জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন ও ধ্বংস করার জন্য গণহত্যা চালানো হয়েছিল উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছে দলটি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা এই অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। বিএনপির মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণবিষয়ক সমন্বয়ক মো.

সালাহউদ্দিন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ন্যায়বিচার চেয়ে এই অভিযোগ জমা দেয়।

অভিযোগে বিএনপি বলেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দলটির ৮৪৮ জন নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছে। এই শহীদদের তালিকা অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করেছে বিএনপি।

অভিযোগে বলা হয়েছে, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন ও ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র করে গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দমন-নিপীড়ন চালানো হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতা-কর্মীদের ওপরে গণহত্যা চালানো হয়। এই ঘটনায় বিএনপি সারা দেশে ৮৪টি মামলা করেছে।

সালাহউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ৮৪৮ জন শহীদের মধ্যে বিএনপির পদধারী নেতা-কর্মী ৫৩৬ জন। বাকিরা বিএনপি সমর্থক, তাঁরা কোনো পদে নেই।

জেলায় জেলায় মামলা করে কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না দাবি করে সালাহউদ্দিন খান বলেন, ‘পুলিশ আসামি ধরছে না। তাই ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শুরু থেকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশে বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষে বিএনপিসহ সর্বস্তরের মানুষ এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যই ছিল বিএনপির মতো একটি বড় দলকে নিশ্চিহ্ন ও ধ্বংস করা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র গণহত য দলট র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী