জয়পুরহাটে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, দলীয় কার্যালয়ে আগুন, ১৪৪ ধারা জারি
Published: 16th, February 2025 GMT
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নে ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপির একটি পক্ষের দলীয় কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় পুনটে বিবদমান দুটির পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা প্রশাসন আজ রোববার বেলা তিনটা থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত পুনটে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুনট বাজার টহল দিচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পুনট ইউনিয়নের বিএনপিতে বিভক্তি আছে। এ কারণে পুনট বাজারে বিএনপির তিনটি দলীয় কার্যালয় আছে। কালাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহিম ফকিরের নেতৃত্বে আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে পুনট ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে ইব্রাহিম ফকির তাঁর অনুগতদের নিয়ে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করছেন বলে একটি পক্ষের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ তোলেন। কমিটি প্রতিহত করার ডাক দিয়ে তাঁরা কালাই উপজেলা সদর থেকে দলবল নিয়ে পুনট বাজারের দিকে রওনা দেন। খবর পেয়ে আগেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুনট বাজারে অবস্থান নেয়। এ সময় কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
১৪৪ ধারা জারির কারণে বিএনপির ওই পক্ষ পুনট বাজারে যেতে পারেনি। ইব্রাহিম ফকির পুনট বাজারে দ্রুত ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা দেন। এরপর ইব্রাহিম ফকিরের পক্ষের নেতা-কর্মীরা একটি মিছিল বের করেন। তাঁরা মিছিল নিয়ে পুনট বাজারে অবস্থিত বিএনপির আরেকটি পক্ষের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই দলীয় কার্যালয়ে পুনট ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান বসতেন। তিনি কালাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মৌদুদ আলমের সমর্থক বলে পরিচিত।
পুনট বাজারে বিএনপির একটি পক্ষের কার্যালয় ভাঙচুরের পর আগুন দেওয়া হয়উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ল ই উপজ ল ব এনপ র ১৪৪ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই, তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সে পথেই দেশ অগ্রসর হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগে বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমান এবং বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আগেই বলেছেন।
তিনি মনে করেন, ঐকমত্য হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরো প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে।
সরকারের কি এখন নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার বিশেষ সম্পর্ক করছে, বিএনপি বিষয়টি কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “আমি একটা জিনিস মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং, সবাই তাদের মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই নিজেদের মতামত দেবে। এর মধ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
বিএনপি এত দিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারিতে গেল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক সময়। এবং এত সময়ও লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব সমস্যার সমাধান করে নির্বাচনের কথা বলেছে। সুতরাং, ফেব্রুয়ারি আরো দীর্ঘ সময়। তবে, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
আমীর খসরু বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব, সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐকমত্যের মধ্যে এসেছি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং, আমরা চেষ্টা করব, যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।”
তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই নির্বাচন শুরু হবে, তখনই সরকার নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের ধারণা হলো— একটি নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং, নির্বাচনে সেই নিরপেক্ষতা সরকার নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান বলেছেন, এখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে, সংস্কারও ততটুকুই হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক