রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট খেলা নিয়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক শিক্ষকসহ প্রায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে রাবি মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত পাঁচজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেকে) পাঠানো হয়েছে। 

আজ রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে গণিত বিভাগ এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের খেলা শেষে এ ঘটনা ঘটে। 

গুরুতর আহতরা হলেন- গণিত বিভাগের ২১-২২ সেশনের মানিক বাবু, সাইদ সিয়াম ও মনির আহমেদ এবং ১৯-২০ সেশনের শহিদ আক্তার, ২০২০-২১ সেশনের আলি আহসান। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গণিত বিভাগের ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছে কিনা এ খবর পাওয়া যায়নি। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্টেডিয়ামের গ্যালারির দুই পাশে বসে খেলা দেখতেছিলেন। এ সময় তারা পরস্পরকে স্লেজিং করতে থাকেন। খেলা শেষে যখন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ হেরে যায় তখন তারা গণিত বিভাগের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের ওপর। তখন সেখানে পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরবর্তীতে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্টেডিয়ামের মাঠের মধ্যে অবস্থান নিলে ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের গেট ভেঙে মাঠের ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন আরেক দফা সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিক্ষকসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শেখ শামসুল আরেফিন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে পেরেছি। গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীদের গালাগালি করছিলেন। পরবর্তীতে ওই বিভাগের শিক্ষকরাও গালাগালি করেন। যার ফলে আমার বিভাগের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে যান। এখন আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই আছি।’

ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘শুরু থেকেই আমি খেলার মাঠে ছিলাম। আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব শান্তভাবেই খেলা উপভোগ করতে ছিলেন। খেলা শেষ হলে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে প্রায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে রামেকে পাঠানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আমার কাছে ফোন আসে তখন জানতে পারি যে গণিত বিভাগ এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। এসে দেখতে পাই, দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মাঠে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। তখন গ্যালারিতে থাকা শিক্ষার্থীরাও মাঠে ঢুকে পড়েন। যদিও এই খেলাতে দুই বিভাগের শিক্ষকদের থাকার কথা ছিল। কিন্তু এক বিভাগের শিক্ষকরা কম ছিলেন। যার জন্য তাদেরকে থামানো যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে শিক্ষকদের ডেকে এনে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের দুই পাশের গেট দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত গণ ত ব ভ গ র পরবর ত ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে