বরখাস্ত হলেন ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক
Published: 12th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক পল মার্টিনকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইউএসএআইডির এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, পল মার্টিনকে স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় বরখাস্ত করা হয়েছে এবং বিষয়টি জানিয়ে তাকে একটি ই-মেইল পাঠানো হয়েছে। বরখাস্ত করার কোনো কারণ জানানো হয়নি।
ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক দপ্তর ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের এক দিন পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের নানা পদক্ষেপ ইউএসএআইডির কার্যক্রমে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে এবং সংস্থাটি প্রায় ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অব্যয়িত সহায়তার সঠিক তদারকি করতে পারছে না।
আরো পড়ুন:
তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, ক্ষুব্ধ চীন
মোদি যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন বুধবার
জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসেই ইউএসএআইডির ওপর চড়াও হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বন্ধ করে দেন বিভিন্ন দেশে ইউএসআইডির পক্ষে দেওয়া সহায়তা। পাশাপাশি কর্মীদের বরখাস্ত করে ভেঙে দিতে চান সংস্থাটি।
পল মার্টিন ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দায়িত্ব পালনের প্রথম সপ্তাহে এক ডজনেরও বেশি ফেডারেল সংস্থার মহাপরিদর্শকদের বরখাস্ত করলেও ইউএসএআইডির পদে পলের নিয়োগ বহাল ছিল।
বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত দুটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, ইউএসএআইডি মহাপরিদর্শকের অফিসের কর্মীদেরও জানানো হয়েছে, তাদের আর অফিসে প্রবেশাধিকার নেই।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএসএআইডকে ‘অযোগ্য এবং দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প। সেসময় তিনি সংস্থাটির বিস্তৃতি কমিয়ে আনার দায়িত্ব দেন ধনকুবের ইলন মাস্ককে। বিশ্ব জুড়ে ইউএসএআইডির ১০ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছে। ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ৬০০ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএসএআইড র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি