জুলাই-আগস্টের আন্দোলন–পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে সিলেট মহানগর বিএনপির এক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশ পাওয়া বিএনপি নেতা সৈয়দ রহিম আলী সিলেট মহানগর বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ রোববার এ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সৈয়দ রহিম আলীর বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের বাদী বানিয়ে সাধারণ মানুষদের মামলা দিয়ে হয়রানি করার ও ফায়দা হাসিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট ও দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী। এ ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ ও দলীয় শৃঙ্খলা অমান্য করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার সঠিক কোনো প্রমাণ বা বারণ থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর উপস্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

নোটিশে ৫ জানুয়ারি উল্লেখ থাকলেও এটি আজ রোববার বিএনপি নেতা সৈয়দ রহিম আলীর কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান।

রেজাউল হাসান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণের ভিত্তিতে সৈয়দ রহিম আলীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গত ৫ আগস্ট–পরবর্তী যেসব মামলা হয়েছে, এই মামলাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে দেখা গেছে যে বাদীকে চাপ দিয়ে কিছু দুষ্কৃতকারী ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিল করতে কিছু সাধারণ মানুষকে আসামি করেছে। আরেকটি চক্র আছে, যারা মামলা থেকে বাঁচতে আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার তথ্য রয়েছে। এটা নিয়ে সচেতন মানুষের মধ্যে একটি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই বিষয়গুলো দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরে আমরা প্রাথমিক কিছু তদন্ত করেছি। তদন্তে দলের দু-একজনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। যার কারণে দল থেকে শোকজ করা হয়েছে। এতে সন্তোষজনক জবাব পাওয়া গেলে ভালো, না হলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রেজাউল হাসান আরও বলেন, ‘দু-একজন মানুষের জন্য দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে না। ৫ আগস্ট–পরবর্তী আমাদের দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অবস্থান ও দলীয় অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়।’

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য বিএনপি নেতা সৈয়দ রহিম আলীর ব্যবহৃত মুঠোফোনে আজ কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’

সাপ্তাহিক ‘পঙক্তি’র দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারীর সমান অধিকার, সাংস্কৃতিক জাগরণ ও মুক্তচিন্তার বিকাশ ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ গঠন সম্ভব নয় এমন মত প্রকাশ করেছেন বক্তারা।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাপ্তাহিক পঙক্তির দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের 

‘সাম্য, মর্যাদা ও আলোকিত সমাজের স্বপ্নে ৭১ ও ২৪ এর তরুণরা’

অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, “নারীরা অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও পুরুষতান্ত্রিক নানা বৈষম্য ও হেনস্তার শিকার হন। আমরা দেখছি, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও নারী ও শিশুরা লাঞ্ছিত, নিপীড়িত হচ্ছে, এটি লজ্জার বিষয়। আমরা এমন সমাজ চাই না। আমরা চাই একটি সত্যিকারের বৈষম্যমুক্ত সমাজ, যেখানে নারী–পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত থাকবে।”

প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া বলেন, “আমরা বর্তমানে একটি সাংস্কৃতিকভাবে খারাপ সময় পার করছি। একটি নতুন রাজনৈতিক আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে যে অবক্ষয় দেখা দিয়েছে, তাতে একমাত্র একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লবই আমাদের জাতিকে রক্ষা করতে পারে।”

কবি ও কলামিস্ট সোহরাব হাসান বলেন, “ফেসবুক–ইউটিউবের যুগে একটি সাহিত্য পত্রিকা টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন কাজ। বর্তমানে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এক ধরনের বৈরী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে মাজার, দরগা, শিল্পী ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক তৎপরতা। এই আক্রমণ জাতিসত্তার উপর আক্রমণ, আমাদের শিল্প–সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সুকুমার ভিত্তির উপর আঘাত। এর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে সাপ্তাহিক পঙ্ক্তির সম্পাদক কবি জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না ওরফে পান্না বেগম বলেন, “আজ আমি খুব আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। আমি একজন সফল নারী বলে নিজেকে সম্মান করি। আমি ২৬ বছর ধরে কাজ করি। কারোর মুখাপেক্ষী হইনি। একটি পত্রিকা কারোর সহযোগিতা ছাড়া নিয়মিত প্রকাশ করা এতোটা সহজ নয়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজকের এই জায়গাটি তৈরি হয়েছে।”

বাংলাদেশের আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মফিজুর রহমান বাবু বলেন, “সাপ্তাহিক পঙ্ক্তি পত্রিকাটি নিয়ে প্রথম থেকেই আমার একটি চিন্তা ছিল। পত্রিকাটির নাম পঙ্ক্তি কেন? খুব চিন্তা করে এর দুইটি কারণ খুঁজে পেলাম। একটি হলো-এই পত্রিকাটির সম্পাদক একজন কবি ও সাংবাদিক। উনার কবিসত্তার চিন্তাধারা থেকে এই নামটি নির্ধারণ করেছেন। কারণ পঙ্ক্তি শব্দের অর্থ কবিতার লাইন বা সারি। আর দ্বিতীয়টি হলো- সম্পাদকের একমাত্র কন্যার নাম পঙ্ক্তি। সন্তানের প্রতি একজন মায়ের যে অসাধারণ ভালোবাসা, তারই বহিঃপ্রকাশ হলো সাপ্তাহিক পঙ্ক্তি।”

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক মানিক মুনতাসির, কবি ও সাংবাদিক বজলুর রহমান, কবি মোশাররফ হোসেন ইউসূফ, বাংলানিউজের সাংবাদিক তুলনা আফরিন প্রমুখ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনায় বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল, ভোলা সদরে কার্যক্রম স্থগিত
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলো কেন
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
  • নোবিপ্রবিসাসের বর্ষসেরা সাংবাদিক রাইজিংবিডি ডটকমের শফিউল্লাহ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ১০০ কোটির সম্পদ, স্বামীর প্রতারণা, ৪৭ বছর বয়সেই মারা যান এই নায়িকা
  • তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া
  • শিল্পের আয়নায় অতীতের ছবি
  • সনদ বাস্তবায়নে আবারো কমিশনের সভা আয়োজনের দাবি