সিদ্ধিরগঞ্জে নৃশংস হামলার দৃশ্যপট ব্যানার-সাইনবোর্ডে, তোলপাড়
Published: 16th, February 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে সড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-ফ্যাস্টুনে ছেয়ে গেছে সালাহউদ্দিন এর নেতৃত্বে বিটিভির বরেণ্য সংগীত পরিচালক জাকির হোসেন আখেরের উপর নৃশংস হামলার দৃশ্যপট। এ নিয়ে পুরো এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। চায়ের টেবিলে বইছে সমালোচনার ঝড়।
ব্যানার-ফ্যাস্টুনে দেখা গেছে সালাহউদ্দিন, কামালসহ আরো কয়েক সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অন্ত্র দিয়ে হামলা করছে এবং ছবিতে আহত জাকির হোসেন আখের ও তার পরিবারসহ বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে আরো অনেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, সিদ্ধিরগঞ্জে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে বাড়ির কাজ বন্ধ করে দিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে জাকির হোসেন আখের ও তার পরিবারের উপর।
ঘটনাটি ঘটেছে ২০১২ সালের ৪ই মার্চে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্বপাড়া নুরু মেম্বারপুল এলাকায়। এঘটনায় ভুক্তভোগী জাকির হোসেন আখের সন্ত্রাসী বাহিনী সালাহউদ্দিনসহ সকলের বিচারের দাবী করেছেন।
কেন্দ্রীয় কমিটির জিয়া সাংস্কৃতিক জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিটিভির বরেণ্য সংগীত পরিচালক জাকির হোসেন আখেরের উপর এ নৃশংস হামলা করে সালাহউদ্দিন ও তার ভাই কামালসহ একদল সন্ত্রাসী বাহিনী।
কে এই সালাহউদ্দিন :
সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সধারণ সম্পাদক। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের সাথে আতাত করে এলাকায় বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেছেন।
গত আওয়ামী সরকারের আমলে দেখা গেছে বিএপির নেতাকর্মীদের এলাকা পরিবার নিয়ে বসবাস করতে পারেনি আওয়ামী লীগের নেতা ও পুলিশের কারনে।
আর এদিকে সালাহউদ্দিন আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে আতাত করে বিপুল পরিমান অর্থ বিত্তের মালিক বনে গেছেন।
ভুক্তভোগীর কাছ থেকে জায় নায়, ২০১২ সালে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্বপাড়া নুরু মেম্বারপুল এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেন তার জমিতে দোতলা ভবনের ছাদ নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। স্থানীয় চাঁদাবাজ সালাহউদ্দিন ওরফে ডাকাত সালাহউদ্দিন, তার ভাই কামাল, মোশারফ, তিতু মিয়াসহ একটি 'সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্র ওই ভবনের ছাদ দেয়ার সময় চাঁদা দাবি করে।
দাবিকৃত চাঁদা না দেয়ায় সালাহউদ্দিন ওরফে ডাকাত সালাহউদ্দিন, তার ভাই কামাল, মোশারফ, তিতু মিয়াসহ ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী লাঠি, শাবল, হকিস্টিকসহ দেশীয় তৈরি অস্ত্র নিয়ে জাকিরের ওই বাড়িতে যায়।
তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে জাকির হোসেন বাড়ির গেট বন্ধ করে দিলে সন্ত্রাসীরা কমান্ডো স্টাইলে ওয়াল টপকে বাড়িতে প্রবেশ করে। পরে সন্ত্রাসীরা তাদের ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে এবং নগদ ১ লাখ টাকা, ২০০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এ সময় সন্ত্রাসীরা জাকির হোসেন আখেরকে পিটাতে থাকে এবং ইট দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। সন্ত্রাসীরা এ সময় ওই সঙ্গীত পরিচালকের স্ত্রী শিরীনা আফরোজ ও কন্যা স্বর্ণালতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে। এঘটনার কয়েক বছর পরে জাকির হোসেন আখের অন্য ব্যাক্তির কাছে বাড়িটি বিক্রি করে বর্তমানে তিনি ঢাকায় বসবাস করছেন।
এঘটনার সংবাদ ঐসময় কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, আমার দেশ, যুগান্তর, মানবযমিন সহ উক্ত হামলার নিউজ জাতীয় দৈনিক পত্রিকা সমূহে ছাপা হয়।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স ল হউদ দ ন স দ ধ রগঞ জ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।