গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৬
Published: 8th, February 2025 GMT
গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সাথে দায়িত্ব অবহেলা করায় ওসিকে প্রত্যাহার ঘোষণা দিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান।
তিনি বলেছেন, “গতকাল রাতে যে ঘটনাটি ঘটেছে তাতে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ হতে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আমি ব্যর্থতা স্বীকার করে নিচ্ছি। হামলাকারী কাউকে ছাড়া হবে না, প্রতিটি হামলার জবাব দেওয়া হবে। যেসব পুলিশ রেসপন্স করতে দেরি করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে রাজবাড়ি রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এসে এসব বলেন তিনি।
কমিশনার আরও বলেন, “আমি শুনেছি আমার ওসি দুই ঘণ্টা পর আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। আমি এখানে দাঁড়িয়ে বললাম, তাকে সাসপেন্স করব। আমি বলতে চাই, যারা এই ফ্যাসিবাদের সাথে আতাত করে তাদের পুলিশে চাকরি করতে দেওয়া যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে যারা আত্যাচার করেছে, দেশের উপরে জুলুম করেছে তারা মাথাচাড়া দিচ্ছে। কিন্তু তাদের কোন মাথাচাড়া বরদাস্ত করা হবে না। ইতোমধ্যে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ রাতে চিরুনি অভিযান হবে। ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দমন করার জন্য অপারেশন ডেভিলহান্ট পরিচালনা করা হবে।”
পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য চলাকালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
ওই ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা বিকেল ৫টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করতে করতে ফিরে যান।
ঢাকা/রেজাউল/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?