মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা: নাহিদের জবানবন্দি পেশ
Published: 18th, September 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি পেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দি পেশ শেষ করেন নাহিদ। তিনি গতকাল জবানবন্দি পেশ শুরু করেন।
আরো পড়ুন:
মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন নাহিদ ইসলাম
মালয়েশিয়া যাচ্ছেন নাহিদ ইসলাম
আজ বিকেলে তাকে জেরা করবেন এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
এ মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে এ মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীকালে এ মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।খবর বাসসের।
এ মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরো দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প দ ল ল হ আল ম ম ন স ব ক আইজ প ম নবত ব র ধ প রস ক ইসল ম অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৫ বছর আগে উচ্চ আদালতের দেওয়া ৯ দফা নির্দেশনা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্দেশনা প্রতিপালনের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিটের ধারাবাহিকতায় আবেদনকারীপক্ষের করা সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি উর্মি রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন রেখেছেন আদালত।
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে পরদিন ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আাদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দেন।
সম্প্রতি ঢাকার বায়ুদূষণের বিষয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ২৮ অক্টোবর এইচআরপিবি সম্পূরক ওই আবেদন করে। আবেদনে ‘ঢাকার বাতাসে আরেক ক্ষতিকর ধূলিকণা’ শিরোনামে ২৭ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ, উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী মো. শাহজাহান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী খসরুজ্জামান এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরশিদ আক্তার।
আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করায় গত বছর ঢাকায় বায়ুর মান উন্নত হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিবাদীপক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বর্তমানে ঢাকার বায়ু দূষিত হয়েছে। ফলে বায়ুর মধ্যে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের রিপোর্টের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং ঢাকায় বসবাসরত মানুষের জীবনরক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন। শুনানি নিয়ে আদালত ওই আদেশ দেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।
হাইকোর্টের ৯ দফার মধ্যে ঢাকা শহরে মাটি/বালু/বর্জ্য পরিবহন করা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা; নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালু/সিমেন্ট/পাথর/নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা; সিটি করপোরেশনভুক্ত রাস্তায় পানি ছিটানো; রাস্তা/কালভার্ট/কার্পেটিং/খোঁড়াখুঁড়ির কাজে দরপত্রের শর্ত পালন নিশ্চিত করা; সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচলের সময়সীমা নির্ধারণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা; পরিবেশগত সনদ ছাড়া চলমান টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা; মার্কেট/দোকানের প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখা এবং বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিত করার বিষয়গুলো রয়েছে।
‘ঢাকার বাতাসে আরেক ক্ষতিকর ধূলিকণা’ শিরোনামে ২৭ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন বলা হয়, শ্বাসতন্ত্র ও ফুসফুসের সংক্রমণের জন্য দায়ী রেসপিরেবল সিলিকা (আরএস) বা একটি অতি ক্ষুদ্র ধূলিকণার মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে রাজধানীর বাতাসে। শুষ্ক মৌসুমে বা নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এ ক্ষতিকর উপাদান বেশি পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণের বেশি এর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।