোঁজ হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজনের মরদেহ গতকাল ও একজনের মরদেহ আজ উদ্ধার করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার
বরগুনার বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়ে উঠেছেন লাইলী বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, তখন কন্যা হয়েও লাইলী সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। অভাব, ক্ষুধা আর সমাজের অবহেলা তার নিত্যসঙ্গী হয়। তারপরও থেমে যাননি লাইলী।
জীবনের চাকা ঘুরাতে, মাছ ধরা থেকে বর্গাচাষ—সবই করেছেন লাইলী। গত ২১ বছর ধরে নদী ও সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বরগুনা জেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত একমাত্র নারী জেলে তিনি। এই লাইলীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘উত্তরের বৈঠা’। এটি নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।
পরিচালক আনোয়ার হোসেন
আরো পড়ুন:
জসীমের কবরে রাতুলকে সমাহিত করে দুই ভাইয়ের আবেগঘন পোস্ট
নীনার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে কী বলেছিলেন ক্রিকেটার ভিভ?
এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তরুণ এই নির্মাতা বলেন, “এই চলচ্চিত্র শুধু একজন নারী জেলের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা, একাকিত্বে গড়ে ওঠা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। লাইলী বেগম যখন নদীতে জাল ছুঁড়ে দেন, সেই মুহূর্তে তিনি শুধু মাছ খোঁজেন না—তিনি খুঁজে ফেরেন নিজের অবস্থান, নিজের সম্মান, আর অস্তিত্বের উত্তর।”
লাইলীর চোখ দিয়ে বাস্তবতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই ফিল্মে আমি কোনো কৃত্রিম কণ্ঠ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করিনি। কারণ আমি চেয়েছি দর্শক যেন লাইলীর চোখ দিয়েই এই বাস্তবতা দেখেন। তার নীরবতা, তার কথাবার্তা, তার দৃষ্টি—সবই যেন একেকটি দৃশ্যপট হয়ে ওঠে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল শুধু একটি ফ্রেম তৈরি করে দেওয়া, বাকিটা বলে গেছেন লাইলী নিজেই—তার জীবনযাত্রা, নদী এবং অব্যক্ত যন্ত্রণা দিয়ে।”
‘লাইলী’-কে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান পরিচালক। তা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ফিল্মটি তাদের জন্য, যারা নিঃশব্দে লড়াই করেন এবং যারা কখনো আলোয় আসেন না। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রামাণ্য চিত্রটি তৈরি করেছি, পূর্ণদৈর্ঘ্য আকারে তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। এই জীবন সংগ্রামের কথা বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চাই।”
সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে লাইলী প্রমাণ করেছেন, নারীর স্থান কেবল ঘরে নয়, সাহস আর সংগ্রামেও। লাইলী কেবল একজন নারী জেলে নন, এক অনুপ্রেরণার নাম। নারী চাইলে সব পারে—লাইলী তা নিঃশব্দে প্রমাণ করেছেন বলেও মনে করেন নির্মাতা।
ঢাকা/শান্ত