‘ফাগুনের রঙে রাঙিয়ে দেই প্রাণ, গানে আর আনন্দে বরণ করি বসন্তের আহ্বান!’—এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এসইউবি)-এর কালচারাল ক্লাবের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘বসন্ত উৎসব ১৪৩১’।

বুধবার রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বসন্তবরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নৃত্য, সংগীত ও আবৃতিতে প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন স্টেট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (মনোনীত) অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ আখতার হোসেন খান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. আহমেদ হুসাইন এবং সিনিয়র ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফারহানা শারমিন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক, কথা নাহিয়ান।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ভিসি স্যার বলেন, ‘আজকের এই উৎসব আমাদের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও ঐক্যবদ্ধতাকে তুলে ধরে। এই আনন্দময় অনুষ্ঠানে প্রত্যক্ষ করা যায়, কিভাবে আমাদের ক্যাম্পাস সংস্কৃতি ও শৈল্পিক উৎকর্ষতায় সর্বদা অগ্রসর। বসন্তের এই মাধুর্যে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যম ও সৃজনশীলতা অনন্য, যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব।’

রেজিস্টার স্যারেরও উক্তি ছিল উদ্দীপনাময়। তিনি বলেন, ‘এই উৎসবে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের একত্রিত অংশগ্রহণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জীবনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিভা ও সৃজনশীলতার মাধুর্যে এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি মুহূর্তকে স্বর্ণছড়া করে তুলেছে।’

সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা বাহারি রঙের পোশাকে সেজে উৎসবস্থলে ভিড় জমাতে শুরু করে। নাচ, গান, কবিতা আবৃতিসহ নানা আয়োজনে পুরো ক্যাম্পাস প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিল আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা, যা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের সদস্য, ডিন, বিভাগীয় প্রধান, কর্মকর্তা ও প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

এই আনন্দদায়ক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরাও প্রশংসা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাফল্যের অন্যতম মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়।

স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল বিকাশে সর্বদা অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ট ট ইউন ভ র স ট অন ষ ঠ ন স জনশ ল আম দ র বসন ত

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।

সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।

ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’

হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’

কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।

এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ‘মুক্তির উৎসব’ করতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের আবেদন
  • এবার পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই ‘উৎসব’
  • খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ