কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে হাতুড়ি ও লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের যদুবয়রা পুরাতন বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তির নাম আব্দুল লতিফ লাইফা (৬০)। তিনি যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং চর এতমামপুর গ্রামের মৃত সাদেক আলীর ছেলে। তিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নিজ বাড়ির একটি কক্ষে শুয়ে আছেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল লতিফ লাইফা। তার মাথায় ব্যান্ডেজ বাধা। পাঁয়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষত।

তিনি বলেন, “মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে যদুবয়রা পুরাতন বাজারে চা পান করছিলাম। সেসময় হঠাৎ যদুবয়রা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক শামিম হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রিপন আলীসহ ১৫-২০ জন লাঠিসোটা ও হাতুড়ি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় মাথায় কয়েক যায়গায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হয়েছে। পুনরায় হামলা হতে পারে, সেই ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে পারিনি। থানায়ও লিখিত অভিযোগ করিনি।”

লতিফের ছেলে আশরাফুল বলেন, “আওয়ামী লীগ করার অপরাধে বিএনপির লোকজন বাবাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.

মিজানুর রহমান বলেন, “এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার রাতে কয়েক স্থানে মিছিল করে হামলা চালিয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ নেতা লাইফা এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক রনজু মাস্টার ও মাফিন আহত হয়েছেন। আমি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।” 

তবে হামলা ও মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে যদুবয়রা ইউনিয়ন যুবদলের দলের আহ্বায়ক শামিম হোসেনম বলেন, “মঙ্গলবার রাতে ৫০-৬০ জনের একটি মোটরসাইকেল বহর ছিল। বহর নিয়ে এনায়েত বাজারে পৌঁছে শুনলাম মারামারি হয়েছে। কে বা কারা করেছে তা জানি না।” 

অভিযোগ অস্বীকার করে যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান বলেন, “ঘটনাস্থলে ছিলাম না। কারা মারামারি করেছে তা জানি না।”

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রিপন আলী বলেন, “বাজারে গিয়ে দেখি স্থানীয় লোকজন একজনকে মারধর করছে। কাউকেই চিনি না।”

রাতে যদুবয়রাতে উত্তেজনা ছিল, তবে মারামারির খবর জানা নেই বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য বদল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

আমি রাজনীতি বুঝিও না, করিও না: অপু বিশ্বাস

“আমি একজন অভিনয়শিল্পী, অভিনয় আমার মূল কাজ। অভিনয়ের জন্য আমি অনেক কিছু করেছি। আমি রাজনীতি বুঝি না, করিও না। আমার আইনজীবীরা আইনের বিষয়ে আরো যত্নশীল। তারা এ বিষয়ে কথা বলবেন।”—আদালত থেকে বেরিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলেন অপু বিশ্বাস।  

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এনামুল হক নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর ভাটারা থানার মামলায় আত্মসমর্পণ করে ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে আজ জামিন নেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস।  

রবিবার (১৩ জুলাই) আদালতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন। এসময় তার পরনে লাল বোরকা, মাথায় সাদা হিজাব এবং মুখে কালো মাস্ক দেখা যায়। 

আরো পড়ুন:

আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন অপু বিশ্বাস

গোপনে বিয়ে করলেন অভিনেত্রী রূপালি

রবিবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসে উপস্থিত হন অপু বিশ্বাস। এরপর আদালতে এজলাসের পেছনের সারির বেঞ্চে বসেন। শুনানিকালে এজলাসের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন আপু বিশ্বাস। পরে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান তার জামিন মঞ্জুর করেন। 

গত ১০ জুলাই অপু বিশ্বাস সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে জামিননামা দাখিল করেন। এ তথ্য উল্লেখ করে অপু বিশ্বাসের আইনজীবী আবুল বাশার কামরুল বলেন, “গত ২ জুন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন পান অপু বিশ্বাস। সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় অপু বিশ্বাস স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।” 

রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেলেন অপু বিশ্বাস। মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় একজন ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে। এই মামলায় অপু বিশ্বাস ছাড়াও আরো ১৬ জন শিল্পীর নাম রয়েছে এজাহারে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা সরকারি দলের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। 

একই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার করা হয় চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে। দুইদিনের মাথায় জামিন পান এই অভিনেত্রী।  

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এসময় এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা তিনশ’-চারশ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন এনামুল হক। এই মামলায় ২০৮ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি অপু বিশ্বাস। 

মামলায় অপু বিশ্বাস, আশনা হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ