মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থে আইনের শাসন অবজ্ঞা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সিয়াটলের একজন ফেডারেল বিচারক। জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করে ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছেন তিনি।

মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক জন কফেনোর দুই সপ্তাহ আগে ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশকে সাময়িক স্থগিত করেছিলেন। এবার সেটিকে দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করে একটি আদেশ জারি করেছেন তিনি।

রিপাবলিকান দলের সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮১ সালে জন কফেনোরকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। এই বিচারক বলেন, ‘এটি ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, আমাদের প্রেসিডেন্টের কাছে আইনের শাসন তাঁর নীতি বাস্তবায়নের পথে একটি বাধা ছাড়া আর কিছুই নয়। রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্যই হোক না কেন—ট্রাম্পের কাছে আইনের শাসন পাশ কাটিয়ে যাওয়া বা শুধু উপেক্ষা করা সাধারণ একটি বিষয়।’

গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ট্রাম্প প্রশাসন ওই বিচারকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে যাচ্ছে বলে একটি নোটিস দাখিল করে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও হোয়াইট হাউস থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি।

ডেমোক্র্যাটিক শাসিত অঙ্গরাজ্য ওয়াশিংটন, অ্যারিজোনা, ইলিনয় ও ওরেগনের কর্তৃপক্ষ এবং বেশ কয়েকজন গর্ভবতী নারীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এই আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশ মামলাটিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মামলার বাদীদের যুক্তি, ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত একটি অধিকারের লঙ্ঘন। যেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যেকেউ–ই দেশটির নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, ১৯ ফেব্রুয়ারির পর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর মা–বাবার কেউই মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা না হলে সেই শিশুর নাগরিকত্বের স্বীকৃতি না দিতে মার্কিন সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম দিনেই এই আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যা তাঁর কঠোর অভিবাসন নীতির অংশ।

অন্যদিকে মেরিল্যান্ডের এক ফেডারেল বিচারকও গত বুধবার ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর একই রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন এবং বোস্টন ও নিউ হ্যাম্পশায়ারের বিচারকেরা ডেমোক্র্যাট–শাসিত রাজ্য ও অভিবাসী অধিকার সমর্থকদের পক্ষে আদেশ দেবেন কিনা, সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন অভিবাসী অধিকারকর্মীরা। আজ শুক্রবার ও আগামী সোমবার এই দুই আদালত আদেশ দিতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬: সূচি ও ভেন্যু ঘোষণা

নারী ক্রিকেটের বৈশ্বিক মঞ্চে আবারও আলো ছড়াতে প্রস্তুত হচ্ছে ইংল্যান্ড। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) যৌথভাবে ঘোষণা করেছে ২০২৬ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়সূচি ও ভেন্যুর তালিকা। ১২ জুন শুরু হয়ে এই ক্রিকেট উৎসব চলবে ৫ জুলাই পর্যন্ত, যার সমাপ্তি ঘটবে ঐতিহ্যবাহী লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে জমকালো ফাইনালের মাধ্যমে।

এই আসরে প্রথমবারের মতো ১২টি দল অংশ নিচ্ছে, যারা দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে মোট ৩৩টি ম্যাচে। ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ২৪ দিনের রোমাঞ্চকর এক প্রতিযোগিতা অপেক্ষা করছে।

টুর্নামেন্টের সূচি উন্মোচনের অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয় লর্ডসে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ, ইসিবি প্রধান রিচার্ড গুল্ড, ইংল্যান্ড নারী দলের কোচ চার্লট এডওয়ার্ডস এবং বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার।  
 
বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে সাতটি ঐতিহাসিক ও আধুনিক ভেন্যুতে— লর্ডস (লন্ডন), ওল্ড ট্রাফোর্ড (ম্যানচেস্টার), হেডিংলি (লিডস), এজবাস্টন (বার্মিংহাম), হ্যাম্পশায়ার বোল (সাউদাম্পটন), দ্য ওভাল (লন্ডন) এবং ব্রিস্টল।

আরো পড়ুন:

স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সুপার সিক্স অনুর্ধ্ব-১৯ মেয়েরা 

অস্ট্রেলিয়াকে নাড়িয়ে দিয়েও বাংলাদেশের হৃদয় ভাঙা হার 

আগামী আসরে সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আট দল: স্বাগতিক ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বাকি চারটি দল আসবে কোয়ালিফায়ার পর্ব পেরিয়ে, যেখানে বাংলাদেশসহ আরও বেশ কিছু দলকে লড়াই করতে হবে মূলপর্বে জায়গা পাওয়ার জন্য।

আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এক বার্তায় জানান, “২০১৭ সালে নারী ক্রিকেট ইতিহাসে যে অধ্যায় লর্ডসে রচিত হয়েছিল, এবার আমরা সেই আবহে ফিরে যেতে চাই। ২০২৮ সালের অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তির দিকেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

ইসিবি প্রধান রিচার্ড গুল্ড বলেন, “আমরা গর্বিত যে বিশ্বের সেরা কয়েকটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারছি। নারী ক্রিকেটকে আরও সামনে এগিয়ে নিতে এই আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আর লর্ডসে ফাইনাল আয়োজন—এটা প্রতিটি ক্রিকেটারের স্বপ্নপূরণের এক সম্ভাবনা।”

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ