ইউটিউব দেখে শেষ করতে কত দিন লাগবে
Published: 16th, August 2025 GMT
গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান আলফাবেটের ভিডিও প্রকাশ, প্রচার আর সংরক্ষণের সাইট ইউটিউব। ইউটিউব শুধু একটি ভিডিও দেখার ওয়েবসাইট নয়। ইউটিউব এখন এক বিশাল তথ্য ও বিনোদনের ভান্ডার। প্রতিদিন প্রতি মিনিটে এখানে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন ভিডিও। ধারণা করা হয়, বর্তমানে প্রতি মিনিটে ৫০০ ঘণ্টারও বেশি ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়। আপনি যদি এক ঘণ্টা ইউটিউব দেখেন ততক্ষণে ইউটিউবে ৩ দশমিক ৪ বছরের ভিডিও যোগ হয়ে যায়। স্মার্টফোন ও উচ্চগতির ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে সহজেই ভিডিও তৈরি ও প্রকাশ বা আপলোড হচ্ছে বেশি।
যদিও ইউটিউব মোট ভিডিওর সংখ্যা প্রকাশ করে না। বিভিন্ন গবেষণা ও পরিসংখ্যান সংস্থা অনুমান করে, ইউটিউবে শত শত কোটি ভিডিও রয়েছে। ২০২৪ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউটিউবে মোট ভিডিওর সংখ্যা ৫ হাজার কোটিরও বেশি। ইউটিউবে এক দিনে যতগুলো ভিডিও আপলোড হয়, সব দেখে শেষ করতে আপনার ৮২ বছর সময় লাগবে। ২০২৫ সালের এক হিসাবে বলা হয়, প্রতিদিন ইউটিউবে ২৬ লাখ ভিডিও আপলোড হচ্ছে। প্রতি সেকেন্ডে ৬ ঘণ্টার ভিডিও আপলোড হচ্ছে।
রোয়েল ভ্যান ডি পার ইউটিউবে রোয়েল’স টেকনিক্যাল হেল্প নামে পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী এই ইউটিউবার প্রতি ৫ ঘণ্টা অন্তর একটি ভিডিও আপলোড করার জন্য পরিচিত। তার চ্যানেলে সবচেয়ে বেশি ভিডিও রয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৪ লাখের বেশি ভিডিও আপলোড করেছেন রোয়েল। এরপরেই আছে নেম লুক (১৪ লাখ ভিডিও) ও ডাউটনাট (সাড়ে ১২ লাখ ভিডিও)। ইউটিউব উন্মুক্ত মাধ্যম বলে ভিডিওর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। যে কেউ এখানে ভিডিও আপলোড করতে পারে। এর ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কনটেন্টের মধ্যে শিক্ষামূলক ভিডিও, বিনোদন, সংবাদ, গান, গেমিং, ব্লগ ইত্যাদি যোগ হচ্ছে। এর পাশাপাশি ইউটিউব শর্টস ও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মতো নতুন সুবিধাগুলোও কনটেন্টের পরিমাণ আরও দ্রুত বাড়াচ্ছে।
ব্রিটানিকা অনুসারে, ইউটিউব একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও আদান–প্রদানের ওয়েবসাইট। এটি ২০০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের লেনদেন প্রতিষ্ঠান পেপ্যালের তিন সাবেক কর্মচারী স্টিভ চেন, চ্যাড হার্লি ও জাওয়াদ করিম এই কোম্পানি নিবন্ধন করে। সাধারণ মানুষ যেন তাদের হোম ভিডিও শেয়ার করে, তার জন্য ইউটিউব যাত্রা শুরু করে। কোম্পানির সদর দপ্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সান ব্রুনোতে অবস্থিত।
২০০৫ সালের মে মাসে সীমিত সংস্করণে সাইটটি চালু হয়। তখন প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার দর্শক ইউটিউব দেখতেন। ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর ইউটিউব আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার সময় প্রতিদিন ২০ লাখেরও বেশি ভিডিও ভিউ ছিল। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে ভিডিও দেখার সংখ্যা আড়াই কোটি ছাড়িয়ে যায়।
সূত্র: এসইও ডট এআই ও ব্রিটানিকা
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ড ও আপল ড প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
বাষট্টিতে নগরবাউল জেমস
নগরবাউল জেমস। তার পুরো নাম মাহফুজ আনাম জেমস। ভক্তরা তাকে ‘গুরু’ বলেই ডাকেন। জেমস মানেই তারুণ্যের উন্মাদনা। তার নাম অনেক তরুণের স্বপ্নের সূতিকাগার। নিজের মেধা আর মননে হয়ে ওঠেছেন এ প্রজন্মের গুরু। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নন্দিত এই ব্যান্ড সংগীতশিল্পী জেমসের জন্মদিন। ৬১ বছর পূর্ণ করে বাষট্টিতে পা দিতে যাচ্ছেন তিনি। বিশেষ দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছা বার্তায় ভাসছেন জেমস।
১৯৬৪ সালে ২ অক্টোবর নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন জেমস। কিন্তু তার শৈশব কেটেছে চট্টগ্রামে। বাবার চাকরির সূত্রে চট্টগ্রামের সৈকতের বালুচরে কেটেছে তার দুরন্ত শৈশব। জেমসের বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা, যিনি পরবর্তীতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরো পড়ুন:
জুবিনের গাওয়া গান আমাকে বিখ্যাত করেছে: অনন্ত জলিল
পণ্ডিত চন্নুলাল মারা গেছেন
পরিবারের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সংগীতচর্চা শুরু করেন জেমস। একসময় সংগীতের জন্য ঘর ছাড়েন তিনি। পালিয়ে গিয়ে চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিংয়ে উঠেন। সেখান থেকেই তার সংগীতের মূল ক্যারিয়ার শুরু।
১৯৮০ সালে ‘ফিলিংস’ নামে ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন জেমস। এর মাধ্যমে প্রথম তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তীতে এহসান এলাহী ফানটিকে নিয়ে নগর বাউল নামে ব্যান্ড গঠন করেন। বাংলা ভাষায় তিনিই প্রথম সাইকিডেলিক রক শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ড থেকে প্রকাশ করেন প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’। ১৯৮৮ সালে ‘অনন্যা’ নামে একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন জেমস। এ অ্যালবামের গানগুলো দারুণ শ্রোতাপ্রিয় হয়।
বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে জেমসের খ্যাতি ছড়িয়েছে বিশ্বে। ভারতের পশ্চিম বঙ্গে রয়েছে জেমসের অনেক ভক্ত। সেই সূত্রে ২০০৪ সালে বাঙালি সংগীত পরিচালক প্রিতমের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। ২০০৫ সালে বলিউডের ‘গ্যাংস্টার’ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন জেমস। চলচ্চিত্রটিতে তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এক মাসেরও বেশি সময় তা বলিউড টপচার্টের শীর্ষে ছিল।
২০০৬ সালে ‘ওহ লামহে’ চলচ্চিত্রের ‘চল চলে’ গানে কণ্ঠ দেন জেমস। ২০০৭ সালে ‘লাইফ ইন এ মেট্টো’ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন। এতে ‘রিশতে’ ও ‘আলবিদা’ গানে কণ্ঠ দেন তিনি। সর্বশেষ হিন্দি চলচ্চিত্রে ‘ওয়ার্নিং’-এ প্লেব্যাক করেন জেমস। ‘বেবাসি’ শিরোনামের গানটি ২০১৩ সালে মুক্তি পায়।
জেমসের গাওয়া উল্লেখযোগ্য গান হলো—‘বাংলাদেশ’, ‘জেল থেকে আমি বলছি, মা’, ‘দুখিনী দুঃখ করো না’, ‘লেইস ফিতা লেইস’, ‘বাবা কত দিন’, ‘বিজলী’, ‘দুষ্টু ছেলের দল’, ‘মিরাবাঈ’, ‘পাগলা হাওয়া’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া’ প্রভৃতি।
নগর বাউল থেকে প্রকাশিত অ্যালবামগুলো হলো—‘স্টেশন রোড’ (১৯৮৭), ‘জেল থেকে বলছি’ (১৯৯৩), ‘নগর বাউল’ (১৯৯৬), ‘লেইস ফিতা লেইস’ (১৯৯৮), ‘দুষ্ট ছেলের দল’ (২০০১)। জেমসের একক অ্যালবামগুলো হলো— ‘অনন্যা’ (১৯৮৯), ‘পালাবে কোথায়’ (১৯৯৫), ‘দুঃখিনি দুঃখ করোনা’ (১৯৯৭), ‘ঠিক আছে বন্ধু’ (১৯৯৯), ‘আমি তোমাদেরই লোক’ (২০০৩), ‘জনতা এক্সপ্রেস’ (২০০৫), ‘তুফান’ (২০০৭), ‘কাল যমুনা’ (২০০৮)।
ঢাকা/শান্ত