এলপি গ্যাসের ভ্যাট বাড়ল নাকি কমল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ৯ জানুয়ারির অধ্যাদেশ ঘেঁটে দেখা যায়, এলপি গ্যাসের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়িয়ে ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ২ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় গ্রাহক পর্যায়ে এলপি গ্যাসের ক্ষেত্রে ভ্যাটের চাপ কিছুটা বাড়ল।

গতকাল সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ উৎপাদন পর্যায়ে এলপি গ্যাসের ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপের আদেশ জারি করেছে। ৯ জানুয়ারি থেকে এই নতুন ভ্যাট কার্যকর হবে। আদেশে বলা হয়, উৎপাদন পর্যায়ে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাটের অতিরিক্ত ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি হলো, ৯ জানুয়ারি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এলপি গ্যাসের উৎপাদন পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি তুলে দিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। ৫ শতাংশ ভ্যাট তুলে দেওয়ার ফলে কম হারের ভ্যাটের তফসিল থেকে এলপি গ্যাসে বের হয়ে গেছে এবং সঙ্গে সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট হারের শ্রেণিতে চলে গেছে।

একই অধ্যাদেশে উৎপাদন পর্যায়ে যেহেতু ভ্যাট হার সাড়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়, সেহেতু এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ আইনি রীতি মানতে গতকাল নতুন আদেশ জারি করে।

এনবিআরের আদেশে বলা হয়েছে, বর্তমানে এলপি গ্যাস বাসাবাড়িতে রান্নার জ্বালানি, অটো গ্যাস স্টেশনে যানবাহনের জ্বালানি ও বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি কর্তৃক গ্যাস সরবরাহকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস অপ্রতুল হওয়ায় পোশাক খাতসহ বিভিন্ন প্রকার শিল্পকারখানায় এলপি গ্যাসের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই গ্যাসের উৎপাদন ও ব্যবহার সহজ করার লক্ষ্যে নতুন ভ্যাট হার নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে এলপি গ্যাসের ভ্যাট তুলে দেওয়া হয়েছে। এত দিন এলপি গ্যাসের স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট হার ২ শতাংশ ছিল। গত ৯ জানুয়ারি এই ভ্যাট তুলে নেওয়া হয়। ফলে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়লেও স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট থাকছে না।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ