ব্যাংক ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ হবে নতুন নিয়মে
Published: 25th, January 2025 GMT
নতুন নিয়মে হবে দেশের ব্যাংকগুলোর ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ। এই নিয়মে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড-৯ (আইএফআরএস-৯) পদ্ধতি অনুসরণ করবে দেশের ব্যাংকগুলো। আইএফআরএস-৯ পদ্ধতি অনুসরণ করে ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের ব্যাংকগুলো ঋণের ক্ষতির কমিয়ে আনতে নতুন নিয়মে প্রভিশনিং সংরক্ষণ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা বাড়াতে আইএফআরএস-৯ পদ্ধতি অনুসারে ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখার নতুন নিয়মে হিসাব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া ব্যাংকগুলো অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা এবং হিসাবমান পর্যালোচনা করে প্রাতিষ্ঠানিক স্তরে নিজেদের তৈরি করবে। এ জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতাও বাড়াবে। এ ছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠন করতে হবে ‘আইএফআরএস-৯ বাস্তবায়ন কমিটি’। এই কমিটি ঋণের ক্ষতির মডেলগুলোর ব্যবস্থাপনা, পর্যালোচনার তত্ত্বাবধান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ, রিপোর্টিংয়ের কাজ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রভিশনিং সম্পর্কে আইএফআরএস-৯ অনুযায়ী করার যে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে তা ব্যাংকগুলো আগামী মার্চের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদে তুলবে। সক্ষমতা গড়ে তুলতে নিজেরা প্রস্তুতি নেবে। তারপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক গাইডলাইন দেবে। পর্যায়ক্রমে আইএফআরএস-৯ বাস্তবায়ন হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার অনুসারে, আগামী এপ্রিল থেকে ঋণ স্ট্যান্ডার্ড হলে ব্যাংক বকেয়া ঋণের উপর ১ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে। স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্টের ঋণ শ্রেণিকৃত হলে বকেয়া ঋণের উপর ৫ শতাংশ, ঋণ সাব স্ট্যান্ডার্ড হলে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক হিসেবে শ্রেণিকৃত হলে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা লোকসানি ঋণ হিসেবে শ্রেণিকরণ হলে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে।
অপরদিকে, আগামী এপ্রিল থেকে সব ধরনের ঋণ তিন মাস বকেয়া থাকার পর খেলাপি হবে। আগে এ সময় ছিল ছয় মাস। এছাড়া সব ধরনের ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে হলে নিম্নমান, ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে সন্দেহজনক ও ১২ মাস বা এর অধিক হলে মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকরণ হবে।
ঢাকা/এনএফ/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।