তাজউদ্দীন শুধু পরিবারের নয়, রাষ্ট্রের সম্পদ
Published: 26th, July 2025 GMT
তাজউদ্দীন আহমদ শুধু তাঁর পরিবারের নয়, তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্পদ। অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেছিলেন। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের শুধু একজন নেতা ছিলেন না, একজন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে সর্বপ্রাণের প্রতি তাঁর দরদ ছিল।
আজ শনিবার বাংলা একাডেমিতে তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। সেন্টার ফর তাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকটিভিজম (সিতারা) বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ভারতীয় দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ভি কে গোকুল বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত রেখে যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। স্বাধীন বাংলাদেশে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে গ্রামীণ অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে স্বনির্ভর নীতি গ্রহণ করেছিলেন।
তাজউদ্দীন আহমদের মমত্ববোধের প্রসঙ্গে ভি কে গোকুল বলেন, সর্বপ্রাণের প্রতি তাঁর মমত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় একটা লেখায়, যেখানে একটি চড়ুই পাখির মৃত্যু তাঁকে ছুঁয়ে গিয়েছিল। তিনি স্বাধীনতাসংগ্রামের একজন নেতাই শুধু নন, তিনি সর্বপ্রাণকে তাঁর পরিবারের অংশ হিসেবেই দেখতেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান তানজিম আহমদ সোহেল তাজ বলেন, গণ–আকাঙ্ক্ষার প্রতীক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু তাঁর গ্রেপ্তারের পর যে বিশাল শূন্যতা তৈরি হয় নেতৃত্বের, সেটা পূরণ করেন তাজউদ্দীন আহমদ। দক্ষতার সঙ্গে তিনি নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন।
ইতিহাসের এ মূল্যবান অংশটি তরুণদের সামনে তুলে ধরার জন্য গবেষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাজউদ্দীন আহমদ শুধু আমাদের পিতা নন, তিনি এ রাষ্ট্রের সম্পদ। আজকে আমাদের সবার এক হতে হবে মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাইয়ের চেতনায়। এমন একটা বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না, সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।’
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে। এরপর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর প্রদর্শন করা হয় সিতারা কর্তৃক তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র। প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন শেষে তাজউদ্দীন আহমদের ওপর দুটি বইয়েরও মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে বিভিন্ন লেখকের লেখা প্রবন্ধ নিয়ে সংকলন ‘তাজউদ্দীন আহমদ: শতবর্ষে সংশপ্তক’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন ড.
এরপর তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে রিপাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘শিক্ষার্থীদের উন্নতিতে পাঠ্যপুস্তকই যথেষ্ট’ শীর্ষক একটি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কের শেষে অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান, লেখক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গুণীজনসহ ছয়টি ক্যাটাগরিতে মোট ১০০টি সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এ সময় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাইযোদ্ধা তাঁদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
তাজউদ্দীন আহমদের জ্যেষ্ঠ কন্যা শারমিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সম্মাননা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো দল–মত বিচার করিনি। আমাদের প্রয়োজন দেশপ্রেমের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শারমিন আহমদের স্বামী আমার আবদুল্লাহ। তিনি তাজউদ্দীন আহমদের দূরদর্শিতাকে মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট গামাল আবদেল নাসেরের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, গামাল আবদেল নাসেরের দূরদর্শিতায় মিসর খরার হাত থেকে ৬০ দশকে বেঁচে গিয়েছিল। তাজউদ্দীন আহমদের দূরদর্শিতাও ছিল একই রকম।
শারমিন আহমদের সন্তান তাজ ইমান আহমদ ইবনে মুনির বলেন, তাজউদ্দীন আহমদের জীবনদর্শন তাঁর জীবনে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। যে সোনার বাংলা আমাদের অধরা রয়ে গেছে, সেটা অর্জন করতে সাহসিকতা নিয়ে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও চিন্তক আবুল কাসেম ফজলুল হক, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম, কামাল সিদ্দিকী, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান ও লেখক সোহান রিজওয়ান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত জউদ দ ন আহমদ র জ ন ত জউদ দ ন আহমদ ন আহমদ র স কর ছ ল ন অন ষ ঠ ন আম দ র আবদ ল রদর শ
এছাড়াও পড়ুন:
আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন বলিউড অভিনেত্রী অঙ্কিতা লোখান্ডের স্বামী, ব্যবসায়ী ভিকি জৈন। হাতে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তার হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। প্রায় ৪৫টি সেলাই পড়েছে। ভিকি এখন আগের চেয়ে সুস্থ এবং হাসপাতাল থেকে বাড়িও ফিরেছেন।
হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে কু-নজর কাটাতে পূজা-আর্চনার আয়োজন করেন অভিনেত্রী অঙ্কিতা। ‘পবিত্র রিশতা’-খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, “আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে। তাই হয়তো এত বড় দুর্ঘটনা। কোনোমতে এবার প্রাণে বেঁচেছে ও।”
আরো পড়ুন:
‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’
‘রিয়েলিটি শোয়ের জন্য পুরুষের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমাতে পারব না’
স্বামীর কু-নজর কাটানোর একটি ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করেছেন অঙ্কিতা। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিতা হাসপাতালে ভিকির জন্য চা বানাচ্ছেন, তখন ভিকিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। পরে দেখা যায়, অঙ্কিতা ভিকিকে বাড়িতে স্বাগত জানাচ্ছেন। অঙ্কিতা একটি রীতি পালন করছেন, যাতে কু-নজর থেকে রক্ষা পায় তার স্বামী।
অঙ্কিতার পরনে সবুজ রঙের সালোয়ার-কামিজ, মাথায় ওড়না। স্টিলের থালায় একটি গ্লাস ও রীতি পালনে ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। এদিকে, ভিকি সাদা শার্ট ও কালো রঙের প্যান্ট পরে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে অঙ্কিতাকে প্রশ্ন করেছেন। অঙ্কিতা কি ‘ব্ল্যাক-ম্যাজিকে’ বিশ্বাসী? কেউ কেউ সরাসরি এ প্রশ্ন করেছেন অঙ্কিতাকে। অভিনেত্রীর ভাষ্য, “বড় ধকল পেরিয়েছে ও। তাই সবটা সামলে উঠতে অনেকটা সময় লাগবে।”
প্রয়াত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অঙ্কিতা লোখান্ডে। ‘পবিত্র রিশতা’ ধারাবাহিকের সেটে তাদের প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। দীর্ঘ ছয় বছর একসঙ্গে ছিলেন। বিয়ের সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের ব্রেকআপ হয়। এরপর ভিকি জৈনর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান অঙ্কিতা; যা পরিণয় পেয়েছে।
রিয়েলিটি শো দিয়ে অঙ্কিতার শোবিজ অঙ্গনে পথচলা শুরু। এরপর ‘পবিত্র রিশতা’ টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করে খ্যাতি লাভ করেন তিনি। বড় পর্দাতেও অভিনয় করছেন। কঙ্গনা রাণৌত অভিনীত ‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রেখেছেন এই অভিনেত্রী। টাইগার শ্রফ ও শ্রদ্ধা কাপুর অভিনীত ‘বাঘি-থ্রি’ সিনেমাতেও দেখা গেছে তাকে।
ঢাকা/শান্ত