বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক ইতিবাচক দিকে নিয়ে যেতে চায় ভারত
Published: 17th, January 2025 GMT
ভারত বাংলাদেশের সাথে তার সম্পর্ক ‘ইতিবাচক দিকে’ এগিয়ে নিতে চায় এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের জন্য যেন ভালো হয়। ঢাকার সাথে নয়াদিল্লির দৃষ্টিভঙ্গি ‘ইতিবাচক।’ শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধির জয়সওয়াল শুক্রবার সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করার বিষয়ে কথা বলেছেন এবং বাংলাদেশের সাথে অপরাধমুক্ত সীমান্ত নিশ্চিত করতে ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
জয়সওয়াল বলেছেন, “ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান বেশ কয়েকবার স্পষ্ট করা হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র সচিবের সফরে আমরা বলেছিলাম যে আমরা ইতিবাচক চাই। আমরা ইতিবাচক দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সাথে ফেডারেল সম্পর্ক চাই।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণ ও ভারতের জনগণের জন্য ভালো হোক। তাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এটাই, একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং এটাই রয়ে গেছে।”
সীমান্ত বেড়া নির্মাণের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখপাত্র জানান, নয়াদিল্লি আশা করে যে, ঢাকা এই বিষয়ে পূর্ববর্তী সমস্ত বোঝাপড়া অপরাধ মোকাবেলায় সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট করে দিয়েছি। আমরা ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে সীমান্ত বেড়া দেওয়ার বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট করে জানিয়েছি এবং আমি আমাদের বাংলাদেশি প্রতিপক্ষের কাছে আমাদের কিছু বিষয় পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। সীমান্ত সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে আন্তঃসীমান্ত অপরাধমূলক কার্যকলাপ, চোরাচালান ও পাচার, কাঁটাতারের বেড়া, সীমান্তে আলোকসজ্জা, প্রযুক্তিগত ডিভাইস স্থাপন এবং গবাদি পশুর বেড়া নির্মাণের মতো ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে একটি অপরাধমুক্ত সীমান্ত তৈরি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।”
জয়সওয়াল বলেন, “আমরা আশা করি যে পূর্ববর্তী সববোঝাপড়া, এখানে আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, এই বিষয়ে আমাদের বোঝাপড়া বাংলাদেশ এই ধরনের অপরাধ মোকাবেলায় সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করবে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জনগণ অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।
আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন।
ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।
এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।