স্ত্রীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার উপকারিতা
Published: 16th, August 2025 GMT
স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ উন্নত করার প্রথম টিপস হলো, তিনি কী বলছেন তা শুনতে শেখা। তিনি যে চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি প্রকাশ করছেন তার প্রতি মনোযোগ দেওয়া, তার কথা এবং তার শারীরিক ভাষা উভয়ই বোঝার চেষ্টা করা। কারণ মনোযোগ দিয়ে কথা শোনার অভ্যাস শুধুমাত্র আপনার স্ত্রীর সাথে সংযোগ উন্নত করতে সাহায্য করবে না বরং আপনার চারপাশের অন্যদের প্রতি আরও কীভাবে সহমর্মী ও ধৈর্যশীল হতে হয়, তা শিখতেও সাহায্য করবে।
সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে পাবেন
অনেক সময় কথা বলতে বলতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়ে যায়। এমন কয়েকটি শব্দ বেছে নিন যা কঠিন মুহূর্তে বিরতি নিয়ে সহায়তা দেবে। যেমন একটু পরে কথা বলি, ঠান্ডা হও ইত্যাদি। সচেতনভাবে কথার মাঝে অন্য কথা নিয়ে আসুন। যাতে আলোচনা ঘুরে যায়। স্ত্রী যদি চিৎকার করে বা কঠিন কথা বলতে শুরু করে তাহলে সে কথা বলা থামানো না পর্যন্ত আপনি চুপ থাকুন, বিরতি নিন। এই অভ্যাস আপনার অভিসে মানিয়ে নিতেও সহায়তা দেবে।
সম্পর্কে থাকা মানে সীমানাহীন হওয়া নয়
স্ত্রীকে আপনি যা বলতে চান, তা আপনার বক্তব্যের প্রথমভাগে রাখুন। তবে একবার ভেবে নেবেন ওই কথা দুইজনের আলোচনা এগিয়ে নেবে নাকি আঘাত করবে। আঘাত করার আশঙ্কা থাকলে আলোচনার শেষ দিকে আপনার মূল বক্তব্য বলুন। ধরা যাক, তিনি কঠিন কোনো কথা আপনাকে শুনিয়েছেন, সন্দেহ প্রকাশ করেছেন—তাকে প্রশ্ন করুন সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখার জন্য যা মনে আসে তাই বলা কতটা বিপদজনক হতে পারে?
আরো পড়ুন:
১০ বছরের ছেলেকে বিমানবন্দরে রেখেই বেড়াতে যাচ্ছিলেন বাবা-মা, এরপর
রেগে জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করলেন স্বামী
আপনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খণ্ডানোর উপায় খুঁজে পাবেন
ধরা যাক আপনার স্ত্রী আপনাকে কোনো অভিযোগ দিয়েছে। আপনি সময় নিন, কিছুক্ষণ ভাবুন। এরপর আপনি আসলেই দোষী কিনা বুঝবেন। যদি দোষ না থাকে তাহলে আপনার যুক্তি উপস্থাপনের আগে বলুন যে, ‘তুমি যা বুঝেছো তা হলো…’। এবার তাকে বলতে দিন। সে তার ভুল বুঝতে পারলে সহমর্মীতা দেখান। আপনার ভুল থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিন।
অন্যকে বুঝতে পারবেন
যে কাউকে ঠিকঠাক বোঝার উপায় হলো তার জায়গায় নিজেকে, নিজের অবস্থানকে ভাবা। দুইজনের সম্পর্কে কখন জটিলতা তৈরি হচ্ছে, কখন স্বাভাবিক থাকছে এগুলো বুঝুন। এতে যোগাযোগ সহজ হবে।
যত্নশীল হতে পারবেন
স্ত্রীর ভালোলাগা মন্দলাগাগুলো বুঝে ওঠার চেষ্টা করুন। তার ভালোলাগা বিষয়গুলোর যত্ন নিন। এতে দেখবেন দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে,অন্যদের সঙ্গেও সহজে মানিয়ে নিতে পারছেন।
সূত্র: দ্যা ম্যারেজ অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘তোকে গুলি করে মারব না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারব’
প্রকাশ্যে গুলি করে চট্টগ্রামে একের পর এক খুনের ঘটনায় উঠে আসছে তাঁর নাম। হত্যা মামলায় তাঁকে আসামিও করেছে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার। পুলিশ তাঁকে হন্য হয়ে খুঁজলেও থেমে নেই তাঁর অপরাধ। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘সন্ত্রাসী’ মোহাম্মদ রায়হানের বিরুদ্ধে। ওই ব্যবসায়ীকে রায়হান বলেন, ‘তোকে গুলি করে মারব না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারব।’
হুমকি পাওয়া ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. একরাম। তিনি পাথরের ব্যবসা করেন। আজ সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁকে ফোন করেন সন্ত্রাসী রায়হান। পরে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো খুদে বার্তায় তাঁকে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারার হুমকি দেন।
কেন হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চাইলে ব্যবসায়ী একরাম বলেন, গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মলে ঘুরতে দেখে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তিনি। এরপর সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না এবং বিদেশে পলাতক সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদ তাঁকে হুমকি দেন। ওই হুমকির ঘটনায় তিনি পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছিলেন। এরপর মামলা তুলে নিতে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে হুমকির বিষয়ে থানায় মামলা কিংবা জিডি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ব্যবসায়ী একরাম।
নগর ও জেলার বেশ কয়েকটি হত্যা মামলায় সন্ত্রাসী রায়হানের নাম উঠে এসেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। —আমিনুর রশিদ, সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম), চট্টগ্রাম নগর পুলিশ।একরামের স্ত্রী রুমা আক্তার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হুমকির পর রাতে বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে বলার সঙ্গে সঙ্গে সোয়াত টিমসহ পুলিশের দল বাসার সামনে পাহারায় রয়েছে। ভয়ে আমার স্বামী এখন বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। বের হলে সঙ্গে পুলিশ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুনরাউজানে যুবদলকর্মী আলম খুনেও আলোচনায় ‘সন্ত্রাসী’ রায়হানের নাম২৬ অক্টোবর ২০২৫বেপরোয়া ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। ছোট সাজ্জাদ ১৫ মার্চ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর বাহিনীর দেখভাল করছেন রায়হান।
পুলিশ জানায়, হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় কারাগারে গিয়ে চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে পরিচয় হয় রায়হানের। গত বছরের ৫ আগস্টের পর দুজন কারাগার থেকে জামিনে বের হন। এরপর ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রায়হান। সাজ্জাদ সম্প্রতি আবারও কারাগারে গেলে রায়হান তাঁর অস্ত্রভান্ডারের দেখভাল করছেন।জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর আগেও হুমকির বিষয়ে মামলা করেছিলেন ওই ব্যবসায়ী।’
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশিদ বলেন, নগর ও জেলার বেশ কয়েকটি হত্যা মামলায় সন্ত্রাসী রায়হানের নাম উঠে এসেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।
আরও পড়ুন‘আমি রায়হান, মাথার খুলি উড়ায় ফেলব’০৮ আগস্ট ২০২৫একের পর এক খুনে রায়হানের নামচট্টগ্রামে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী জনসংযোগে অংশ নেওয়া ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে (৪৩) গুলি করে হত্যা করা হয় ৫ নভেম্বর। এর তিন দিন আগে সরোয়ারকে ফোন করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে রায়হানের বিরুদ্ধে। নিহত সরোয়ারের বাবা জানান, রায়হান সরোয়ারকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে।’
এর আগে গত ২৫ অক্টোবর মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতলে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে। এই হত্যা মামলায় রায়হানকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, রাজনৈতিক এই হত্যাকাণ্ডে রায়হান ভাড়াটে হিসেবে কাজ করেছেন। জীবিত অবস্থায় মুঠোফোনে আলমগীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে আলমগীরকেও রায়হানের নাম উল্লেখ করে শঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—তিন দিন আগে হুমকি পেয়েছিলেন সরোয়ার০৬ নভেম্বর ২০২৫পুলিশ জানায়, হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় কারাগারে গিয়ে চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে পরিচয় হয় রায়হানের। গত বছরের ৫ আগস্টের পর দুজন কারাগার থেকে জামিনে বের হন। এরপর ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রায়হান। সাজ্জাদ সম্প্রতি আবারও কারাগারে গেলে রায়হান তাঁর অস্ত্রভান্ডারের দেখভাল করছেন।
গত ২৫ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট এলাকার এক ওষুধের দোকানিকেও মুঠোফোনে হুমকি দেন রায়হান। তিনি ওই দোকানিকে বলেন, ‘আমি ঢাকাইয়া আকবর খুনের মামলার ২ নম্বর আসামি রায়হান, মাথার খুলি উড়ায় ফেলব। ...আকবর সি বিচে কীভাবে পড়ে ছিল তুই দেখছস? তুইও পড়ে থাকবি।’
চাঁদা না পেয়ে গত ১ আগস্ট চান্দগাঁও থানার মোহরা এলাকার এক ব্যবসায়ীকেও গুলি করার অভিযোগ ওঠে রায়হানের বিরুদ্ধে। মো. ইউনুস নামের ওই ব্যবসায়ী নদী থেকে বালু তোলার কাজে ব্যবহৃত খননযন্ত্রের ব্যবসা করেন। পুলিশ জানায়, রায়হানের নামে গত বছরের ৫ আগস্টের পর চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় জোড়া খুনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি হত্যা মামলা।