কালীগঞ্জে টিআর ও কাবিটার ১১ প্রকল্পের বরাদ্দ ফেরত
Published: 16th, August 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দ দেওয়া হলেও যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন না করায় ফেরত যাচ্ছে ১১টি প্রকল্পের মোট ১৪ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা।
এরইমধ্যে সরকারি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ১০ লাখ ৮২ হাজার টাকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি অর্থ ফেরতের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতি ও সেক্রেটারিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, টিআর কর্মসূচির ১ম ও ২য় পর্যায়ে বক্তারপুর ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ৬২ হাজার ৫০০ টাকা এবং নাগরী ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে দুই লাখ টাকা ফেরত এসেছে। এ দুই প্রকল্প থেকে মোট ফেরত এসেছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা।
টিআর কর্মসূচির ৩য় পর্যায়ে মোক্তারপুর ইউনিয়নের দুটি প্রকল্প থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ৬০ হাজার টাকা এবং নাগরী ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ফেরত আনা হয়েছে। যার মোট পরিমাণ ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
এছাড়া, কালীগঞ্জ পৌরসভার একটি প্রকল্প থেকে টিআর ১ম ও ২য় পর্যায়ে ফেরত এসেছে ৬০ হাজার টাকা। ৩য় পর্যায়ে পৌরসভার দুটি প্রকল্প থেকে ফেরত এসেছে আরও ২ লাখ টাকা। পৌরসভার এই তিন প্রকল্প থেকে মোট ফেরত এসেছে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
সব মিলিয়ে টিআর কর্মসূচির ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ের ৯টি প্রকল্প থেকে সর্বমোট ফেরত এসেছে ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা।
অন্যদিকে, কাবিটা কর্মসূচির আওতায় ১ম ও ২য় পর্যায়ে জাংগালিয়া ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ফেরত এসেছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একই ইউনিয়নের আরেকটি প্রকল্প থেকে ৩য় পর্যায়ে ফেরত এসেছে আরও ২ লাখ টাকা। ফলে কাবিটা কর্মসূচির দুই প্রকল্প থেকে মোট ফেরত এসেছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো.
তিনি বলেন, “টিআর ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দ পাওয়া সব প্রকল্প পরিদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি প্রকল্পের ছয়টিতে আংশিক কাজ সম্পন্ন হলেও বাকি পাঁচটিতে নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হয়নি। যারা প্রথম দফায় অগ্রিম চেক নিয়েও কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি, তাদেরকে দ্বিতীয় দফায় আর কোনো চেক দেওয়া হয়নি। এ কারণে ওই প্রকল্পগুলোর ১০ লাখ ৮২ হাজার টাকা সরকারি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবশিষ্ট ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা ফেরতের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতি ও সেক্রেটারিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই অর্থ ফেরত পাওয়া গেলে তাও সরকারি ট্রেজারিতে জমা দেওয়া হবে।”
ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, “গত অর্থবছরে কালীগঞ্জে টিআর ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় নানা অনিয়ম, সময়মতো কাজ শুরু ও শেষ না করা ইত্যাদি কারণে অনেককে ২য় দফায় চেক দেওয়া হয়নি। আবার কারো কারো চেক ইস্যু হলেও পরে সেই টাকা ফেরত আনার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। চেক দেওয়া অর্থ সরকারি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে পাঠানো হয়েছে এবং চেক ইস্যু করা টাকা ফেরত এলে সেটাও পাঠানো হবে সরকারি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে।”
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ জ র ৫০০ ট ক প রকল প থ ক প রকল প র বর দ দ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জেনে জি এম কাদের কাউন্সিল স্থগিত করেন
জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরবিরোধী অংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, গত ২০ মে দলের প্রেসিডিয়াম সভায় ২৮ জুন জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেনে জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। পরে আদালতের নির্দেশে সদস্যপদ ফিরে পেয়ে তাঁরা সম্মেলন আয়োজন করেন। তাই জি এম কাদের আর আইনত চেয়ারম্যান নন।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই অভিযোগ করেন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে দাবি করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আদালতে যাই, আদালত আমাদের সদস্যপদ বহাল করেন ও কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। আমরা রায় পেয়েছি ৩০ জুলাই। কাউন্সিল হয় ৯ আগস্ট। এই মধ্যবর্তী সময়ে জি এম কাদের আদালতে যাননি। এখন তিনি বাইরে চিল্লাচিল্লি করছেন। সুতরাং বিষয়টি আপনাদের বুঝতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা কাউন্সিল করেছি।’
সম্মেলন আয়োজনে কোনো তড়িঘড়ি বা লুকোচুরি করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। তিনি বলেন, অনৈতিকভাবে জি এম কাদের যে সম্মেলন স্থগিত করেছিলেন, সেই সম্মেলন তাঁরা আবার আয়োজন করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙ্গল’ এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নম্বর–১২ তাঁরা ব্যবহার করবেন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁরা সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেবেন।
জি এম কাদের সম্মেলনের ট্রেন মিস করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন কাদেরবিরোধী অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, কাউন্সিল হয়ে গেছে। এখন আর কোনো আকুতির সুযোগ নেই। তাঁরা পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস ব্যবহার করছেন, এটা অন্যায় করছেন। শিগগির এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাদেরবিরোধীদের কাউন্সিলে জি এম কাদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ৯ আগস্ট কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। আগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। তাই আইনত জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান পদের ভিত্তি নেই। তাঁরা মিলেমিশে কাজ করার জন্য জি এম কাদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির কাদেরবিরোধী অংশের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের সর্বাত্মক সংস্কারে কাজ করেছিলেন। বর্তমানে যে ক্রান্তিকাল চলছে, তার উত্তরণে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দরকার।
আরও পড়ুননির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি চেয়ে আনিসুল-হাওলাদার কমিটির চিঠি১৩ আগস্ট ২০২৫সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন, শফিকুল ইসলাম, নাজমা আক্তার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম, মাসরুর মাওলা, সাইদুর রহমান, ইয়াহইয়া চৌধুরী, সরদার শাহজাহান, নুরুল ইসলাম মিলন, লিয়াকত হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, হারুন আর রশিদ, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, মো. ইয়াকুব হোসেন, শেখ আলমগীর হোসেন, নীগার সুলতানা, মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, নাসির উদ্দিন সরকার, হাফেজ মাহমুদুর রহমান, সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, শারমিন পারভীন লিজা, মিজানুর রহমান, তাসলিমা আকবর রুনা, শারমিন আকতার, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
আরও পড়ুনজাতীয় পার্টির নিয়ন্ত্রণ নিতে তৎপর আনিসুল, ঠেকাতে সক্রিয় জি এম কাদের১৩ আগস্ট ২০২৫