অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “ আপনার সংস্কার করবেন করুন, তবে এমনভাবে সংস্কার করুন যাতে আর কোনো দিন ফ্যাসিবাদের উত্থান না হয়। তা না হলে নানাভাবে তারা মাথা চাড়া দেবে।” 

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের একযুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, “চালের দামও আপনাকে (অন্তর্বর্তী সরকার) কমাতে হবে। আপনি জুলাই ঘোষণার কথা বলবেন, আপনি অনেক সংস্কারেে কথা বলেবেন, কিন্তু মানুষের পেটে ক্ষুধা থাকবে, তখন তারা ওই ঘোষণার কিছুই শুনবে না। আপনাকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। অপরাধীদেরকে ধরতে হবে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সমাজের মধ্যে শৃঙ্খলা আনতে হবে। মানুষ যাতে কমপক্ষে মোটা চাল ও মোট কাপড় পড়ে জীবন ধারণ করতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। এটাই জিয়াউর রহমান নিশ্চিত করেছিলেন, এটাই তার শ্রেষ্ঠ অর্জন ছিল।”   

আরো পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক পলাতক ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দিতে পারে: এ্যানি

তরুণদের রাজনৈতিক দলকে স্বাগত: তারেক রহমান 

রিজভী বলেন, ‘দেশে কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। আওয়ামী লীগের ১৭ বছর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে। নৈতিকতার শিক্ষা তো মানুষকে নৈতিকভাবে উন্নত করে, মানুষের চরিত্রকে শক্তিশালী করে। শেখ হাসিনা এটিকে ধসিয়ে দিয়েছেন। শুধু প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েঠে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রতিযোগিতা চলেছিল। কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না, শুধু বাপজানের নাম, ভাই-বোনের নাম ছাড়া আর যেন কোনো ইতিহাস নেই, কোনো শিক্ষা নেই। এইভাবে জোর করে দুঃশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শেখ হাসিনা।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “যে যন্ত্রপাতি দিয়ে শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদি তৈরি করেছে, সেই যন্ত্রপাতি অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সংস্কার করতে হবে।  নুতন করে ঢেলে সাজাতে হবে পুলিশকে। তাহলেই হবে সবচেয়ে বড় সংস্কার। বিচার বিভাগকে সত্যিকারের স্বাধীনতা দিতে হবে। একজন মানুষ যদি নির্যাতিত হয়, তাহলে আদালতে গিয়ে যেন ন্যায় বিচার পান সে নিশ্চয়তা দিতে হবে।”

মানিকগঞ্জ জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি ডা.

মো. জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রুফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রফেসর রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর গোলাম হাফিজ কেনেডি উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/চন্দন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ স স ক র কর ব এনপ র স ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা থেকে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ওই এলাকায় বিজিবির দুটি টহল দল দায়িত্বরত ছিল। তখন সীমান্তে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফও গুলি করেনি বলে জানিয়েছে। এমনকি পরিবার থেকে প্রথম দিকে তাঁদের জানানো হয়, তিনি হৃদ্‌রোগে মারা গেছেন। তবে তিনি যে আহত হয়েছেন, সেটা সীমান্ত এলাকায় হয়েছেন নাকি বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ