‘হে নানা দূষণ হইল, নদী মইল, এই দুঃখ কাখে জানাই...হে নানা বারনই নদীর কথা শুনো বইলা যাই, ঐতিহ্যে ভরা আমাদের বারনই।’ গম্ভীরা গানে এভাবেই বরনই নদের কথা বলছিলেন নানা-নাতি ভূমিকায় মোস্তফা সরকার ও কার্তিক চন্দ্র হালদার। গান ছেড়ে কথায় কথায় বললেন, ‘এগারো সাল থেকে এই নদী লিয়্যা কত কিছু লেখলো! এই প্রথম আলো পেপারে জাইল্যাদেরকে লিয়্যা একজাগাতে বইস্যা আলোচনা কইরা তাঁদের কথা লেখলো। কত সাংবাদিক কত মিডিয়াতে লেখলো, কিন্তু এই নদীকে বাঁচানোর লাইগ্যা কেহু আগাইয়া আসল না।’

রাজশাহীর বারনই নদের দখল, দূষণ ও নদীতীরের মানুষের দুর্ভোগের কথা নিয়ে আজ সোমবার সকাল থেকে জেলার পবা উপজেলার নওহাটায় নদীর ধারে দিনভর নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টা থেকে নদীর ধরে মন্দির চত্বরে গম্ভীরা। নদীর ধারে মানববন্ধন ও পরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সমন্বিতভাবে দিনব্যাপী এ কর্মসূচির আয়োজন করে বেসরকারি সংস্থা এএলআরডি, রুলফাও ও বেলা। বুকস, মাসাউস, পরিবর্তন ও দিনের আলো হিজড়া সংঘসহ ১২টি সংগঠন এতে সহায়তা করে।

বারনই নদ রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বাগধানী এলাকায় শীব নদ থেকে উৎপত্তি হয়ে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার শেরকোল পৌরসভায় আত্রাই নদে পতিত হয়েছে। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯৩ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ প্রস্থ ৯১ মিটার, সর্বনিম্ন ২৭ মিটার এবং গড় প্রস্থ ৫১ মিটার। এটি রাজশাহী ও নাটোর জেলার পবা, মোহনপুর, বাগমারা, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, নলডাঙ্গা, নাটোর সদর এবং সিংড়া উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

এই নদ রক্ষায় গম্ভীরা ও মানববন্ধনের পরে বিকেলে নওহাটা মহিলা ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে ‘নদীর জন্য একসাথে—নদী রক্ষায় প্রয়োজনে সমন্বিত উদ্যোগ: জীবন-জীবিকা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বারনই নদী রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বেসরকারি সংস্থা রুলফাওর নির্বাহী পরিচালক আফজাল হোসেন।

সামাজিক কল্যাণ পরিষদের নির্বাহী পরিচালক সম্রাট রায়হানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নওহাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র মকবুল হোসেন, এএলআরডির প্রতিনিধি সানজিদা খান, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বাপার কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য জামাত খান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী পার্থ সরকার, পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.

কবির হোসেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা, প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলার রাজশাহী কার্যালয়ের সমন্বয়কারী তন্ময় স্যানাল, বাঁচার আশা সাংস্কতিক সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা সরকার, পরিবর্তনের নির্বাহী পরিচালক রাশেদ রিপন, বিইউকেএস–এর নির্বাহী পরিচালক হাসিনুর রহমান, সাংবাদিক ওয়ালিউর রহমান প্রমুখ।

দখল ও দূষণ থেকে বারনই নদীকে বাঁচাতে আলোচনাসভা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র গম ভ র নওহ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে বাফুফেকে স্টেডিয়াম ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

গাজীপুরের জয়দেবপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে ২৫ বছরের জন্য ইজারা (লিজ) দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ–মিছিল হয়েছে। স্থানীয় খেলোয়াড়, কোচ ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতারা এ কর্মসূচি পালন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

রোববার বেলা একটার দিকে গাজীপুর প্রেসক্লাব–সংলগ্ন স্টেডিয়ামের ফটক এলাকায় মানববন্ধন করেন জেলার বিভিন্ন ক্রীড়া ক্লাব, খেলোয়াড়, কোচ ও অভিভাবকেরা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) দেশের অন্যান্য কয়েকটি স্টেডিয়ামের সঙ্গে গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামকে ২৫ বছরের জন্য ইজারা নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। এতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সম্মতি দেয়। মোট ১৫টি শর্তে স্টেডিয়ামটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। এখন এই ইজারা বাস্তবায়নের দাপ্তরিক কাজ চলছে।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খান জাহিদুল ইসলাম, মহানগর ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ফখরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ময়েজ উদ্দিন তালুকদার, জেলা ক্রিকেট বোর্ডের কোচ আনোয়ার হোসেন জাহিদ (লিটন), কারাতে অ্যাসোসিয়েশন গাজীপুরের সভাপতি মার্শাল শাহাজাদা, প্রভাতী স্পোর্টিং ক্লাবের সহসভাপতি শাহ সামসুল হক (রিপন), জয়দেবপুর ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রুবেল মণ্ডল এবং টঙ্গী ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী সালাউদ্দিন (সোহেল) প্রমুখ।

বক্তারা জানান, সব ধরনের খেলার জন্য শহীদ বরকত স্টেডিয়ামটি ব্যবহৃত হয়। সেখানে নিয়মিত বিভিন্ন ক্লাব বিভিন্ন ধরনের খেলা আয়োজন করে। তাই এই স্টেডিয়াম গাজীপুরের ক্রীড়া চর্চা ও উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্টেডিয়ামের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত।

গাজীপুর জেলা ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খান জাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, শুধু ফুটবল খেলার জন্য বাফুফে এই মাঠ ইজারা নিয়েছে। এতে অন্যান্য খেলার সুযোগ কমে যাবে।

গাজীপুর মহানগর ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত ক্রীড়াবান্ধব সিদ্ধান্ত হতে পারে না। বাংলাদেশে ফুটবল ছাড়াও অন্যান্য খেলা আছে। স্টেডিয়ামটি ইজারা না দিয়ে যেন জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার অধীন আগের মতোই চলতে দেওয়া হয়। ইজারার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিনের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন স্থানীয় খেলোয়াড়, কোচ ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লালনের আখড়ায় মাদক সেবন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
  • সিলেটে মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে গণ-অবস্থান ও মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে অবৈধভাবে বালু তোলায় ভাঙনের ঝুঁকিতে স্কুল-কলেজ, প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে আসামিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
  • নির্বাচনের আগেই গণভোট দাবি: তৃতীয় ধা‌পে নতুন কর্মসূ‌চি ইসলামী আন্দোলনের
  • ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন করানোর অভিযোগ
  • গাজীপুরে বাফুফেকে স্টেডিয়াম ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • জাবিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের বিচার দাবি
  • সোনারগাঁয়ে ভূমিদস্যুর  মামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন