ঘর পোড়ানোর মামলায় রিডা হাসপাতালের পরিচালকসহ ৩ জন কারাগারে
Published: 17th, January 2025 GMT
লুটপাটের পর পেট্রোল ঢেলে বসতঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় রিডা প্রাইভেট হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ (৩৫) তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। এ ঘটনায় জড়িত বাকি ১২ জনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সাতক্ষীরার দ্রুত বিচার আদালত এ আদেশ দেন।
গত ৬ আগস্ট বাড়িতে লুটপাটসহ আগুন দেওয়ার ঘটনায় শ্যামনগর উপজেলার কাঁচড়াহাটি নন্দিগ্রামের গ্রামের সামছুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
কারাগারে যাওয়া অপর দুই আসামি হলেন, আছাদুল্লাহ আছাদ আছু (২৪) ও ফয়সাল আমিন খান (৪০)। আব্দুল্লাহ ও আছাদুল্লাহ শ্যামনগর উপজেলা সদরের নকিপুর মাজাট ও ফয়সাল গোমানতলী গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, জমিজমা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিল। এক পর্যায়ে ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই নেতার ইন্ধনে আব্দুল্লাহ লোকজন নিয়ে সামছুর রহমানের কাঁচড়াহাটি নন্দিগ্রামের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় ব্যাপক লুটপাটের পর পেট্রোল ঢেলে ওই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতকারীরা। পরে খবর পেয়ে ১০ আগস্ট সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনরায় তাদের বসতঘরে উঠিয়ে দেয়।
সামছুর রহমান জানান, বিজ্ঞ আদালত পিবিআইকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার পর সংস্থাটি ১৫ জনের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে সম্প্রতি চার্জশিট দিয়েছে।
সামছুর রহমানের ছোট ভাই আমজাদ মাঝির অভিযোগ, বৃহস্পতিবার আদালত অন্যদের জামিন মঞ্জুর করলেও তিনজনের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধে বড় ফাটল, ঝুঁকিতে ১৫ গ্রামের মানুষ
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে বাঁধ সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সিংহড়তলী ও চুনকুড়ি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের হাজারো মানুষ।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করে ফাটল ধরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ ঘটনায় চুনকুড়ি নদী তীরবর্তী এলাকার গ্রামবাসীর মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দ্রুত তারা ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে হরিনগর বাজারের কাছে সিংহরতলী গ্রামের চুলকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধের ৩০-৩৫ মিটার এলাকাজুড়ে বড় ফাটল দেখা দেয়। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বেড়িবাঁধের ফাটল পয়েন্টে আধুনিক মানের জিও টিউব দিয়ে বাঁধের ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করেন।
কিন্তু এ ঘটনার একদিন পরেই গতকাল দুপুরের জোয়ারের সময় নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দেওয়া বাঁধের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুত এই ভাঙনপয়েন্ট সংস্কার করতে না পারলে নদীর প্রবল স্রোতে সম্পূর্ণ বাঁধ ভেঙে মুন্সিগঞ্জ ও হরিনগর ইউনিয়নসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়তে পারে। ক্ষতি হতে পারে বসতবাড়ি, চিংড়িঘের, মিঠা পানির পুকুর, ফসলি জমি, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব হোসেন বলেন, বাঁধের ফাটলের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে এখনো জোয়ার বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্রোতের টানে বাঁধের বাকি অংশ যদি ভেঙে যায়; তাহলে শ্যামনগর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পরবে।
তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড চেষ্টা করছে বাঁধটি সংস্কার করার জন্য। কিন্তু জানি না কয়দিন লাগবে। বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এদিকে উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধে ফাটলের খবর শুনে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার (এসও) প্রিন্স রেজাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সিংহড়তলী এলাকার ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন।
সাতক্ষীরা পাউবো-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দীন সানি বলেন, চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে গত শনিবার ৩০-৩৫ মিটার জায়গাজুড়ে ফাটল শুরু হয়। এরপর থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। হঠাৎ করে গতকাল রোববার সকালে বাঁধের একাংশ ভেঙে নদীতে দেবে যায়। ফলে ৩০ মিটার এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যাতে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে না পারে সেজন্য জিও টিউব দিয়ে ৫০/৬০ মিটার বিকল্প রিং বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই কাজ শেষ হবে। এছাড়াও শ্যামনগরের কয়েকটি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে, সেগুলোর কাজও শুরু করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর বাজারের কাছে সিংহরতলী গ্রামে চুনকুড়ি নদীর উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়।