2025-08-01@21:44:08 GMT
إجمالي نتائج البحث: 29

«র জতন ত র ফ র য়»:

    ২৯ জুলাই ১৮৮৩, ইতালির এক নিভৃত গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন এমন একজন, যাঁর নাম একসময় সারা ইউরোপের রাজনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। বেনিতো মুসোলিনি শুধু ইতালিরই প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, ফ্যাসিবাদ নামের এক ভয়াল রাজনৈতিক মতবাদের প্রথম রাষ্ট্রীয় রূপদাতা হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন।বিংশ শতাব্দীর শুরুর উত্তাল সময় মুসোলিনি ইউরোপীয় রাজনীতির এক প্রভাবশালী ও বিতর্কিত চরিত্রে পরিণত হন। যুদ্ধ, একনায়কতন্ত্র, দমন–পীড়ন আর জাতীয়তাবাদে মোড়া তাঁর শাসনব্যবস্থা ইতালিকে যেমন এক নতুন মোড়ে দাঁড় করিয়েছিল, তেমনই বিশ্বরাজনীতিতে এক ভয়ংকর দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছিল।ইতালির ছোট্ট শহর প্রেদাপ্পিওতে জন্ম নেওয়া এ মানুষটির জন্মদিনে ফিরে দেখা জরুরি, কীভাবে একজন শিক্ষক হয়ে উঠেছিলেন ইতিহাসের অন্যতম ভয়ংকর একনায়ক। তাঁর উত্থান–পতনের গল্প শুধু এক ব্যক্তির নয়, একটি গোটা সমাজ তথা রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিবর্তনেরই কাহিনি।কৃষকের ঘর থেকে রাজনীতির কেন্দ্রেবেনিতো আমিলকারে আন্দ্রেয়া মুসোলিনি জন্ম নিয়েছিলেন...
    মানিকগঞ্জে গড়পাড়া ইমামবাড়ি থেকে জেলা শহরের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ছিল মানুষের ভিড়। আজ রোববার পবিত্র মহররমের তাজিয়া মিছিল দেখতে তাঁরা এই দীর্ঘ পথে সারিবদ্ধ হয়ে অবস্থান করেন। সড়কের পাশে ভবনগুলোর ছাদেও মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে মানিকগঞ্জে শত বছরের প্রাচীন গড়পাড়া ইমামবাড়ি অন্যান্য বারের মতো এবারও পবিত্র আশুরা পালন করছে। এ উপলক্ষে ১০ দিন ব্যাপী ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়।আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গড়পাড়া ইমামবাড়ি থেকে দেশের অন্যতম বড় তাজিয়া মিছিল বের হয়। হজরত ইমাম হোসেনের শেষ মঞ্জিলের নকশা ‘তাজিয়া’, তাঁর নিজের ব্যবহার করা ঘোড়া ‘দুলদুল’ এবং কারবালা যুদ্ধের স্মৃতি বহনকারী নিশান নিয়ে হাজার হাজার ইমামভক্তরা এই শোকমিছিলে অংশ নেন। বিগত সময়ের মতো এবারও শোকমিছিলে ‘হায় হোসেন,...
    ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবে ক্ষমতাচ্যুত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির নির্বাসিত ছেলে রেজা পাহলভি আগামী সোমবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বক্তব্য দিতে যাচ্ছেন।ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ও লেবার পার্টির একাধিক সূত্র মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।মিডল ইস্ট আইয়ের দেখা এ–সংক্রান্ত এক আমন্ত্রণপত্রে বলা হয়েছে, পাহলভি ব্রিটিশ এমপি ও আইনসভার উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্যদের উদ্দেশে ‘ইরানে চলমান পরিস্থিতি, বর্তমান শাসনব্যবস্থার সম্ভাব্য পতন ও দেশে একটি স্থিতিশীল ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে তাঁর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরবেন’।ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবনে একটি কমিটির কক্ষে বিকেল পাঁচটায় সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করেছেন লেবার এমপি লুক একেহার্স্ট ও কনজারভেটিভ এমপি আফরা ব্র্যান্ডরেথ।মিডল ইস্ট আইকে একহার্স্ট বলেন, ইরানি জনগণই নির্ধারণ করবেন, তাঁরা কী ধরনের সরকার চান। তবে ইরানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন বিরোধী কণ্ঠ কী বলছে, স্বাভাবিকভাবেই...
    নিউইয়র্ক নগরের মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি গতকাল রোববার তাঁর ‘ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিজম’ বা ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র’-এর পক্ষে কথা বলেছেন। জোহরানের দাবি, তিনি অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে যেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা পুরো ডেমোক্রেটিক পার্টির আদর্শ হওয়া উচিত।গতকাল এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বামঘেঁষা জোহরান এ কথা বলেন। যদিও ডেমোক্রেটিক দলের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা এখনো জোহরানকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না।এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে জোহরান বলেন, নিউইয়র্কের শীর্ষ ধনী ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ওপর কর বাড়ানোর যে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তিনি নিয়েছেন, তা একদিকে যেমন বাস্তবসম্মত, তেমনি শহরের শ্রমজীবী মানুষের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা। এসব পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বিনা মূল্যে বাস সেবা, ঘণ্টায় ৩০ ডলার ন্যূনতম মজুরি দেওয়া এবং ভাড়া স্থিতিশীল রাখা।গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা পরাজিত হয়। রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও...
    যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের আসন্ন মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় দেন। তবে অনেক রিপাবলিকান রাজনীতিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী তাঁকে ভুলভাবে ‘কমিউনিস্ট’ বলে থাকেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৫ জুন নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘জোহরান মামদানি ১০০ ভাগ পাগলাটে কমিউনিস্ট।’রক্ষণশীল ঘরানার পডকাস্ট উপস্থাপক নিক সোরটর ২৩ জুন এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, ‘জোহরান মামদানি শুধু সমাজতন্ত্রী নন, তিনি একজন পুরোপুরি কমিউনিস্ট।’ তিনি একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে জোহরান নগর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন মুদির দোকানের নেটওয়ার্ক তৈরির কথা বলছেন। সোরটরের ভাষায়, ‘(জোহরান) বার্নি স্যান্ডার্সের চেয়েও অনেক বেশি বামপন্থী। তিনি সরকার পরিচালিত মুদির দোকান চান।’দ্য ডেইলি ওয়্যারের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং পডকাস্টার বেন শ্যাপিরো বলেন, ‘আজকের সবচেয়ে বড় খবর: নিউইয়র্কের পরবর্তী মেয়র হতে যাচ্ছেন একজন কমিউনিস্ট।’ রিপাবলিকান...
    ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবল মন্তব্য করেছেন, ১৯৭৫ সালে ভারতের জরুরি অবস্থার সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ ও ‘সমাজতন্ত্র’ শব্দ দুটি যোগ করেছিলেন। এখন সেই শব্দ দুটি বাদ দিতে হবে।নয়াদিল্লিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ‘ভারতের জরুরি অবস্থার ৫০ বছর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আরএসএস নেতা হোসাবল এ দাবি করেন।হোসাবল বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার ভারতে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ২১ মাসের জরুরি অবস্থাকে বিরোধীরা অন্ধকারতম অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। ১৯৭৬ সালের সংবিধান সংশোধনীর ফলে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দুটি যুক্ত হয়েছিল।আরএসএস নেতা প্রশ্ন তুলে বলেন, ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা চলাকালে কংগ্রেস গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। সে সময় সংবিধানের প্রস্তাবনায়...
    রিপাবলিকান দলের কয়েকজন নেতা নিউইয়র্ক নগরের ডেমোক্রেটিক দলের মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানির মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিল করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা এই তরুণ প্রার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করার কথা বলছেন। রিপাবলিকান নেতাদের এই বক্তব্যের মাধ্যমে জোহরান ইসলামবিদ্বেষের মুখোমুখি হচ্ছেন। বিশেষ করে তাঁর মতো নিউইয়র্ক নগরের ডেমোক্রেটিক দলের মেয়র প্রার্থীর প্রতি কিছু রিপাবলিকান নেতার এমন বক্তব্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ৩৩ বছর বয়সী এই ডেমোক্রেটিক সোশালিস্ট (গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী) প্রার্থী দলীয় প্রাথমিক বাছাইয়ে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে পরাজিত করেছেন। কুমো আনুষ্ঠানিকভাবে পরাজয় মেনে নিয়েছেন। নিউইয়র্ক ইয়াং রিপাবলিকান ক্লাব (এনওয়াইওয়াইআরসি) ডেমোক্রেটিক দলের এই ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ‘কার্যকর পদক্ষেপ’ নিতে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানায়।সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক্সে লেখা হয়েছে, ‘চরমপন্থী জোহরান মামদানিকে আমাদের প্রিয় নিউইয়র্ক শহর ধ্বংস...
    রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে ফের বিক্ষোভ করেছে নেপালের হাজারো মানুষ। এ ছাড়া সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে রাষ্ট্রপ্রধান ও ‘হিন্দু ধর্মকে’ রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা দেওয়ার দাবিও তোলেন তারা।  বৃহস্পতিবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে হাতে পতাকা নিয়ে নানা ধরনের স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। এর মাত্র কয়েকশ মিটার দূরে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে জমায়েত হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ অলির সমর্থকরা।  সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে– এ আশঙ্কায় পুলিশ তাদের আলাদা রাখে এবং কর্তৃপক্ষ  ভিন্ন সময়ে দুই দলকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। যতদিন না রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হয় এবং রাষ্ট্রধর্ম হিন্দু করা না হয়, ততদিন আন্দোলন অব্যাহত থাকবে– এমনটাই বলেছেন বিক্ষোভকারীরা। এএফপি।   
    আমাদের সবারই জানা, জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিমেল ফার্ম’ শুধু একটি কাল্পনিক কাহিনি নয়; এটি ইতিহাসের গহিনে লুকিয়ে থাকা বিপ্লবের বাস্তবতা ও স্বৈরতন্ত্রের গঠন সম্পর্কে একটি গভীর রাজনৈতিক রূপক। ১৯৪৫ সালে যখন বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়, তখন এটি বলশেভিক বিপ্লব ও সোভিয়েত ইউনিয়নের স্তালিন যুগের ভীতিকর বাস্তবতার ব্যঙ্গাত্মক চিত্রায়ণ ছিল। আজও এই উপন্যাস পৃথিবীর নানা দেশে রাজনৈতিক বিপ্লব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের আশঙ্কাকে বুঝতে এক অমূল্য রোশনাই।বর্তমান বাংলাদেশে যেখানে অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো নিজেদের মধ্যে সংঘাত ও বিভাজনে নিমজ্জিত, সেখানে ‘অ্যানিমেল ফার্ম’ আমাদের জন্য এক কঠিন কিন্তু প্রয়োজনীয় আয়না। এটি স্মরণ করিয়ে দেয়, যেকোনো বিপ্লবের সত্যিকারের সাফল্য আসে আদর্শের প্রতি স্থিরতা ও নৈতিক দায়বদ্ধতা বজায় রেখে। ক্ষমতার লোভ ও স্বার্থপরতা যদি দমন না করা যায়, তবে নতুন ফ্যাসিবাদের উত্থান অবশ্যম্ভাবী।অরওয়েলের ‘অ্যানিমেল ফার্ম’ আমাদের আজও বলে,...
    পরপর তিনটি নির্বাচনী তামাশার মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার পর রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের ৯ মাস পূর্ণ হলো। ১৯৬৯ বা ১৯৯০-এর মতো এবারের গণ-অভ্যুত্থানেও কোনো দলীয় নেতৃত্ব ছিল না। ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি, ধর্ম, জাতি, পেশা, বয়সের নারীর অংশগ্রহণ এই আন্দোলনকে অপ্রতিরোধ্য শক্তি দিয়েছিল। দেয়ালের গ্রাফিতিতে সমাজের বিক্ষুব্ধ মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, দাবি ও প্রত্যাশা প্রকাশিত হয়েছিল, সেটাই ঘোষণাপত্রের কাজ করেছে। সেখানে কথা, স্লোগান, ছবি, কার্টুনে জাতিগত, লিঙ্গীয়, শ্রেণিগত বৈষম্য এবং নিপীড়ন আধিপত্য স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত এক দেশের প্রত্যাশা প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে দেশে এর উল্টো তৎপরতা ক্রমেই বৃদ্ধি পায়। বৈষম্যবাদীদের দাপট বাড়তে থাকে। মাজার-মসজিদ, মন্দির, নারী, শিল্পকর্ম, ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতি বিদ্বেষী ও আক্রমণাত্মক তৎপরতা বাড়ে। ভাস্কর্য, নাটক, গান, মেলা, গ্রন্থাগার ও শিল্প-সংস্কৃতির কেন্দ্র বহুবার আক্রমণের শিকার হয়।...
    কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, সাম্য, মানবিক ন্যায়বিচারসহ তিনটা নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা লড়াই করি। কিন্তু আওয়ামী লীগ এসে দিল্লির প্রয়োজনে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিল ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ। এগুলো আমাদের দাবি ছিল না। এই যে চাপিয়ে দেওয়া তিনটা তথ্যের মধ্যে সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এক হলে এইটাকে বলে ফ্যাসিবাদ। এটা হিটলারও বিশ্বাস করত। জার্মান জাতীয়তাবাদ, বাংলাদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। জেনেশুনে ফ্যাসিস্ট সংবিধান আমরা রাখছি। এই জুলাই আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা এই সংবিধান বাতিল করতে পারি নাই। এই দায় আমাদের।  বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভাববৈঠকী আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান: রাষ্ট্র গঠন ও আমাদের দায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, চাপিয়ে দেওয়া সংবিধান যখন তরুণরা বাতিল চাইল, তখন বলা হলো যারা ৭২ এর সংবিধান বাতিল...
    আওয়ামী লীগের শাসনামলে কীভাবে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছিল, সে বিষয়ে একটি ভাষ্য সামনে এনেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা ফ্যাসিবাদী শাসনের আদর্শিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে—সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসা এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে তিনি বলেছেন, ‘সত্যটা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যে ফ্যাসিবাদ হয়েছে, সেটা ধর্মনিরপেক্ষতার মধ্য দিয়ে হয়নি, ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে প্রতারণা করার কারণে হয়েছে।’ আনু মুহাম্মদের মতে, ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণার সঙ্গে প্রতারণা করে, ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে, ধর্মীয় নিপীড়নকে নানাভাবে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করার চেষ্টা করে, মুক্তিযুদ্ধকে অপব্যবহার করে এবং জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ। শনিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাস: ভূমিকা ও সংস্কার প্রস্তাব’ শিরোনামে পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন...
    অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আট মাস পরও দেশে ‘মব ভায়োলেন্স’ বা দলবদ্ধ সহিংসতা বিভিন্ন মাত্রায় জারি আছে। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও দমন-পীড়নের ঘটনা ঘটছে। কৃষক-শ্রমিকের সঙ্গেও অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণ বৈরী। জানা-অজানা বিভিন্ন ধরনের গোষ্ঠীর প্রভাব এখনো আদালত অঙ্গনে দেখা যাচ্ছে। গত রমজানে খাদ্যদ্রব্যের দাম কম থাকলেও বাজারে আবার অস্থিরতা শুরু হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাসের বিভিন্ন কার্যক্রমকে এভাবেই মূল্যায়ন করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গত ২২ আগস্ট এই গঠন করা হয়। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ সমাজের নানা পেশার মানুষের সমন্বয়ে শতাধিক ব্যক্তি এই কমিটিতে রয়েছেন। এই কমিটির উদ্যোগে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাস: ভূমিকা ও সংস্কার প্রস্তাব’ শিরোনামে...
    আজ ২২ এপ্রিল, ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের জন্মদিন। ১৯১৭ সালে সংঘটিত রুশ বিপ্লবের অগ্রনায়ক লেনিন ছিলেন মার্ক্সের সফল উত্তরাধিকারী। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ইতিহাসের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। একটি পশ্চাৎপদ পুঁজিবাদী দেশে বিপ্লব সংঘটনের পথ বের করেন তিনি। চিন্তা ও প্রয়োগের মেলবন্ধন ঘটানোর দক্ষতাই ছিল তাঁর সাফল্যের অন্যতম কারণ। মার্ক্স সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কথা বলেন। কিন্তু রাশিয়ার মতো দেশে যেখানে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটেনি, সেখানে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বিপ্লব করে নতুন পথ দেখালেন। লেনিনের এই গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পথ ধরেই চীনসহ পিছিয়ে পড়া পুঁজিবাদী দেশে বিপ্লব হয়েছে। ইতিহাসের কোনো পর্বকেই লাফ দিয়ে ডিঙিয়ে যাওয়া যায় না। বিপ্লবকে ইতিহাসের ভেতর দিয়েই যেতে হয়– এটি ছিল লেনিনের শিক্ষা।   লেনিন দেখিয়েছেন রাষ্ট্রযন্ত্র কোন প্রক্রিয়ায় বল প্রয়োগ করে টিকে থাকে এবং শাসক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে। তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের ফ্যাসিস্ট রূপ বুঝতে...
    নেপালে আজ থেকে প্রায় দুই দশক আগে রাজতন্ত্র আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠা করা হয় ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র। কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নতির যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, তা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে ‘হিমালয়কন্যা’ হিসেবে পরিচিত দেশটিতে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিক্ষোভ বাড়ছে।গত মাসে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ নেপালের বিভিন্ন স্থানে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। পুলিশ এতে বাধা দেয়। ফলে বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে দুজন নিহত হন। ১০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে নেপালে এবারই প্রথমবারের মতো বিক্ষোভ হয়েছে, তা কিন্তু নয়। গত দুই দশকে এই দাবিতে অনেকবার বিক্ষোভ হয়েছে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধীরগতি দেশটির মানুষের মধ্যে বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি হতাশা বাড়াচ্ছে। প্রজাতন্ত্র...
    অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস একের পর এক ম্যাজিক দেখাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, খুবই নির্মোহভাবে কাজ করছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর মধ্যে ক্ষমতার কোনো লোভ নেই, তিনি দেশের জন্য কাজ করতে চান। তবে তাঁকে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাইলে বিতর্ক তৈরি হবে।মান্না বলেছেন, ‘কেউ কেউ দেখছি অধ্যাপক ইউনূসকে জোর করে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখতে চান, কিন্তু কেন?’‘জনশক্তি সভা’র আয়োজনে ‘রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মান্না। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ সভা হয়।মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ড. ইউনূস তাঁর সব কাজেই ম্যাজিক দেখাচ্ছেন। তা না হলে রোজার মধ্যে দ্রব্যমূল্য বাড়ার পরিবর্তে কমে কীভাবে? ঈদযাত্রা এত সুন্দর হয় কী করে?...
    ভারতে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়েছে স্বাধীনতার পরেই। সঠিকভাবে বললে, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসকের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভের পর রাজতন্ত্র আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় এবং ভারত একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। তবে, রাজবংশ লোপ পায়নি। ভারতের অনেক জায়গায় অনেক পরিবার এখনও রাজা বা নবাব উপাধি ধারণ করেন, নিয়ম মেনে যোগ্য উত্তরাধিকারীর রাজাভিষেক হয়, চলনে-বলনে অতীতের মর্যাদা এখনও বহন করে চলেন তারা। রাজস্থানের কিছু বিখ্যাত রাজপরিবার, পতৌদির নবাব- এদের কথা অনেকেরই জানা। তবে, মুঘল বংশের দিক থেকে যে উত্তরাধিকারীরা রয়েছেন, তাদের কথা অনেকেই জানেন না। ইয়াকুব হাবিবউদ্দিন তুসি-ও সেই রকমই একজন। তিনি বর্তমানে হায়দরাবাদে রয়েছেন। সেখানেই তিনি থাকেন। তার প্রধান কাজই হলো সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধিকে রক্ষা করা। সেই কাজটি তিনি করে চলেছেন। ইয়াকুবের জীবনযাপন ইতিমধ্যে সকলকে প্রভাবিত করেছে। তিনি একেবারে যেন মহারাজের মতোই...
    নেপালে বিলুপ্ত রাজতন্ত্র পুনরায় চালুর দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গতকাল শুক্রবার এক সাংবাদিকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী এবং পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ ঘটনায় মোট ৪৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। নেপাল পুলিশের মুখপাত্র দীনেশ কুমার আচার্য ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নিহত দুজনের মধ্যে একজন বিক্ষোভকারী এবং অপরজন সাংবাদিক ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন আহত বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। স্থানীয় একটি টিভি স্টেশন জানিয়েছে, একটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলে তাদের একজন কর্মী নিহত হন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের হাজার হাজার সমর্থক কাঠমান্ডুর পূর্ব প্রান্তে জড়ো হয়েছিল। একসময় কিছু বিক্ষোভকারী নিষিদ্ধ এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। পুলিশ টিয়ার গ্যাসের...
    মুক্তিযুদ্ধ জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। এটি পূর্বাপর কোনো ঘটনার সঙ্গে তুলনীয় নয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, সব আমলেই মুক্তিযুদ্ধের গৌরবদীপ্ত ইতিহাসের বয়ানগুলো পক্ষপাতদুষ্ট। যখন যে দল ক্ষমতায় গেছে, তখন তাদের মতো করে মুক্তিযুদ্ধের ন্যারেটিভ দাঁড় করিয়েছে।  স্বাধীনতার পর বেতার-টেলিভিশন খুললে মনে হতো, মুক্তিযুদ্ধ যেন আওয়ামী লীগের একার যুদ্ধ ছিল। তখন বেতার-টেলিভিশন-রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অন্য দল ও ব্যক্তির ভূমিকা স্থান পেত না। অথচ অন্যান্য দলও মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ছিল। ন্যাপ (ভাসানী), ন্যাপ (মোজাফ্‌ফর), কমিউনিস্ট পার্টি (মণি সিংহ) ও মনোরঞ্জন ধরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় কংগ্রেস মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, অধ্যাপক মোজাফ্‌ফর আহমদ, মণি সিংহ ও মনোরঞ্জন ধর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। এর বাইরে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টিসহ আরও বেশ কিছু বাম সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে শামিল হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে সিরাজুল...
    আফগানিস্তানে মুজাহিদিনদের সঙ্গে ১০ বছরের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর ১৯৮৯ সালে দেশটি থেকে তাদের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। এর দুই বছর পর সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন ওয়ারশ চুক্তিটি ভেঙে যায় (এর মধ্য দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়)। সাম্রাজ্যের কবরস্থান হিসেবে আফগানিস্তানের যে পরিচিতি, সেটা আরও সংহত হয়।এর ৩০ বছর পর ২০২১ সালে তালেবানের সঙ্গে ২০ বছরের যুদ্ধ সমাপ্তি ঘোষণা করে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তালেবান হলো মুজাহিদিনের উত্তরসূরি। চার বছর পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন একটা পদক্ষেপ নিলেন, যেটা কার্যকরভাবে আটলান্টিক জোট বা ন্যাটোর পরিসমাপ্তি ঘটাচ্ছে।পরাশক্তির মধ্যে শীতল যুদ্ধ আফগানিস্তানের বাইরে বাকি বিশ্বজুড়ে সমান্তরালে চলেছিল। ১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত অর্থনীতিতে স্থবিরতা নেমে আসে এবং এতে সমাজতন্ত্রের প্রতি ব্যাপক মোহভঙ্গ ঘটে। এর প্রতিক্রিয়ায় সোভিয়েত সমাজ পুনর্গঠনের জন্য প্রেসিডেন্ট মিখাইল...
    নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিপুলসংখ্যক মানুষ দেশটির সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। দেশের চলমান অবস্থা নিয়ে অসন্তোষ জানানোর পাশাপাশি বিলুপ্ত রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।জ্ঞানেন্দ্র শাহ গতকাল রোববার পশ্চিমাঞ্চলীয় নেপালে ভ্রমণ শেষ করে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাঁকে স্বাগত জানাতে ১০ হাজারের মতো সমর্থক ত্রিভুবন বিমানবন্দরের প্রধান প্রবেশপথের কাছে জড়ো হয়েছিলেন।জড়ো হওয়া মানুষেরা বলছিলেন, ‘রাজার জন্য রাজপ্রাসাদ খালি করুন। রাজা ফিরে আসুন, দেশকে বাঁচান। আমাদের প্রিয় রাজা দীর্ঘজীবী হোন। আমরা রাজতন্ত্র চাই।’মানুষের ভিড়ের কারণে বিমানবন্দর থেকে এবং বিমানবন্দরগামী যাত্রীরা হেঁটে যেতে বাধ্য হয়েছেন। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিমানবন্দর প্রাঙ্গণে প্রবেশে বাধা দিয়েছে শত শত দাঙ্গা পুলিশ।২০০১ সালে নেপালের তৎকালীন রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহকে সপরিবার হত্যা করা হয়। বড় ভাই বীরেন্দ্র নিহত হওয়ার পর ওই বছরই রাজা হিসেবে জ্ঞানেন্দ্রর অভিষেক হয়।...
    সংবিধান সংস্কার কমিশন গত ১৫ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ওয়েবসাইটে তাদের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন নভেম্বর মাসে দেশের কয়েকজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে একটি পরামর্শ সভার আয়োজন করে। আমাকেও ওই সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানে আমি সংবিধান সংস্কারে আমার প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করেছিলাম। পরে কমিশনের অনুরোধে প্রস্তাবগুলো লিখিতভাবে কমিশনে পেশ করেছিলাম। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, আমার প্রায় সবক’টি প্রস্তাব কমিশনের প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে। সেগুলো হলো: ১) সংবিধানের ৭০ ধারা সংশোধন; ২)    প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা; ৩) নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা; ৪) পাঁচ বছরের স্থলে চার বছর পরপর সংসদীয় নির্বাচন; ৫) পরপর দু’বারের বেশি কাউকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়া; ৬)...
    দেশে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার কথা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’। এজন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নকে অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তারা। তবে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ধারণাটি আসলে কী? এ নিয়ে অনেকইটাই অস্পষ্ট রয়েছে।  ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ধারণাটি মূূলত তৈরি হয়েছে ফরাসি বিপ্লব থেকে। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে, কোনো দেশে আগের শাসনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে নতুন শাসনকাঠামো বা ব্যবস্থাপনা স্থাপন করা, পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থা বদলে নতুন রাজনৈতিক শাসনকাঠামো গ্রহণ করা। উদাহরণস্বরূপ ফ্রান্সের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। দেশটিতে দীর্ঘসময় রাজতন্ত্র ছিল। ১৭৮৯ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে রাজতন্ত্রের অবসান হলেও বিপ্লব চলার মধ্যেই ১৭৯২ সালে ফ্রান্সে প্রথম রিপাবলিক ঘোষণা করা হয়। ১৮০৪ সাল পর্যন্ত প্রথম রিপাবলিক বলবৎ থাকে। তারপর...
    সেদিন একজনের সঙ্গে আলাপ চলছিল। ধার্মিক মানুষ তিনি। ট্রাম্প প্রসঙ্গে এ–কথা সে–কথায় হঠাৎ বললেন, দেখেন, গাজায় ইউএসএআইডির মাধ্যমে ৫০ মিলিয়ন ডলারের কনডম পাঠানো হয়েছিল। উদ্দেশ্য, মুসলমানদের জন্মনিয়ন্ত্রণ। তারা যাতে সংখ্যায় না বাড়ে, যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তাঁর সঙ্গে আরও দু–একজন যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও তাল মেলালেন। তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করলাম, এটি ভুল পাঠ। তিনি প্রমাণ দেখালেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিত উন্মুক্ত ব্রিফিংয়ে বলেছেন ৫০ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের কনডম পাঠানোর কথা।বললাম, জানি, এবং নিজেও ব্রিফিং দেখেছি। ৫০ মিলিয়ন ডলার অঙ্কটিই মিথ্যা। তাঁরাও মিথ্যা বলেন। পেছনের উদ্দেশ্য পরে বলব, বুঝবেন। আমার হাতেও প্রমাণ আছে ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে এই খাতে এক ডলার দেওয়া হয়নি। ২০২৩ সালে মাত্র ৪৬ হাজার ডলার বরাদ্দ ছিল। তা–ও জর্ডান এবং পশ্চিম তীরের অগণিত অসংখ্য মানুষ,...
    জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের তরুণ নেতাদের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লক্ষ্য দেশে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা করা। গতকাল শুক্রবার নতুন এ দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। কিন্তু সেকেন্ড রিপাবলিক বলতে প্রকৃতপক্ষে তাঁরা কী বোঝাতে চাইছেন, সেটি অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়। ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ধারণাটি ফ্রান্সের ইতিহাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। পোল্যান্ড, কোস্টারিকাসহ আরও কয়েকটি দেশের ইতিহাসের সঙ্গেও মিশে আছে এটি। এটি এমন একটি রাজনৈতিক ধারণা, যা বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সার্বিকভাবে এমন ধারণায় কোনো দেশে পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থার বদল ঘটিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বা শাসনকাঠামো গ্রহণ করাকে বোঝায়। বিপ্লব, অভ্যুত্থানসহ নানাভাবেই আসতে পারে এমন পরিবর্তন। উদাহরণ হিসেবে ইউরোপের দেশ ফ্রান্সের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা যায়। এটি একসময় রাজতন্ত্রের অধীন ছিল। ১৭৮৯ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত...
    লেখক ও সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে চার দশক শিক্ষকতা করেছেন। ওই বিভাগ থেকেই ১৯৬৫ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৬ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ– মুক্তিসংগ্রাম, কালের যাত্রার ধ্বনি, নৈতিক চেতনা: ধর্ম ও আদর্শ ইত্যাদি। বর্তমানে তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৪৪ সালে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সমকালের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহসম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম সমকাল: আপনি হয়তো জানেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার চার দশক পূর্তি উদযাপন করছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন আপনি? আবুল কাসেম ফজলুল হক: চার দশক দীর্ঘ একটি সময়। এই সময়ে তারা নানাবিধ কাজ করেছে। জাসদ যে সমাজতন্ত্রের কথা বলেছে, তাতে যথেষ্ট বিচার-বিবেচনা ও নিজেদের সিদ্ধান্ত ছিল না। সমাজতন্ত্র কী, সমাজতন্ত্র কী নয়– এ ব্যাপারগুলো তারা বুঝতে...
    গত প্রায় ৫৪ বছরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভিযাত্রায় দেখা যায়, আমাদের সমস্যা শুধু অর্থনৈতিক, সামাজিক, জনসংখ্যা বা আয়তনগত নয়, রাজনৈতিকও বটে। সুনির্দিষ্টভাবে সেটা হলো, সাংবিধানিক কাঠামোগত বিপত্তি। অন্তত ২০০ বছর ধরে পৃথিবীতে নতুন রাষ্ট্রকাঠামো মূলত গড়ে উঠছে লিখিত সাংবিধানিক দলিলপত্রের মাধ্যমে। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণা ও স্বাধীনতাযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো নির্মিত হয় ১৯৭২ সালের সংবিধান দিয়ে।তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য প্রস্তুত সাধারণ আইনের মতো করেই সংবিধানটি পাস হয়। এতে এমন একটি রাষ্ট্রকাঠামো নির্মিত হয়েছে, যাতে খুব সহজেই নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে পুরো রাষ্ট্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফলে অনেক ‘হুজুগে’ আর বিভক্তি সৃষ্টিকারী মতাদর্শ সংবিধানে ঢুকে গেছে, যেগুলোর কোনো দাবি বা প্রয়োজন কিছুই ছিল বলে প্রতীয়মান হয় না।জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা আর সমাজতন্ত্র—এই তিন মূলনীতি জনবিভক্তির প্রধান উপাদান বলে দৃশ্যমান হয়েছে।...
    মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি তিনটি– গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এই তিন নীতির ভিত্তিতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র রচিত হয়েছিল। ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা যুক্ত হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি দাঁড়ায় চারটি। বর্তমানে সংবিধানের এই চার মূলনীতির ব্যাপারে দেখা দিয়েছে গভীর এক সংকট। বিশেষত জাতীয়তাবাদ প্রশ্নে বাঙালি, নাকি বাংলাদেশি– এ নিয়ে তর্ক উঠেছে।  ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর রাজনীতির মেরূকরণ হয়। নানা সামরিক অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠন করেন। যে দলের ভাবাদর্শ– গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। সেই সত্তর দশকের পর থেকে জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়।  মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূলনীতি বাঙালি জাতীয়তাবাদ হলেও ভৌগোলিক দিক থেকে জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ তত্ত্বটি বেশি যুক্তিযুক্ত। এ মতবাদের ভিত্তিতে বড় একটি অংশের ন্যারেটিভ হয়ে দাঁড়ায়...
    জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর চারটি– সংবিধান, নির্বাচন, দুদক ও পুলিশ তাদের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। বাকি ১১টির প্রস্তাব আগামী মাসের মাঝামাঝি পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। গত দেড় দশকে ছলচাতুরীর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতির ঘাড়ে চেপে বসা শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার উৎখাতের পর আর যাতে এ ধরনের সরকার ক্ষমতায় না আসে, সে জন্যই মূলত সংস্কার প্রস্তাব। তবে এ কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের দাপ্তরিক নাম, মূল চার নীতিসহ কিছু সুপারিশের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে আলোচনা জরুরি। জুলাই-আগস্টে এ দেশের রক্তাক্ত রাজপথের অভিজ্ঞান থেকে আমরা নিশ্চিত, এ দেশে আর কোনো ব্যক্তিকে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রাখা যাবে না। বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার আওতা যতদূর চোখ যায়, তা-ও পেরিয়ে যায়। তিনি একই সঙ্গে সংসদ নেতা, দলেরও প্রধান; বস্তুত তিনি দল ও...
۱