বাজারে চালের দাম কমছে। তাই রাজশাহী বিভাগে আমন সংগ্রহ অভিযানের শতভাগ লক্ষ্য অর্জনের আশা করছে খাদ্য বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এমন আশা ব্যক্ত করেছেন রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন।

আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে এ মতবিনিময়সভা হয়। সভায় জানানো হয়, রাজশাহী বিভাগে আমন সংগ্রহ ২০২৪-২০২৫ মৌসুমে সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন। আর আতপ চালের লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন।

রাজশাহী বিভাগে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত ৫৫ হাজার ৩৩৭ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ৯ হাজার ৭৬৯ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার ৬১ শতাংশ সিদ্ধ চাল ও ৭৫ শতাংশ আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে। বাজারে চালের দাম কমার কারণে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ চাল সংগ্রহ হবে।

আরো পড়ুন:

চাল ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা 

ভারত থেকে আসছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল

সভায় জানানো হয়, গত ৯ জানুয়ারি রাজশাহী অঞ্চলের বাজারে মোটা চালের বাজার দর ছিল প্রতি কেজি ৪৯ টাকা ৫২ টাকা পয়সা। এ সপ্তাহে মোটা চালের বাজার দর প্রতি কেজি ৪৮ টাকা ৫২ পয়সা। মহানগর, জেলা ও শ্রমঘন এলাকার পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে খোলাবাজারে (ওএমএস) কার্যক্রমের মাধ্যমে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে চাল বিক্রয় কার্যক্রম চলছে। এর ফলে বাজারে চাল ও আটার মূল্যের উপর প্রভাব পড়েছে এবং চাল ও আটার মূল্য হ্রাস পাচ্ছে। বাজারে দাম কমার কারণে খাদ্য বিভাগের সংগ্রহ অভিযান সফল হবে।

আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন বলেন, সরকারিভাগে ৪ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করবে সরকার। এর মধ্যে ভারত থেকে আনা ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই খালাস সম্পন্ন হবে। আমদানির ফলে দেশে খাদ্যশস্যের মজুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ট র ক টন

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ