‘মোটরসাইকেল আমার ছেলেটার জীবন নিল’
Published: 18th, September 2025 GMT
কয়েক মাস আগে একটি কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানে হোম ডেলিভারির কাজ নেন তরুণ প্রিয়ন্ত দাস (২২)। প্রতিষ্ঠানের শর্ত ছিল, এ কাজের জন্য তাঁর একটি মোটরসাইকেল লাগবে। ওই সময় ছেলেকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন বাবা। সেই মোটরসাইকেলে করে এক সহকর্মীর বাড়িতে বেড়ানো শেষে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার রাতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জুড়ী-বটুলি শুল্ক স্টেশন সড়কের দক্ষিণ সাগরনাল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রিয়ন্ত দাস পাশের বড়লেখা উপজেলার পানিসাওয়া গ্রামের প্রদীপ দাসের ছেলে। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা সদরে একটি কুরিয়ার সার্ভিসে কাজ করতেন তিনি
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার প্রিয়ন্তের ছুটি ছিল। এ সুযোগে বন্ধু শোভন দাসকে নিয়ে নিজের মোটরসাইকেলে জুড়ীর ফুলতলা চা-বাগানে এক সহকর্মীর বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে ফেরার সময় রাত আটটার দিকে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে দুই আরোহী আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে প্রিয়ন্ত মারা যান। অবস্থার অবনতি ঘটায় শোভনকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রিয়ন্তর বাবা প্রদীপ দাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেটা (প্রিয়ন্ত) কলেজে লেখাপড়া করত। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার আগে পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে চাকরি খুঁজছিল। আড়াই-তিন মাস আগে বলল, একটা চাকরি মিলেছে, মোটরসাইকেল লাগব। কিনি দিলাম। এই মোটরসাইকেল আমার ছেলেটার জীবন নিল।’
জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) উস্তার মিয়া বলেন, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই প্রিয়ন্তের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির
স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক।
নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন।
নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।
ঢাকা/ইমরান/রফিক