উপন্যাস লিখবার সময় আমি অন্য যেকোন লেখা থেকে বিরত থাকি: পাপড়ি রহমান
Published: 1st, February 2025 GMT
পাপড়ি রহমান একাধারে কথাশিল্পী, সম্পাদক, গবেষক এবং অনুবাদক। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অর্জন করেছেন ‘খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’। ২০২৫ বইমেলায় পাপড়ি রহমানের একটি উপন্যাস এবং একটি গল্পের বই প্রকাশ হচ্ছে। নতুন বইয়ের প্রেক্ষাপটসহ নানা বিষয় নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন পাপড়ি রহমান। সাক্ষাৎকার গ্রহণে স্বরলিপি।
রাইজিংবিডি: বইমেলা ২০২৫ প্রকাশতিব্য উপন্যাস ' ঊষর দিন, ধূসর রাত'—এর প্রেক্ষাপট জানতে চাচ্ছি।
পাপড়ি রহমান: যারা আমার পাঠক, তারা কিন্তু জানেন যে, আমি প্রান্তিক জনজীবন নিয়েই লিখি বা লিখতে ভালোবাসি, স্বচ্ছন্দ বোধ করি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করেন বরাবরই। অধ্যাপক ড.
আমি চেষ্টা করেছি অন্যরকম জীবন নিয়ে লিখতে। রাজনৈতিক বিষয়াদি অত স্পষ্ট করে বলা না গেলেও টাচ করে গিয়েছি। ইঙ্গিত দিয়েছি। মানুষের মনের চেতনার গভীর স্তরগুলি অনুসন্ধান করতে চেয়েছি। জানিনা কী পেরেছি, কতোটা পেরেছি? আমার পাঠক ও শিক্ষকেরাই ভালো বলতে পারবেন। তবে এটা নিশ্চিত করে বলছি, এই ঢাকাশহরের বাস্তব জীবনের গল্পগুলোই বলার চেষ্টা করেছি আমি। পাঠক, প্রতিটি চরিত্রকে চিনতে পারবেন। একই সঙ্গে চমকেও উঠবেন হয়তো ।
রাইজিংবিডি: 'হেমন্তের দিনে' গল্পগ্রন্থটি কী ধরনের গল্প দিয়ে সাজানো হয়েছে।
পাপড়ি রহমান: আমি চাই পাঠক আমার লেখায় ডাইভার্সিটি খুঁজে পাক। গত ৫ বছরে লেখা ৫ গল্প আর ৯৫/২০০১/২০০৩ এর তিনটি গল্প মোট ৮ গল্প নিয়ে এ বই। মুক্তিযুদ্ধের গল্প আমি খুব অল্প লিখেছি। কারণ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক ভেবেচিন্তে ও যত্ন নিয়ে লিখতে হয়। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জন্য যেমন গৌরবের, তেমনি খুবই সেনসেটিভ ইস্যু। এই বইতে একটি মুক্তিযুদ্ধের গল্প আছে। প্রেম ও প্রতারণার গল্প আছে। ঢাকাশহরের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের গল্প আছে। প্রকৃতির নির্মম প্রতিশোধের গল্প আছে। ৫ বছর বাদে প্রকাশিত হলো আমার নতুন কোনো গল্পগ্রন্থ। প্রকাশ করেছে ‘ঐতিহ্য’।
আরো পড়ুন:
হাজারমুখীরা আমাদের চারপাশেই থাকে: কাজী লাবণ্য
‘বিশ্বের বিভিন্ন অনুবাদ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে আমরা পিছিয়ে আছি’
রাইজিংবিডি: আপনিতো গল্প এবং উপন্যাস দুই’ই লেখেন। একযোগে গল্প এবং উপন্যাস লেখার কাজ কীভাবে এগিয়ে নেন।
পাপড়ি রহমান: হ্যাঁ, আমি গল্প ও উপন্যাসেই কাজ করি। এর বাইরে সম্পাদনাও করি। বা করেছি।কিন্তু কে বললো আমি একযোগে লিখি? উপন্যাস লিখবার সময় আমি অন্য যেকোন লেখা থেকে বিরত থাকি। বিরত থাকতে চাই। এই উপন্যাসটি আমার চতুর্থ উপন্যাস 'নদীধারা আবাসিক এলাকা' প্রকাশের ৬ বছর পর বেরুলো। আর গল্প নিয়ে তো বললামই। বই করার মতো গল্প গুছাতে বছর পাঁচেক লেগে যায়। তবে এ বছর মিরাকল ঘটলো, আমার নতুন উপন্যাস ও নতুন গল্পের বই একই মেলায় প্রকাশিত হলো।
রাইজিংবিডি: আপনার গল্প সাধারণত গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে গড়ে ওঠে, আপনার বেড়ে ওঠা শহরে, গ্রামকে এতো ভালো উপলব্ধি কীভাবে করতে পারেন?
পাপড়ি রহমান: আমার শৈশব কিন্তু গ্রামে কেটেছে। মুক্তিযুদ্ধের আগের বছরগুলি। গ্রামের ওই মাটি আমাকে আজও টানে। বা মায়ামমতায় ভরা আমার দাদার বাড়ির পারিবারিক পরিবেশ। বা ওই পুকুর, গুল্ম, ধানক্ষেত, শীতকাল মানেই পিঠাপুলির ধুম। সেই পিঠা শরীকদের সবার ঘরে পৌঁছে দেওয়া। তবে গ্রাম বা শহর এখানে ফ্যাক্টর নয়, ফ্যাক্টর হলো আমি নিবিড় পর্যবেক্ষণ ছাড়া কিছুই প্রায় লিখিনা। বা লিখতে পারিনা। এটা আমার এক ধরনের সীমাবদ্ধতাও বলতে পারো।
রাইজিংবিডি: অনেকেই বলেন পাপড়ি রহমানের বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া উচিত, ‘না প্রাপ্তি’ কে কীভাবে দেখেন?
পাপড়ি রহমান: কোনো পুরস্কার কি উত্তম সাহিত্য সৃষ্টি করে? নাকি উত্তম সাহিত্যকে পুরস্কৃত করা হয়? পুরস্কার যদি উত্তম সাহিত্য সৃষ্টিতে অবশ্যম্ভাবী না হয়, তাহলে একজন লেখকের জন্য পুরস্কারের প্রয়োজন কী? এখানে কে ধন্য হয়? লেখক নাকি পুরস্কার? কত নোবেল লরিয়েট, কত রাস্ট্রীয় পুরস্কার বাহকেরা তল্পিতল্পাসহ কে কোথায় হারিয়ে গেল, তার ইয়াত্তা নেই। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে টেক্সটই তো, নাকি? পাঠক পুরস্কার মনে রাখে না, মনে রাখে একজন লেখকের কাজ। কবি জীবনানন্দ দাশ কয়টা পুরস্কার পেয়েছিলেন? কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহির মৃত্যুর আগে পুরস্কৃত হননি, কিন্তু পুরস্কারের না পাওয়ার কারণে কি উনার লেখা থেমে ছিল? বা উনার লেখার মান ক্ষুন্ন হয়েছিল? ‘ডলু নদীর হাওয়া’ বা ‘ডুমুর খেকো মানুষ’এর কথা সাহিত্যপ্রেমীরা আজীবন স্মরণ রাখবে। তবে আরেকটি কথা, আমাদের এখানে পুরস্কার পাওয়ার জন্য যে যে যোগ্যতা লাগে, তা বোধ করি আমার নেই। এবং এই 'না প্রাপ্তি' কিন্তু এক ধরনের প্রাপ্তিই। এই 'না প্রাপ্তির' জন্যই হয়তো মনে হয়, লাইফ ইজ রিয়েলি বিউটিফুল।
রাইজিংবিডি: বাংলাদেশের ছোটগল্প সম্পাদনা করেছেন আবার এলিস মানরোর ছোটগল্পও সম্পাদনা করেছেন। হাসান আজিজুল হক, মানিক বন্দোপাধ্যায়দের গল্পকে দেখিয়েছেন মানরোর গল্পের সমান্তরালে। তার অর্থ দাঁড়ায় বাংলাদেশের ছোটগল্পের মান কোনো অংশেই কম নয় কিন্তু বিশ্ব দরবারের নানাভাষী পাঠকদের কাছে উল্লেখযোগ্যভাবে পৌঁছাতে পারছে না কেন?
পাপড়ি রহমান: এটা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছি। বিদেশি সাহিত্যের তুলনায় বাংলাসাহিত্যের মান কোনোভাবেই নগন্য নয়। কেন বা কীভাবে পৌঁছাবে আমাদের লেখা বিশ্বের কাছে? যদি সেভাবে অনুবাদ না হয়? অনুবাদে জোর দিতে হবে। বাংলা একাডেমি কি করে এ বিষয়ে? আমাদের ক্ল্যাসিকগুলি উত্তম অনুবাদে বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেয়াটা বাংলা একাডেমির দায়িত্বের মাঝেই পড়ে। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি বই ছাড়া তেমন কোনো অনুবাদের কথা তো শুনিনি। বা দেখিনি।
রাইজিংবিডি: প্রকাশনীগুলির সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন? কোন কোন প্রকাশক ঠিকঠাকমতো রয়্যালিটি প্রদান করেছেন?
পাপড়ি রহমান: এ ক্ষেত্রে মিশ্র অভিজ্ঞতা আছে। কেউ কেউ সঠিক তথ্য গোপন করে বলেন, আপনার বই তো চলেই না। ১৭ বছর ধরে প্রথম মুদ্রণের বই-ই উনারা দেদারসে বিক্রি করছেন। লামছাম রয়্যালিটি বুঝিয়ে দিয়ে বাকী বইয়ের হিসাবই আর দেননি আমাকে। বা দ্বিতীয় মুদ্রণ বা তৃতীয় মুদ্রণ এটা জানানো দূরে থাকুক।আবার কোনো কোনো প্রকাশক বাসায় এসে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে সম্মানী দিয়ে গেছেন। কেউ কেউ বলছেন, আপা, এই বইটিও শেষ হবার পথে, দ্বিতীয় মুদ্রণে যেতে হবে অচিরেই। একটা বইয়ের দ্বিতীয় বা তৃতীয় মুদ্রণ কি লেখক ও প্রকাশকের জন্য আনন্দের নয়? তাহলে অযথা এসব কারচুপির মানে কী? আর একজন লেখককে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে। লেখকের প্রাপ্য পারিশ্রমিক বুঝিয়ে দিতে হবে। তেমনি একজন লেখকও তার প্রকাশককে সম্মানিত মনে করবে।বিষয়টি কিন্তু পারিবারিক বন্ধনের মতো হওয়া উচিত। কিন্তু এই প্রকাশনার জগত আজব ভেলকির জায়গা। অন্য সবকিছুর মতো দলাদলিটাও এখানে ভালোভাবেই চলে। বা লেগপুলিং। সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকেই এমন বলছি।
রাইজিংবিডি: কেমন বইমেলা চান?
পাপড়ি রহমান: বইমেলা যেন বইমেলাই হয়, বাণিজ্য মেলা না হয়ে ওঠে। ধুলাবালি মুক্ত, নতুন বই আর নতুন লেখকদের ভিড় আর প্রাণচাঞ্চল্য ভরপুর মেলা চাই। নতুন লেখক, নতুন লেখা না এলে চলবে নাকি? আমাদের জীবন তো সায়াহ্নে পৌঁছে গেছে। আর আমি কিছুই কুক্ষিগত করে রাখতে চাইনা। রাখিনি। কারণ আমি বিশ্বাস করি, আমার মুক্তি আলোয় আলোয়, এই আঁধারে।
একেবারে সদ্য তরুণটির উজ্জ্বল মুখচ্ছবি মেলায় দেখতে চাই। তরুণদের লেখা বিমুগ্ধ হয়ে পড়তে চাই। এতসব প্রশ্ন করে আমাকে অনেক কথা বলতে দেওয়ার জন্য তোমাকে আন্তরিক ভালোবাসা ও ধন্যবাদ জানাই।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপন য স কর ছ ন র জন য জ বন ন বইম ল রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’
তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’
ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।
ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’
পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।
গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।
তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।
দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫