জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে বিএনপি ঘোষিত কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।  রোববার বেলা ৩টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পুনট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নেতাকর্মীর এক পক্ষের দাবি, সম্মেলন না করে বাড়িতে বসে ‘পকেট কমিটি’ ঘোষণা করেছে। 

আরেক পক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, সম্মেলন করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.

ইফতেকার রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পুনট ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র দা, হাঁসুয়া, লাঠিসোঁটা হাতে বহনসহ অবস্থান করেছে। এ অবস্থায় পুনট বাসস্ট্যান্ডসহ পুরো ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং জনসাধারণের জানমালের ক্ষতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, পুনট ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে উপজেলা ও ইউনিয়নের আহ্বায়কদের উপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের কণ্ঠভোটে ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে কমিটি হলেও সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রসহ পুনটে এসে যে কর্মকাণ্ড করেছে, তা সংগঠনবিরোধী।
  
জানা গেছে, কমিটি ঘোষণার খবর পেয়ে সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঘোষিত কমিটি প্রতিহত করতে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটাসহ পুনট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন। এ সময় উভয়পক্ষের নেতাকর্মীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে গোলাম মোস্তফার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

তার সমর্থক জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনিছুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘রাতে ঘরে বসে যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তা আমরা মানি না। গঠনতন্ত্রের আলোকে ফের কমিটি ঘোষণা করতে হবে। খবর শুনে আমরা পুনটে গিয়েছিলাম, পথে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাধা দিয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করায় আমরা ফিরে এসেছি।’

কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, কেউ যদি আইন অমান্য করার চেষ্টা করেন, তাহলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত আছে।


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ১৪৪ ধ র ব এনপ র র কম ট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ