ভারতের মণিপুর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লার কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। আগামীকাল সোমবার রাজ্যের বিধানসভায় সম্ভাব্য অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হওয়ার আগেই এ সিদ্ধান্ত নিলেন বিজেপির এই নেতা। বিজেপির বিধায়কেরাই অনাস্থা প্রস্তাবটি উত্থাপন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল।

আজ সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল বীরেন সিংকে। মন্ত্রীর বাসভবনে দুই নেতার মধ্যে মিনিট পনেরোর একটি বৈঠক হয়। বীরেনের সঙ্গে বিজেপি এবং নাগা পিপলস ফ্রন্টের (এনপিএফ) ১৪ জন বিধায়ক ছিলেন।

ধারণা করা হচ্ছে, ৬০ সদস্যের মণিপুর বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন বীরেন সিং। সে কারণেই ১৪ জনের বেশি বিধায়ককে অমিত শাহর বাসভবনে নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। বৈঠক থেকে বেরিয়ে বীরেন সাংবাদিকদের জানান, তিনি মণিপুরে ফিরে পদত্যাগ করবেন।

এরপর আজ বিকেলে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে ফেরার পর রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন বীরেন সিং। সে সময় তাঁর সঙ্গে মণিপুরে বিজেপির দায়িত্বে থাকা ওডিশার নেতা সম্বিত পাত্র এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি এ শারদা দেবী ছিলেন।

পদত্যাগপত্রে যা লিখেছেন বীরেন

পদত্যাগপত্রে বীরেন সিং লিখেছেন, তিনি প্রত্যেক মণিপুরির স্বার্থ রক্ষার জন্য সময়মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন। উন্নয়নমূলক কাজ ও বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।

মণিপুরের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য কেন্দ্রকে অনুরোধ জানিয়ে বীরেন তাঁর পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, মণিপুরের হাজার হাজার বছরের সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় সভ্যতার ইতিহাস রয়েছে। সীমান্তে অনুপ্রবেশ দমন করতে এবং অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নের জন্য নীতি প্রণয়ন করা দরকার। একই সঙ্গে মাদক চোরাচালান ও মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

এর আগে গতকাল শনিবার নিজ সচিবালয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন শাসক জোটের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন বীরেন সিং। সেখানে আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া বিধানসভা অধিবেশন ও সম্ভাব্য অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সম্ভবত সেখানেই তিনি বুঝে যান, বিধায়কদের বড় একটি অংশ তাঁর নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করবে। এই অনাস্থা প্রস্তাবে বিজেপির আদিবাসী বিধায়কদের সঙ্গে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও যোগ দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।

ভারতের স্বাধীনতার পরবর্তী ইতিহাসে বীরেন সিংয়ের সময়কালকে মণিপুরের অন্যতম রক্তক্ষয়ী সময় হিসেবে চিহ্নিত করতে শুরু করেছে ভারতের সাংবাদিক ও ইতিহাসবিদদের একাংশ। দেড় বছরের বেশি সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়, কুকিসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সংঘর্ষে আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। গৃহহীন হয়েছেন হাজারো মানুষ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পদত য গপত র পদত য গ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ঝিনাইদহে ছেলের হাতে বাবা খুন

ঝিনাইদহে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের কোদালের কোপে শাহাদত হোসেন (৬৩) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফয়সাল হোসেনকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (১৬ জুন) সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহাদত হোসেন ওই গ্রামের তাইজেল হোসেনের ছেলে।

নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ করেন, সকাল ১০টার দিকে শাহাদত হোসেন ছেলে ফয়সাল হোসেনকে সাথে নিয়ে মাঠে কাজ করতে যান। কাজ করার ফাঁকে ফয়সাল কোদাল দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে মৃত বাবাকে মাঠে রেখে বাড়িতে গিয়ে মাকে পুরো ঘটনা জানান ফয়সাল। স্বজনেরা দ্রুত মাঠে গিয়ে শাহাদতের লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেন।

আরো পড়ুন:

কারাগারে ‘ফাঁস নিলেন’ জুলাই-আগস্ট হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সুজন

মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফয়সাল হোসেন দুই বছর ধরে মানসিক বিকারগ্রস্ত। পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কিছুদিন আগে বাড়িতে ফিরেছেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ফয়সালকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

ঢাকা/শাহরিয়ার/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ