প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে তিন দফা দাবি তুলে ধরেছে এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স। রবিবার (২৭ জুলাই) এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি নেতা তারিক আদনান মুন দাবিসমূহ তুলে ধরেন।

তিন দফা দাবি:
১. প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে হবে এবং এই প্রক্রিয়ার একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ১৪ই আগস্টের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে ঘোষণা করতে হবে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, যারা নতুন ভোটার, তাদের বিদেশে অবস্থানের তথ্য হালনাগাদ করার সুযোগ দিতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল ও সময় সাপেক্ষ - অথচ প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন না হলে ভোট আয়োজন সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়বে। আমাদের দূতাবাস ও কনসুলেট গুলতে এখনো নিবন্ধন শুরুর কোন কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এনিয়ে সব প্রবাসীরা অনেক ধোঁয়াশার মধ্যে আছে।

আরো পড়ুন:

নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হলেই নানা ষড়যন্ত্র সামনে আসছে: প্রধান উপদেষ্টা

চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা

২.

পোস্টাল ব্যালটে বা অনলাইনে প্রদত্ত ভোট যেন সময়মতো এবং স্বচ্ছতার সাথে গণনায় অন্তর্ভুক্ত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। কীভাবে এই ব্যালটগুলো যাচাই হবে, কোথায় পাঠাতে হবে, তা স্পষ্টভাবে বলা জরুরি। বিশেষ করে জানতে চাই, ভোট গণনার জন্য পোস্টাল ব্যালটগুলো কীভাবে যাচাই বা অনুমোদন করা হবে? এগুলো পাঠাতে হবে কোথায় (উদাহরণস্বরূপ: নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়, সংশ্লিষ্ট দূতাবাস, বা অন্য কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানা)? ব্যালট পৌঁছানোর সময়সীমা ও গৃহীত ব্যালট গণনায় অন্তর্ভুক্ত করার নিয়ম কীভাবে নির্ধারিত হবে? প্রক্রিয়াটি যেন স্বচ্ছ হয় এবং কোনো ভোট যেন বাদ না পড়ে–তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন কী ধরনের মনিটরিং বা ট্র্যাকিং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে?

৩. প্রবাসীদের ভোটাধিকার কার্যকর করার জন্য একটি স্থায়ী উচ্চপর্যায়ের কারিগরি কমিটি গঠন করতে হবে যা ২০২৬ পরবর্তী নির্বাচনগুলো নিয়েও দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করবে। এই কমিটিতে প্রযুক্তিবিদ, আইনজ্ঞ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও প্রবাসী প্রতিনিধিদের যুক্ত করতে হবে, এবং দীর্ঘমেয়াদে কাজ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ২৭ জুলাই থেকে ১৩ আগস্ট  ‘আমার ভোট আমি দেব, প্রবাস থেকেও অংশ নেব' সর্বাত্মক অনলাইন ক্যাম্পেইন, প্রবাসী গণজমায়েত, ও নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রবাসীর চিঠি প্রেরণ। ১৪ আগস্টের মধ্যে রোডম্যাপ ও গাইডলাইন প্রকাশিত না হলে, ১৫, ১৬ ও ১৭ আগস্ট ‘গ্লোবাল প্রটেস্ট  ডায়াস্পোরা রাইজিং ফর ভোটিং রাইটস' কর্মসূচি পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব সাইফ মোস্তাফিজ, যুগ্ম সদস্য সচিব ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মাহাবুব আলম ও এনসিপি যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম।

এছাড়া অনলাইনে যুক্ত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের কো-অরডিনেটর (পলিসি উইং) দিলশানা পারুলসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় নেতারা।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনস প প রক র য় প রব স আগস ট এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

হামাসকে অস্ত্রত্যাগে ও গাজার শাসন ছাড়তে সৌদি, কাতার, মিসরের আহ্বান

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ বন্ধে এ ভূখণ্ডে হামাসের শাসনের অবসান ঘটানো এবং সংগঠনটিকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে কাতার, সৌদি আরব ও মিসরসহ একাধিক আরব দেশ।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রস্তাব পুনরুজ্জীবিত করতে গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের উদ্যোগে নিউইয়র্কে সংস্থাটির সদর দপ্তরে একটি সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সেখানেই  গৃহীত সাত পৃষ্ঠার একটি ঘোষণাপত্রে এ আহ্বান জানানো হয়। ঘোষণাপত্রটিকে সমর্থন করেছে ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ।

ঘোষণায় বলা হয়, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে অবশ্যই তার শাসন (এ উপত্যকায়) শেষ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। এটি একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।’

ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশ এ ঘোষণায় স্বাক্ষর করে। এতে যুদ্ধ শেষে গাজায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিদেশি সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়। সম্মেলনে ইসরায়েল ও তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি।

আগের দিন, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদল ইসরায়েল ও হামাস উভয়কে গাজা ত্যাগ করার আহ্বান জানায়; যাতে সাগর উপকূলবর্তী এ অঞ্চলটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে।

আরও পড়ুনগাজায় ত্রাণপ্রত্যাশী ৯৩ জনকে হত্যা ইসরায়েলি বাহিনীর, যুদ্ধের বর্বরতার নিন্দায় পোপ২১ জুলাই ২০২৫

ঘোষণায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলারও নিন্দা জানানো হয়। তবে এ বিষয়ে এখনো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানায়নি। সম্মেলনের সহআয়োজক ফ্রান্স ঘোষণাপত্রটিকে ‘ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন’ বলে উল্লেখ করেছে।

আরও পড়ুনগাজায় হামলার নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের সঙ্গে কেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এসব দেশ১৮ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো বলেন, ‘প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো হামাসের নিন্দা জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি শাসন থেকে তাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ও ভবিষ্যতে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইচ্ছা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে।’

প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো হামাসের নিন্দা জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি শাসন থেকে তাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ও ভবিষ্যতে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইচ্ছা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে।জ্যাঁ-নোয়েল বারো, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশ এ ঘোষণায় স্বাক্ষর করে। এতে যুদ্ধ শেষে গাজায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিদেশি সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়। সম্মেলনে ইসরায়েল ও তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি।

আরও পড়ুনগাজায় ‘এখনই যুদ্ধ থামাতে’ যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সসহ ২৮ দেশের আহ্বান২২ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনইসরায়েলের স্নাইপাররা এমনভাবে গুলি ছুড়ছিলেন, যেন পশু শিকার করছেন: গাজার বাসিন্দা২১ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ