বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, “দেশের সামগ্রিক উন্নতির জন্য শিক্ষাখাতে বাজেট বাড়ানো অপরিহার্য। যেখানে জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়ার কথা, সেখানে ২ শতাংশও দেওয়া হয় না। শিক্ষকরা সামান্য চাহিদা জানালেও তা পূরণে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে।”

রবিবার (১৯ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনে মার্কেটিং বিভাগের কনফারেন্স রুমে শাখা ছাত্রশিবিরের আয়োজিত ‘অদম্য মেধাবী সংবর্ধনা–২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ছুরিকাঘাতে জবি শাখা ছাত্রদল নেতা নিহত

জুলাই আন্দোলনের অগ্রনায়ক ছিল জবি ছাত্রদল

সাদ্দাম বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল শিক্ষা কার্যক্রম বাড়ানো। দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির কারণে, এ ব্যাপারে কারো নজর নেই। বিগত সময়ে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। যা দিয়ে ৮ বছরের বাজেট করা সম্ভব। এ দেশের ট্যাক্সদাতাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ ট্যাক্স দেয় না। যারা দেয় সেখানেও শুভংকরের ফাঁকি। এগুলো বন্ধ করতে পারলেই দক্ষ জনশক্তি তৈরি সম্ভব হবে।”

তিনি বলেন, “শুধু চেতনার কথা বলে কিংবা বিভাজনের রাজনীতি করে দেশকে ভালোবাসা যায় না। বাংলাদেশের সমসাময়িক স্বাধীন হওয়া অনেক দেশ এখন ইকোনমিক হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদেরও দক্ষতাভিত্তিক মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।”

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, “আমরা সাধারণত যার কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশা করি, তাকেই নিয়ে ব্যস্ত থাকি। কিন্তু যাদের কাছ থেকে কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা নেই, তাদের দিকে কেউ তাকায় না। ছাত্রশিবির যেন তাদের নিয়েই প্রতি বছর এই আয়োজন করে, এটি একটি ভালো উদ্যোগ।”

অনুষ্ঠানে মোট ৩৫ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রত্যেককে ৩ হাজার টাকা নগদ অর্থ, একটি সিরাতের বই ও উপহারসামগ্রী প্রদান করা হয়।

জবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাহেদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. তোহিদ হোসাইন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাবরি মসজিদ নির্মাণের ডাক দেওয়ায় সাসপেন্ড তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা

ভারতে আবারো বাবরি মসজিদ নির্মাণের ডাক দেওয়া হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতার দলের সিনিয়র এই নেতা ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়ককে মূলত দলবিরোধী কাজের জন্যই সাসপেন্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। 

তিনি বলেন, “হুমায়ুনের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক রাখবে না দল।”

সম্প্রতি বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের ঘোষণা এবং এই ইস্যুতে দলের মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে নিশানা করে সবচেয়ে বড় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কবীর। সেই সাথে নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যেই কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন কবীর। যদিও বাবরি মসজিদ পুনঃনির্মাণের ব্যাপারে অটল থাকেন তিনি। 

কয়েক দিন আগেই বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের সামনে কবীর জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করা হবে। মসজিদটি সম্পূর্ণ হতে তিন বছর সময় লাগবে। শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রায় দুই লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন এবং মঞ্চে ৪০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন। অবশ্য ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজ্য বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই প্রথমবারের জন্য বাবরি মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হুমায়ূন কবীর। 

এবারই প্রথম নয় বিভিন্ন সময়ে নিজের দলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল এই বিধায়কের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে সতর্কও করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন থেকে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বাবরি মসজিদ করার কথা বলে বাবরি ধ্বংসের স্মৃতি উসকে দিতে চাইছেন কবীর। আমরা মনে করি এর পিছনে বিজেপি রয়েছে। ওরা হুমায়ুনকে সামনে রেখে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি করছে।”

ফিরহাদ আরো বলেন, “কেউ কোথাও নিজের অর্থে মসজিদ করলে করতেই পারেন। কিন্তু দলের বিধায়ক সংহতি দিবসের (৬ ডিসেম্বর) তারিখটাকেই বেছে নিলেন শিলান্যাসের জন্য? কেন?” ফিরহাদের দাবি, হুমায়ুন বাংলায় দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে।

যদিও দলের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে নারাজ হুমায়ুন। সাসপেন্ডের সিদ্ধান্তের কথা জানামাত্রই আগামী ২২ ডিসেম্বরই নতুন দল ঘোষণা দেন কবীর। 

যদিও হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণার পরেই দেশ জড়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। এমনকি ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সিনিয়র বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “আমরা উপরওয়ালা বা ইসলামের নামে নির্মিত মসজিদগুলোকে সম্মান করব, কিন্তু বাবরের নামে কোনো মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা হলে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মতো পরিণতি হবে।” 

মমতা ব্যানার্জীকে পরামর্শ দিয়ে উমা ভারতী বলেন, “যারা বাবরের নামে মসজিদ তৈরির কথা বলেন তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” 

ঢাকা/সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ