নতুন দুই মডেলের তাকিওন ই-বাইক বাজারে আনল ওয়ালটন
Published: 10th, September 2025 GMT
দেশের ইলেকট্রিক বাইক বা ই-বাইক বাজারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ওয়ালটন। বাংলাদেশের প্রথম বিআরটিএ অনুমোদিত কোম্পানি ওয়ালটন তাদের ই-বাইক সিরিজ ‘তাকিওন’-এ যুক্ত করেছে দুটি নতুন মডেল। আধুনিক ডিজাইন, শক্তিশালী মোটর, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং ১০-১৫ পয়সা প্রতি কিলোমিটারে সাশ্রয়ী খরচে চলার কারণে নতুন এই ই-বাইকগুলোকে নগর ও গ্রামীণ জীবনের স্মার্ট ও পরিবেশবান্ধব সঙ্গী হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নতুন যুক্ত হওয়া উন্নত পারফরম্যান্সের ‘ফিউশন ২৫এফজেড’ মডেলটি এক চার্জে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারবে। এই ই-বাইকের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। বাইকটিতে ব্যবহৃত হয়েছে ৩৮ অ্যাম্পিয়ার আওয়ার ৭২ ভোল্ট গ্রাফিন লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি এবং ১.
আরো পড়ুন:
লঞ্চ হলো পালসার F250
বাংলাদেশ লঞ্চ হলো সিএফ মটোর ৩ বাইক
অন্যদিকে, ‘লিও ২৫টিওয়ান’ মডেলটি সর্বোচ্চ ৩৫ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। একবার চার্জে বাইকটি ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত চালানো যাবে। এতে রয়েছে ২৩ অ্যাম্পিয়ার আওয়ার ৬০ ভোল্ট গ্রাফিন লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি, যার চার্জিং সময় মাত্র ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা। শক্তিশালী ৮০০ ওয়াট ব্রাশলেস ডিসি মোটরের সঙ্গে ডিস্ক-ড্রাম ব্রেক সিস্টেম ও উন্নত সাসপেনশন রাইডারকে দেবে নিরাপদ ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতা। মাত্র ৮৯ কেজি ওজনের এই মডেল সর্বোচ্চ ১০০ কেজি পর্যন্ত লোড বহনে সক্ষম। মডেলটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৮৬,৮৫০ টাকা।
ওয়ালটন কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, “পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী বাহন হিসেবে ই-বাইক বিশ্বজুড়ে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যার প্রেক্ষিতে আমরা তাকিওন ই-বাইক নিয়ে এসেছি। নগর ও গ্রামীণ জীবনের যাতায়াতকে আরও সহজ, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী করতে ওয়ালটনের তাকিওন ই-বাইক হতে পারে এক অনন্য সমাধান। ইতোমধ্যেই ওয়ালটনের ই-বাইক ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দেশের গ্রাহকদের জন্য আমরা নতুন দুটি মডেল নিয়ে এসেছি। চলতি বছরের মধ্যে আরো অনেকগুলো ই-বাইক বাজারে আসবে।”
তিনি জানান, গ্রাহকরা সহজ কিস্তি সুবিধায়ও বাইকগুলো ক্রয় করতে পারবেন। বাংলাদেশ জুড়ে ওয়ালটন প্লাজা, অনুমোদিত ডিলার শপ এবং ওয়ালটনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নতুন তাকিওন ই-বাইক পাওয়া যাচ্ছে। সঙ্গে থাকছে ওয়ালটনের নির্ভরযোগ্য ওয়ারেন্টি এবং দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা।
ঢাকা/অগাস্টিন সুজন/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খেলার নামে আদম পাচার ঠেকাতে তৎপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
বিদেশে খেলোয়াড় পাঠানোর নামে মানব পাচারের ঝুঁকি রোধ এবং যোগ্য খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিশ্চিত করতে নতুন নিয়ম চালু করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ৯ অক্টোবর এনএসসি এক চিঠিতে ফেডারেশনগুলোকে জানিয়েছে, এখন থেকে বিদেশে ক্রীড়া দল পাঠানোর আগে ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে ফ্লাইটের কমপক্ষে ১০ দিন আগে জিওর (সরকারি আদেশ) জন্য প্রস্তাব পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচিত খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও পারফরম্যান্স–সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্রও এনএসসিকে দিতে হবে।
অভিযোগ আছে, কিছু ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন অনেক বছর ধরেই দলের সঙ্গে ভুয়া খেলোয়াড়-কর্মকর্তা পাঠিয়ে আদম পাচার করে আসছে। দুই একটা ঘটনা সামনে এলেও এসবের বেশির ভাগই থেকে যায় আড়ালে। ছোট খেলাগুলো থেকেই এ ধরনের অভিযোগ বেশি আসে। এনএসসির একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত এ ধরনের অপকর্ম ঠেকাতেই বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে ফ্লাইটের অন্তত ১০ দিন আগে জিওর প্রস্তাব পাঠানোর নিয়ম করা হয়েছে। এনএসসির পরিচালক (ক্রীড়া) আমিনুল এহসান সরাসরি তা না বললেও তাঁর কথায়ও সে আভাস আছে, ‘আমি বলব না শুধু আদম পাচার রোধ করতে এই নিয়ম করেছি। তবে কোথাও কোথাও এসব খেলার নামে মানব পাচারের প্রশ্ন চলে আসে।’
অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।ফারহাদ জেসমিন, সাবেক অ্যাথলেট ও বিএও অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যানএনএসসির কাছে ফেডারেশন বা অ্যাসোসিয়েশন এত দিন জিওর জন্য খেলোয়াড়দের নামই শুধু পাঠাত। যাঁর নাম দেওয়া হতো, তিনি আসলেই খেলোয়াড় কি না বা খেলোয়াড় হলে তাঁর যোগ্যতা কী বা যোগ্য কাউকে বাদ দিয়ে অযোগ্য কাউকে নেওয়া হচ্ছে কি না, এসব যাচাই–বাছাই করা হতো না। এনএসসি তাই জানত না কিসের ভিত্তিতে একজন খেলোয়াড়কে দলে নির্বাচিত করা হয়েছে। নতুন নিয়মে এনএসসিকে এসব দিতে হবে।
জিওর জন্য আবেদনকারীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে সময় লাগে বলে ১০ দিন আগে তালিকা চাওয়ার যুক্তি আছে। কিন্তু পারফরম্যান্স আর ফিটনেসের তথ্যপ্রমাণও পাঠানোর নিয়মটা একটু অভিনবই, যা নিয়ে অবশ্যই নানা রকম প্রশ্ন তোলা যায়। তবে জিওর জন্য ফ্লাইটের ১০ দিন আগে নাম চাওয়ার নিয়মটাকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক অ্যাথলেট ফারহাদ জেসমিন লিটি বলেছেন, ‘অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।’
আরও পড়ুনবিশ্বকাপের আগে সৌদি লিগে খেলতে চেয়েছিলেন মেসি, সৌদি সরকারের ‘না’১১ ঘণ্টা আগেআদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।ক্রীড়াঙ্গনে স্বজনপ্রীতি ঠেকাতেও এ নিয়ম ভূমিকা রাখবে বলে ফারহাদ জেসমিনের আশা, ‘অনেক ফেডারেশন অনেক সময় যোগ্যতার বিচার না করে নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড় নিয়ে যায়। দেখে মনে হয়, বিদেশভ্রমণই মুখ্য, পারফরম্যান্স মুখ্য নয়।’ বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, ‘এটা ভালো উদ্যোগ। কারণ, এনএসসির জানার অধিকার আছে, বিদেশে টুর্নামেন্টে আমরা কাদের নিয়ে যাচ্ছি।’ সম্প্রতি হকি তারকা রাসেল মাহমুদকে বয়সের অজুহাতে বাদ দেয় হকি ফেডারেশন। এ নিয়ে সমালোচনা হলে এনএসসিকে বিষয়টি তদন্তও করতে হয়।
এনএসসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রিকেট-ফুটবলসহ সব খেলাতেই বিদেশে দল পাঠানোর জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। কিন্তু আদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।
আরও পড়ুনআগে চা পরে লাঞ্চ—বদলে যাচ্ছে ক্রিকেটের শতবর্ষ পুরোনো এক রীতি১৫ ঘণ্টা আগেএনএসসির পরিচালক আমিনুল এহসান অবশ্য তা মনে করেন না, ‘প্রায় প্রতিদিনই এনএসসির কাছে অনেক খেলোয়াড় অভিযোগ করেন, কোনো না কোনো কর্মকর্তার অপছন্দের কারণে নাকি তিনি দল থেকে বাদ পড়েছেন। এ কারণেই খেলোয়াড় নির্বাচনের তথ্যগুলো এনএসসির জানা থাকলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে একটা উত্তর দেওয়া যায়। এটা ফেডারেশনের কাজে হস্তক্ষেপ নয়। স্বচ্ছতার স্বার্থে এনএসসি তা জানতে চাইতে পারে।’