বিএনপির সঙ্গে ১০ দফায় ঐক্যমত হলে আগামী নির্বাচনে ধর্মভিত্তিক দলগুলার জোট গঠনের প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে চরমোনাইয়ের পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এ বিষয়ে রোববার তারা মতবিনিময় সভা করেছে মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে। রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে এ সভা হয়।

দীর্ঘ আদর্শিক বিরোধ থাকলেও গত ২১ জানুয়ারি বরিশালের চরমোনাইয়ে গিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির তথা সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সাক্ষাত করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির। দুজনেই সেদিন আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থিদের জোটের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

আলোচিত এ সাক্ষাতকে ছাপিয়ে যায় ২৬ জানুয়ারি চরমোনাই পীরের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠক। ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে গিয়ে ন্যূনতম সংস্কারসহ যৌথ স্বাক্ষরে ১০ দফা ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব। তখন ধারণা করা হচ্ছিল, আগামী নির্বাচনে বিএনপির দিকেই থাকবে ইসলামী আন্দোলন। তবে সে সময়েও দলটির নেতারা সমকালকে জানিয়েছিলেন, ইসলামী দলের জোট গঠনের প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে। 

এদিকে কওমি মাদরাসা ভিত্তিক নিবন্ধিত চার দল, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস এবং জমিয়ত উলামায়ে ইসলামকে নিয়ে জোট করার আলাপ চালাচ্ছে জামায়াত। যদিও খেলাফত মজলিস বিএনপির সঙ্গে ঐক্যমতে পৌছেছে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে।

এমন প্রেক্ষাপটে  ইসলামী আন্দোলন ও বাংলাদেশ খেলাফতের বৈঠক হলো। রোববার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই বৈঠকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যেক আসনে ইসলামী দলগুলোর একক প্রার্থী করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইসলামী ও দেশপ্রেমিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম তৈরিতে সবাই একমত হয়।

ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর সভাপতিত্বে এতে বাংলাদেশ খেলাফতের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমীন, শরাফ উদ্দীনসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা অংশগ্রহণ করেন। ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকনসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসল ম দলগ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ