ভবিষ্যতের চাকরিজগৎ ‘রিমোট’ বা ‘হাইব্রিড’ নয়—আসছে ‘মাইক্রোশিফটিং’ যুগ
Published: 16th, October 2025 GMT
সকালের নাশতার সময়ই ল্যাপটপ খুলে অফিসের ই-মেইল চেক করা, দুপুরে সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া, বিকেলে কাজের ফাঁকে একটু ঘোরাঘুরি আর রাতে আবার বসে রিপোর্ট লেখা। এই ছন্দে কাজের নতুন ধরন ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাইক্রোশিফটিং’।
রিমোট বা হাইব্রিড কাজের পরবর্তী ধাপ হিসেবে পরিচিত কর্মপদ্ধতিতে কর্মীরা দিনে একটানা আট ঘণ্টা নয় বরং কয়েক দফায় নিজেদের সুবিধামতো কাজের সময় ভাগ করে নেন। কেউ সকালে দুই ঘণ্টা, কেউ বিকেলে তিন ঘণ্টা, আবার কেউ রাতে কয়েক ঘণ্টা কাজ করেন। এই সময়ের স্বাধীনতাই মাইক্রোশিফটিংয়ের মূল বৈশিষ্ট্য।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওল ল্যাবসের ২০২৫ সালের হাইব্রিড ওয়ার্ক অবস্থা প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বজুড়ে ৬৫ শতাংশ অফিসকর্মী এখন সময়সূচিতে আরও স্বাধীনতা চান। ডেপুটির ‘দ্য বিগ শিফট: যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫’ জরিপে দেখা গেছে, মাইক্রোশিফটিং জ্ঞানভিত্তিক কাজে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, বিশেষ করে জেনারেশন জেডের কর্মীরা স্বল্প সময়ের কাজের শিফট বেছে নিয়ে শিক্ষা ও প্রযুক্তিনির্ভর একাধিক দায়িত্বের ভারসাম্য বজায় রাখছেন।
বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রেও নতুন ছন্দ
বাংলাদেশের কর্মজগতেও মাইক্রোশিফটিংয়ের ছাপ পড়ছে। তরুণ ফ্রিল্যান্সার, আইটি পেশাজীবী, অনলাইন শিক্ষক, ডিজাইনার ও সাংবাদিকেরা দিনের মধ্যে নিজেদের সুবিধামতো কাজের সময় ভাগ করছেন। কেউ রাতজাগা, কেউ ভোরবেলা বেশি মনোযোগী; প্রতিজনের জীবনযাপন ও কাজের ধরন ভিন্ন।
ঢাকার মিরপুরে বসবাসকারী রিমা হক, দুই সন্তানের মা ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটার বলেন, ‘সারা দিন একটানা কাজ করার সময় পাই না। সকালে দুঘণ্টা লিখি, দুপুরে সন্তানদের দেখাশোনা করি, রাতে আবার বসে কাজ করি। এতে কাজও হয়, সংসারও চলে।’ তাঁর মতে মাইক্রোশিফটিংয়ের মূল দর্শন হলো, কাজের মান সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানেই ৯টা থেকে ৫টা অফিসের ধারা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
বিশ্বজুড়ে অফিস সময়ের সীমানা বদলাচ্ছে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মও সেই পরিবর্তনের স্রোতে এগোচ্ছে। অভিজ্ঞ পেশাজীবীরা মনে করছেন, কাজের ধরন পাল্টে যাচ্ছে, কিন্তু কাজ থেমে নেই; শুধু ঘড়িটা বদলে গেছে।সময়ের হিসাব পাল্টে যাচ্ছে
৯টা থেকে ৫টা অফিসের সময়সূচি শিল্পবিপ্লবের উত্তরাধিকার। কারখানায় শ্রমঘণ্টা মাপার জন্যই এই মডেল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখনকার কাজ হচ্ছে মস্তিষ্ক ও সৃজনশীলতার, যেখানে উৎপাদন মাপা হয় আইডিয়া দিয়ে, সময়ের কাঁটায় নয়। তবু অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো কর্মীদের অফিসে ফেরাতে চাইছে।
ওল ল্যাবসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ৬৩ শতাংশ কর্মী পূর্ণকালীন অফিসে ফিরেছেন। কিন্তু একাধিক কর্মী জানাচ্ছেন যে অফিসে উপস্থিত থাকলেই উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত হয় না। বাংলাদেশেও কোভিড-১৯-এর সময় রিমোট কাজের অভিজ্ঞতা অনেককে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছে। এখন অনেক সংস্থা হাইব্রিড ব্যবস্থায় কাজ করলেও সময়ের স্বাধীনতা এখনো সীমিত। গুলশানের এক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আফরোজা খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কাজ ডেটা বিশ্লেষণ করা। অফিসে আট ঘণ্টা থাকলেও সব সময় কাজ হয় না। বরং নিজের মতো করে সময় ভাগ করলে ফলাফল ভালো হয়।’
আরও পড়ুনএই ‘ভুলে ভরা’ বিসিএস প্রশ্নপত্র কারা তৈরি করল১৪ অক্টোবর ২০২৫বাংলাদেশের কর্মজগতেও মাইক্রোশিফটিংয়ের ছাপ পড়ছে। তরুণ ফ্রিল্যান্সার, আইটি পেশাজীবী, অনলাইন শিক্ষক, ডিজাইনার ও সাংবাদিকেরা দিনের মধ্যে নিজেদের সুবিধামতো কাজের সময় ভাগ করছেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সময় ভ গ কর র কর ম ক জ কর র সময় সময় র
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতা উদ্বোধন
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বাংলা বিভাগ বনাম ইংরেজি বিভাগের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতা- ২০২৫ উদ্বোধন করা হয়েছে। ম্যাচে ইংরেজি বিভাগকে ৪- ১ গোলে হারিয়ে বাংলা বিভাগ জয়লাভ করে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী।
আরো পড়ুন:
হংকংয়ের মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফিরল বাংলাদেশ
পেনাল্টি গোলে প্রথমার্ধে পিছিয়ে বাংলাদেশ
ক্রীড়া পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “খেলোয়াড় সুলভ আচরণের মাধ্যমেই খেলা সম্পন্ন হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। গতবারের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সুষ্ঠুভাবে খেলা সম্পন্ন হবে বলে আমি আশাবাদী। এছাড়া প্রশিক্ষকের মাধ্যমে বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের দল গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে।”
ক্রীড়া পরিচালনা কমিটির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, “খেলাধুলা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীরা ভালো খেলবে, ভালো খেলা দেখবে। খেলাধুলার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের মন হয় বড়, মানসিকতা হয় উন্নত। আর সেই মনোভাব যেন মাঠে প্রতিফলিত হয়।”
তিনি বলেন, “সৌহার্দ্যের জন্য খেলা, বন্ধুত্বের জন্য খেলা, বিরোধিতার জন্য নয়। খেলোয়াড়দের প্রতি আহ্বান জানাই, যেন তারা সুস্থ ও সুন্দরভাবে খেলা সম্পন্ন করে এবং মাঠে রেফারির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে খেলা চালিয়ে যায়।”
এবারের টুর্নামেন্টে ১৯টি বিভাগ অংশগ্রহণ করেছে। আগামী ২৯ অক্টোবর ফাইনাল খেলার মধ্য দিয়ে ফুটবল প্রতিযোগিতা ২০২৫ এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী