যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মীদের বৃহত্তম ইউনিয়ন ও বৈদেশিক সেবা খাতের কর্মীদের এক অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টকে (ইউএসএআইডি) ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা রুখতে গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল আদালতে মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী ‘আমেরিকান ফেডারেশন অব গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ’ ও ‘আমেরিকান ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’।

সংগঠন দুটি বলছে, ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া ইউএসএআইডি–সংক্রান্ত পদক্ষেপ ‘অসাংবিধানিক ও বেআইনি’, যা ‘বৈশ্বিকভাবে মানবিক সংকট’ তৈরি করেছে। তারা আদালতের হস্তক্ষেপে এ পদক্ষেপ আটকাতে চায়।

গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সব বিদেশি সহায়তা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির প্রকল্পগুলো স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। সংস্থাটির কম্পিউটার সিস্টেমও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কর্মীদের আকস্মিক ছাঁটাই করা বা ছুটিতে রাখা হয়েছে।

গতকাল দায়ের করা মামলাটির আসামি করা হয়েছে ট্রাম্প, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে। এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউস ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি।

ইউএসএআইডিতে কাটছাঁট পদক্ষেপের একটা বড় অংশ তদারক করছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা এই ব্যবসায়ী কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্রকে সংকুচিত করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

মামলায় বলা হয়েছে, ইউএসআইডিকে তছনছ করতে বিবাদীদের একটি পদক্ষেপও কংগ্রেসের অনুমোদনের সঙ্গে সংগতি রেখে নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় আইন অনুসারে, কংগ্রেসই একমাত্র সত্তা, যা আইনত সংস্থাটিকে (ইউএসএআইডি) ভেঙে দিতে পারে।

গতকাল বিভিন্ন সূত্র থেকে রয়টার্স জানতে পেরেছে, সংস্থার ১০ হাজার কর্মীর মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ৩০০ জনেরও কম কর্মীকে রাখার পরিকল্পনা করছে।

মামলায় বলা হয়েছে, সংস্থাটি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে ম্যালেরিয়া ও এইচআইভির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের তৎপরতা বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ ভয়ানক রকমের মানবিক বিপর্যয় তৈরি হবে।

ট্রাম্পের বিদেশি সহায়তা স্থগিত করা ও ইউএসআইডির কার্যক্রম বন্ধের পদক্ষেপ ক্ষুধা নিবারণের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকেও ব্যাহত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মামলার বাদী পক্ষ আদালতের কাছ থেকে ইউএসএআইডির তহবিল পুনরুদ্ধারের আদেশ আশা করছে; যেন আদালতের আদেশের ভিত্তিতে সংস্থার কার্যালয়গুলো আবার খোলা যায়। পাশাপাশি সংস্থাটি বিলুপ্ত করতে নতুন কোনো আদেশ যেন জারি না হতে পারে, সে ব্যাপারেও আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছে বাদী পক্ষ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পদক ষ প

এছাড়াও পড়ুন:

দাবি মেনে নেওয়ায় অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা

দাবি মেনে নেওয়ায় ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজ্জাম্মুল হক ও অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনকারীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে দুপুর থেকে রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেছিলেন। 

আরো পড়ুন:

যবিপ্রবিসাসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

জানুয়ারি থেকে বিশেষ বৃত্তি পাবেন জবি শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কার্যকর হওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা; জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ; ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে আধুনিক সুবিধা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু।

অনশনকারী বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, “আমাদের দাবি ছিল বৃত্তি প্রদানের নির্দিষ্ট তারিখ, জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা এবং লাইব্রেরিতে সুবিধা বৃদ্ধি। প্রশাসন এগুলো মেনে নিয়েছে। কিছুটা ধোঁয়াশা থাকলেও আমরা আস্থা রেখে অনশন ভেঙেছি।”

বাগছাসের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, “আমাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আশা করি, প্রশাসন প্রতিশ্রুতিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করবে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন স্বপ্নের দুয়ার উন্মোচিত হবে।”

অনশনকারী শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এমকেএম রাকিব বলেন, “প্রশাসন আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে, এতে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করি, শিক্ষার্থীরা দ্রুতই তাদের কাঙ্ক্ষিত বৃত্তি পাবে এবং অন্যান্য ক্যাম্পাসের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও নির্বাচনের আমেজ তৈরি হবে।”

অনশনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পর এবারই প্রথমবারের মতো জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলো।

ঢাকা/লিমন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ