অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আট মাস পরও দেশে ‘মব ভায়োলেন্স’ বা দলবদ্ধ সহিংসতা বিভিন্ন মাত্রায় জারি আছে। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও দমন-পীড়নের ঘটনা ঘটছে। কৃষক-শ্রমিকের সঙ্গেও অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণ বৈরী। জানা-অজানা বিভিন্ন ধরনের গোষ্ঠীর প্রভাব এখনো আদালত অঙ্গনে দেখা যাচ্ছে। গত রমজানে খাদ্যদ্রব্যের দাম কম থাকলেও বাজারে আবার অস্থিরতা শুরু হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাসের বিভিন্ন কার্যক্রমকে এভাবেই মূল্যায়ন করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গত ২২ আগস্ট এই গঠন করা হয়। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ সমাজের নানা পেশার মানুষের সমন্বয়ে শতাধিক ব্যক্তি এই কমিটিতে রয়েছেন।

এই কমিটির উদ্যোগে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাস: ভূমিকা ও সংস্কার প্রস্তাব’ শিরোনামে পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সভায় জননিরাপত্তা, সংবিধান, শিক্ষা, দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি, শ্রমিক, কৃষকের সংকটসহ ১৩টি বিষয়ে বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির অন্য সদস্যরা।

সংস্কার বিষয়ে সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের কিছু কিছু কাজ আছে, যেগুলো বর্তমান সরকারই করে ফেলতে পারে। কিন্তু সংস্কার আগে না নির্বাচন আগে—এই অপ্রয়োজনীয় একটা বিতর্কের কথা শোনা যাচ্ছে। কিছু কিছু সংস্কার এই অন্তর্বর্তী সরকারই করতে পারে, আবার কিছু কিছু সংস্কার আছে, যেগুলো করার জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার। অন্তর্বর্তী সরকারই যেগুলো করতে পারে, সেগুলো করতে বাধা কোথায়, সেটা বোঝা যাচ্ছে না।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সম্পর্কের’ বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বসুন্ধরা গোষ্ঠীর সঙ্গে খাতির করে তো কোনো পরিবর্তন আসবে না। একদিকে পাইকারি মামলা হচ্ছে, বহু নিরপরাধ ও নিরীহ লোক হামলা-মামলায় আতঙ্কিত আর অন্যদিকে বসুন্ধরার মতো প্রভাবশালী লোকেরা আপনাদের সঙ্গে বৈঠক করে, তাদের নানা সুবিধা দেওয়া হচ্ছে—এই বৈপরীত্য চলবে না। এগুলোর অবসান এবং পরিবর্তন আমাদের দাবি করতে হবে।’

মূলত ‘দীর্ঘকালীন স্থায়ী সরকারের’ কথা বলতে গিয়ে আনু মুহাম্মদ বসুন্ধরা গ্রুপের প্রসঙ্গ টানেন। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এবং বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি বা বহুজাতিক কোম্পানি—এই তিন গোষ্ঠীকে স্থায়ী সরকারের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরা যদি একই রকম ক্ষমতাবান থাকে, একই রকম সক্রিয় থাকে এবং একইভাবে তাদের নীতিমালায় যদি দেশ চলতে থাকে, তাহলে কোনো ধরনের পরিবর্তন হবে না।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে আনু মুহাম্মদ বলেন, বিগত সরকারের সময় বোঝা যেত আদালতের রায় কী হবে। এখনো বোঝা যায় যে রায় কী হবে। তাহলে পরিবর্তনটা কী হলো? কে জামিন পাবে, কে খালাস পাবে, কে আটক থাকবে, কার জামিন হবে না, এগুলো তো পরিষ্কার বোঝাই যাচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বাইরের জানা-অজানা বিভিন্ন ধরনের গোষ্ঠীর প্রভাবে যদি আদালত চলে, তাহলে এই সরকার যে সংস্কার বা পরিবর্তন করতে আগ্রহী, তার প্রকাশটা কোথায়?

ফ্যাসিবাদ যেভাবে কায়েম হয়েছিল

ধর্মনিরপেক্ষতা ফ্যাসিবাদী শাসনের ভিত্তি কায়েম করেছে-এ ধরনের বিপজ্জনক কথা কী করে সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে আসতে পারে, তা বুঝতে পারেন না বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, সত্যটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ শাসনামলে যে ফ্যাসিবাদ হয়েছে, সেটা ধর্মনিরপেক্ষতার মধ্য দিয়ে হয়নি, ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে প্রতারণা করার কারণে হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতাকে প্রতারণা করে, ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে, ধর্মীয় নিপীড়নকে নানাভাবে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করার চেষ্টা করে, মুক্তিযুদ্ধকে অপব্যবহার করে এবং জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ।

বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের কিছু কিছু কাজ আছে, যেগুলো বর্তমান সরকারই করে ফেলতে পারে।অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য

সংবিধানের মূলনীতি থেকে সমাজতন্ত্র বাদ দেওয়া-সংক্রান্ত প্রস্তাবেরও সমালোচনা করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, সংস্কার কমিশন যেভাবে বলছে সমাজতন্ত্র হচ্ছে গণতন্ত্রবিরোধী ব্যবস্থা, তারা তো নিশ্চয়ই জানে যে পুঁজিবাদের যেমন অনেক রকম মডেল আছে, সমাজতন্ত্রেরও বিভিন্ন ধরন আছে।.

..তার চেয়ে পরিষ্কার করে বলুক সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে পুঁজিবাদ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপনারা সংবিধানের সংস্কার করার কথা বলে এই মাধ্যম যদি আপনারা গ্রহণ করেন, তাহলে বৈষম্যহীনতার দিকে যাওয়ার পরিবর্তে বৈষম্য বৃদ্ধির দিকে যাওয়ার অর্থনৈতিক ভিত্তিটা তৈরি করছেন। সেটা তাহলে কোথায় সংস্কার, কোথায় পরিবর্তন?’

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, উত্তরাধিকার প্রশ্ন কিংবা নারীর অধিকার প্রশ্ন এলেই বাংলাদেশের বৈষম্যবাদী রাজনীতি বা মতাদর্শ যারা ধারণ করে, ধর্মের নামে হোক জাতির নামে হোক, তাদের মধ্যে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়। কারণ, ধর্ম পালন করুক বা না করুক, নারী প্রশ্ন এলেই ধর্মের অজুহাত দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। আবার সেটা নিয়ে একটা উন্মাদনা ও সহিংসতা তৈরি করার চেষ্টা চলে। কিছু লোক ধর্মের নাম করে হত্যার কথা বলছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো ব্যবস্থা নেই।

সংবিধানের মূলনীতি থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে বহুত্ববাদ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশের কঠোর সমালোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিলে বহুত্ববাদ কী করে হয়? কারণ, ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই হচ্ছে যে রাষ্ট্র সব ধর্মের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকবে। কোনো ধর্মের ব্যাপারে পক্ষপাত থাকলে বহুত্ববাদ কী করে হবে?’

বিচারব্যবস্থা

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির এই সভায় সংবিধান ও বিচার বিভাগ নিয়ে কথা বলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও উচ্চ আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে রাখা হয়েছে। নিম্ন আদালতের কথা বললে অনেকে আঁতকে উঠবে। প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিচারকদের যখন-তখন ছুটিতে পাঠানো হচ্ছে। উচ্চ আদালতে জামিন হওয়ার পরও কেউ কেউ মুক্তি পাচ্ছেন না। বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া এখনো আগের মতোই চলছে। সংবিধান ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে এখন পর্যন্ত খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু নেই।

এই আইনজীবী বলেন, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় থাকলে বহুত্ববাদের ধারণাটা বজায় থাকবে। সংবিধানের মূলনীতি থেকে সমাজতন্ত্রকে বাদ দেওয়ার যে সুপারিশ করা হয়েছে, তা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের ধারণার বিরোধী।

শিক্ষা

শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সভায় বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা। তাঁর প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, সংবিধানে শিক্ষাকে শর্তহীনভাবে মৌলিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করা, উচ্চশিক্ষাকে দরিদ্র মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা, উপাচার্য নিয়োগে আচার্যের ক্ষমতা হ্রাস, সিন্ডিকেটে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব রাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সর্বময় ক্ষমতার ভারসাম্য আনা।

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মব ভায়োলেন্স, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের দুরবস্থা, কৃষক-শ্রমিকের সংকট এবং বিচার ব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব অব্যাহত রয়েছে; সংস্কারের বাস্তব অগ্রগতি নেই।

এ ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করার ধারাগুলো বাদ দেওয়া, সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া, শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকের সর্বোচ্চ বেতনকাঠামো নির্ধারণ, আধিপত্যমুক্ত গণতান্ত্রিক শিক্ষা প্রশাসন গঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নীতি পুলিশি ও মব–সন্ত্রাস বন্ধ করার কথা বলেন সামিনা লুৎফা।

সভায় শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক। তিনি বলেন, গত আট মাসে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগের একচেটিয়া দখলদারত্বের অবসান হলেও মব সহিংসতাসহ পরিচয়বাদী বিভাজন দেখা যাচ্ছে।

কৃষকের সংকট

‘কৃষি ও কৃষকের সংকট’ বিষয়ে বক্তব্য দেন লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা। তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে কৃষকের বিপর্যয় অব্যাহত আছে। কৃষকের স্বার্থে কাজ করতে কোনো ধরনের কনসার্ন (চিন্তা) সরকারের আছে বলে মনে হয় না। এই সরকার যে কৃষক-শ্রমিকের সরকার নয়, সেটা অনেকটা পরিষ্কার। কৃষক-শ্রমিকের সঙ্গে সরকারের আচরণ খুবই বৈরী।

বক্তব্যে কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন মাহা মির্জা। এর মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজের মৌসুমে আমদানি না করে মৌসুম শেষ হলে (সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে) আমদানি করা, পাইকারি বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অধিক লোকবল নিয়োগ দেওয়া ও সামাজিক কমিটি গঠন এবং ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমানো।

স্বাস্থ্য খাত

স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ে বক্তব্য দেন চিকিৎসক মো. হারুন-অর-রশিদ। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের টানাপোড়েনের কারণে চীনের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই সুযোগে আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো যেত। এতে আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হতো।’

মব সহিংসতা, দ্রব্যমূল্য অস্থিরতা, বিচার বিভাগের অনিয়ম, কৃষকের দুর্দশা এবং সংবিধান সংস্কারের নামে বৈষম্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি সরকারের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ, স্বাস্থ্য খাতের বাজেট বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যকে জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা, কারখানায় স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন হারুন-অর-রশিদ। বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘মবের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে।’  

দ্রব্যমূল্য  

রমজান মাসে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমলেও এখন বাজারে আবারও অস্থিরতা শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা। তিনি বলেন, বাজারকাঠামোর মৌলিক কোনো পরিবর্তন এই সরকার করেনি। ধনীদের কর ফাঁকি দেওয়ার পথ বন্ধ করার পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিরও সংস্কার দাবি করেন তিনি।

জননিরাপত্তা

জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রনেতা বাকি বিল্লাহ। গত আট মাসে মাজার ভাঙা, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নির্যাতন, ধর্ষণ-নারী নিপীড়নের ঘটনা, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মব–সন্ত্রাসের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মব ভায়োলেন্স এখনো বিভিন্ন মাত্রায় জারি আছে।’

ভয় ও আতঙ্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাসের বিভিন্ন কার্যক্রমের মূল্যায়ন নিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত এই সভার সঞ্চালক ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি দিলীপ রায়।

সভায় হরিজন জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে সভায় বক্তব্য দেন নারী নেত্রী সীমা দত্ত। জুলাই আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিয়ে বক্তব্য দেন স্থপতি আরিফুল হক। সমবায়ের প্রতারণার চিত্র নিয়ে বক্তব্য দেন গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ।
গত আট মাসে ‘মব’–এর কারণে নারীরা সবচেয়ে বেশি হেনস্তার শিকার হয়েছেন—এমন মন্তব্য করেন মানবাধিকারকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী। ‘নারী ও লৈঙ্গিক বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী’ বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ নিয়ে মাঠ গরম করা হচ্ছে। এই কমিশনের সুপারিশ কতটা বাস্তবায়ন করা যাবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

পাহাড় ও সমতলের জাতিগোষ্ঠী নিয়ে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হেমা চাকমা। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের পরও দেশ বৈষম্যমুক্ত হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বাধীন চলাচলে বিধিনিষেধ, কোথাও কোথাও পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী প্রশ্ন রাখেন, দ্বিতীয় মুক্তি বা দ্বিতীয় স্বাধীনতা শুধু সমতলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না।

শিল্প ও শ্রমিকের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকেরা ন্যায্য দাবিদাওয়া তুলে ধরলে ছাঁটাই করা হচ্ছে। এই ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে এখন একধরনের ভয় ও আতঙ্ক কাজ করছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মব ভ য় ল ন স প রস ত ব র আট ম স ব যবস থ সরক র র ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের রোডম্যাপে কবে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে মাস দেড়েক আগে বলা হয়েছিল, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। এ দেশে গত ১৫ বছরে সতি্যকার অর্থে কোনো নির্বাচন হয়নি। নির্বাচন না থাকার কারণেই স্বৈরাচারী শাসন চেপে বসতে পেরেছিল।

নাগরিক কোয়ালিশনও অনেক আগেই নির্বাচনের জন্য ‘ফেব্রুয়ারি রোডম্যাপ’ দিয়েছিল। কিন্তু সরকার থেকে এখনো কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। এদিকে জোর গুজব উঠেছে, আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু তারিখ বললেই কি নির্বাচন হয়?

২.

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা অনুযায়ী আমরা কি আদৌ কিছু শুরু করতে পেরেছি, নাকি আবারও সেই পুরোনো অভ্যাস, অর্থাৎ সময়ক্ষেপণ, সন্দেহ আর পরস্পরবিরোধী বক্তব্য অব্যাহত রয়েছে? বাস্তবতা হচ্ছে, গত ১৩ জুন লন্ডনে তারেক রহমান ও সরকারপ্রধানের বৈঠক হলেও এরপর আর কোনো গঠনমূলক অগ্রগতি নেই।

অনেকেই ভাবছেন, নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট সময় হাতে আছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন মানে হাতে তেমন সময় নেই। বাস্তবতা হলো, সরকার যদি সত্যিই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করতে চায়, তাহলে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বড় সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত করতে হবে। আর তা করতে হলে এখন থেকেই খুব জোরেশোরে কাজ শুরু করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানেই নিয়ন্ত্রিত প্রহসন। এ জন্য আমাদের হাতে যেসব কাজ রয়েছে: 

ক. ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কারের জন্য জুলাই চার্টার।

খ. নির্বাচন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য ন্যূনতম সংস্কারসহ নতুন আইন প্রণয়ন।

গ. ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং সীমানা পুনর্নির্ধারণ।

ঘ. নির্বাচন কমিশনের মাঠপর্যায়ে প্রস্তুতি। এর মধ্যে আছে অমোচনীয় কালিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বিশাল ক্রয়াদেশ এবং লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা।

এই কাজগুলো সময়মতো না হলে তারিখ শুধু ক্যালেন্ডারের পাতায় লেখা থাকবে; নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হতে পারে; গণতন্ত্র ফিরবে না। এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে তা দেশকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে।

৩.

এ স্থিতাবস্থার প্রথম কারণ ঐকমত্যের ঘাটতি। অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত—সব পক্ষই পরস্পরের দিকে তাকিয়ে আছে সন্দেহের চোখে। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে গত বছরের জুলাইয়ে আন্দোলন করলেও এখন তাদের সবার পথ আলাদা। সংস্কার নিয়ে সবার আলাদা মত।

নাগরিক কোয়ালিশনের মূল যেসব প্রস্তাব ছিল, তার মধ্যে উচ্চকক্ষে আনুপাতিক বণ্টন নিয়ে বিএনপিসহ দু–একটি দল ছাড়া আর সবার মধ্যে স্পষ্ট মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে একেকজন একেক রকম মত দিচ্ছে।

অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে যদিও সবাই একমত হয়েছে, এরপরও নারী আসনে সরাসরি ভোট নিয়ে এখনো কোনো পরিষ্কার সিদ্ধান্ত নেই। নিরপেক্ষ নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে এখনো আলোচনা এগোচ্ছে না।

নাগরিক কোয়ালিশনের ৭ দফা সংস্কার প্রস্তাব ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের জন্যই প্রয়োজনীয় ছিল বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আবার তা বিবেচনা করার অনুরোধ রইল।

৪.

এদিকে কোনো রাজনৈতিক দলই নিজেদের দলীয় বা অভ্যন্তরীণ সংস্কারের কাজ শুরু করেনি। এত সব ডামাডোলে তা হারিয়েই যাচ্ছে। রাষ্ট্র সংস্কারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজনীতি করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে, নতুন রাজনীতির নিজ নিজ দলকে উপযোগী করে পুনর্বিন্যস্ত করতে হবে।

 এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বললেও প্রশাসন এখনো ‘ধীরে চলো’ নীতিতে আছে। নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি ও তালিকা হালনাগাদ খুব ধীরগতিতে চলছে।

এই অর্থবছরের (২০২৫-২৬) বাজেটে নির্বাচন কমিশন ২ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। এর মধ্যে শুধু নির্বাচন পরিচালনা করতেই ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা খরচ হবে, যা ২০২৪ সালের নির্বাচনের খরচের প্রায় কাছাকাছি। বাজেট বরাদ্দ হলেও কাজে গতি নেই। এ কারণে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে আস্থা পাচ্ছে না।

২০২৪ সালের নির্বাচনে পুলিশ, র‍্যাব, আনসার, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাড়ে ছয় লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আমাদের পুলিশ কি প্রস্তুত? গোপালগঞ্জের অবস্থা দেখে এ প্রশ্নের উত্তর মনে হয় সবাই জেনে গেছেন।

পত্রিকায় এসেছে, গাড়ির অভাবে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের প্যাট্রোলিং ব্যাহত হচ্ছে। এই গাড়িগুলো কবে কেনা হবে? ২০২৪ সালে নির্বাচনের জন্য শুধু পুলিশের জন্যই বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। এবার কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে, সেটা এখনো জানা যায়নি।

এবার নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি বুথে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি, রাতে পাহারা এবং বিস্ফোরণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা থাকতে হবে। ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি বুথে এই সিসিটিভি ক্যামেরার আয়োজন বিশাল কর্মযজ্ঞের ব্যাপার।

এ ছাড়া নির্বাচনের জন্য অমোচনীয় কালি থেকে শুরু করে বিশালসংখ্যক স্টেশনারি পণ্য প্রয়োজন হয়, টেন্ডারের মাধ্যমে কিনতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। কিন্তু এসবের জন্য এখনো কোনো টেন্ডারের প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে না। এগুলো ছোটখাটো ব্যাপার হলেও অত্যাবশ্যকীয় এবং সময়সাপেক্ষ।

৫.

এদিকে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে। তাঁদের বিবেচনায় রাখলে দেশের বাইরে প্রায় দুই কোটি ভোটার আছেন। নির্বাচনে কোন পদ্ধতিতে তাঁদের করা যুক্ত হবে কিংবা এত কম সময়ে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব কি না, সেটা একটা বড় প্রশ্নসাপেক্ষ বিষয়। এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশে থাকা আমাদের দূতাবাসগুলোর আরও গতিশীলতা দরকার।

 এদিকে সীমানা নির্ধারণ এখনো ঝুলে আছে। কোন এলাকা কোন আসনে পড়বে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। ব্যাপারটি ঠিক না হলে প্রার্থীরা প্রস্তুতি নেবেন কীভাবে? সীমানা ঠিক না করে নির্বাচনের ঘোড়া ছুটিয়ে লাভ নেই।

প্রতিবেশী ভারত, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ায় নির্বাচন মানে প্রায় বছরব্যাপী প্রস্তুতির একটি প্রক্রিয়া। এদিকে ঘোষিত সময় থেকে মাত্র সাত মাস আগে বাংলাদেশে এখনো আইনকানুন আর সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা চলছে।

তবে ব্যয়ের দিক থেকে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ করতে যাচ্ছি। ভারতের তুলনায় জনপ্রতি প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। কিন্তু এই খরচ জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে পারছে না।

৬.

আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে শুধু দেশের মানুষ নয়, আন্তর্জাতিক মহলও। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, ভারত, চীন—সবাই বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা চায়। কিন্তু স্থিতিশীলতা মানে শুধু একটি নিয়ম রক্ষার ভোট নয়। সংস্কার আর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে এ নির্বাচনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া কঠিন হবে। আমরা যদি নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধান না করি, বাইরের চাপ আরও বাড়বে।

এদিকে মানুষের মধ্যে  হতাশা বাড়ছে। ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সব শ্রেণি–পেশার মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। তারা ভেবেছিল, এবার কিছু বদলাবে। কিন্তু এখন দেখছে আবারও সময়ক্ষেপণ আর দোষারোপের রাজনীতি। তাদের যদি আবারও হতাশ করা হয়, তাহলে অনাস্থা আরও গভীর হবে। এটা শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নয়, দেশের ভবিষ্যতের জন্যও ভয়ংকর।

এদিকে অর্থনীতিও ঝুলে আছে; নেই বড় কোনো বিনিয়োগ। যে কোটামুক্ত সরকারি চাকরির জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা নিয়ে দৃশ্যমান কোনো কাজ চোখে পড়ছে না। ফলে বেকারত্ব বাড়ছেই।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কাঠামোগত সংস্কারের কোনো বরাদ্দ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে তবেই নতুন সরকার সংস্কারমুখী বাজেট নিতে পারবে। নতুন বিনিয়োগ আসা, আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) পরবর্তী কিস্তি পাওয়া—সবই এই সংস্কারের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু নির্বাচন দেরিতে হলে অর্থনীতিও সংকটে পড়বে।

৭.

সামনে কী হতে পারে? যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হয় এবং এ রকম অরাজকতা চলতেই থাকে, তাহলে সরকার যেকোনো সময় নির্বাচন পিছিয়ে দিতে পারে। এতে নতুন করে সংকট তৈরি হবে।

কিন্তু সবচেয়ে বড় ভয়—ক্ষমতার নতুন পুনর্বিন্যাস হবে; গণতন্ত্র ফিরবে না। বিশ্বাসের সংকট আরও প্রকট হবে। সে রকম কিছু হলে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়দায়িত্ব নিতে হবে।

বিগত স্বৈরাচারী সরকার এ দেশের মানুষের মনমানসিকতা অনেকখানি বদলে ফেলেছে, যার অনেক কিছুই আমরা শুনতে পাচ্ছি। আমাদের দরকার মানুষের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, যা হতে হবে সুষ্ঠু ও অবাধ। আর তার জন্য শুধু সরকার নয়, সব দলকেই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

এ রকম অবস্থায় বড় দলগুলোর জন্য একটি সর্বসম্মত ‘রাজনৈতিক নৈতিকতা সনদ’ প্রণয়ন করতে পারে নির্বাচন কমিশন বা নাগরিক সমাজ। এর ভিত্তিতে দলগুলোই ‘কন্ডাক্ট সেল’ করে সরকারকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিতে পারে।

৮.

এখনো কিছু সময় হাতে আছে। আমরা যদি টাইমলাইন নির্ধারণ করে এবং সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করে কাজ শুরু করতে না পারি, তাহলে সরকার বদলাবে ঠিকই, কিন্তু পুরোনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত পাল্টাবে না।

সেপ্টেম্বরের মধ্যেই যদি রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়, সংবিধান সংস্কারের খসড়া তৈরি হয়, ভোটার তালিকা আর সীমানা নির্ধারণ শেষ হয় এবং সব দল যথাসাধ্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করে, তাহলেই শুধু এই নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হবে।

বিগত স্বৈরাচারী রেজিম এ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। তাই একটি নির্বাচনের জন্য আমাদের সবারই দায়দায়িত্ব নিতে হবে। আর যদি তা না পারি, ইতিহাস আমাদের কখনো ক্ষমা করবে না।

সুবাইল বিন আলম সদস্য, নাগরিক কোয়ালিশন

[email protected]

মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ