দিনাজপুরে ওষুধ কেনার পর মান নিয়ে ক্রেতার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে সাড়ে চার ঘণ্টা ফার্মাসি বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফার্মেসি মালিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন ৫৫টি ফার্মেসি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন রোগীর স্বজনেরা।

কয়েকজন ফার্মেসির মালিক ও কর্মচারী জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতে সোহাগ ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে আসেন বিজিবির ফুলবাড়ী ২৯ ব্যাটালিয়নে কর্মরত হাবিলদার শফিকুল ইসলাম। তিনি সাতটি পৃথক প্যাকেটে সাতটি ইনজেকশন কিনে নিয়ে যান। ঘণ্টাখানেক পরে তিনি ইনজেকশনগুলো সঙ্গে নিয়ে আবারও সোহাগ ফার্মেসিতে এসে অভিযোগ করেন, ইনজেকশনের একটি ভায়েল আগে ব্যবহার করা হয়েছে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ফার্মেসি থেকে ইনজেকশনটি পরিবর্তন করে দেওয়া হলেও ওই সদস্য দোকান সিলগালা করাসহ নানা হুমকি দেন। পরে সিভিল সার্জন আসিফ ফেরদৌস ও জেলা ড্রাগ সুপারকে সঙ্গে নিয়ে সোহাগ ফার্মেসিতে যান বিজিবির ওই সদস্য।

মুঠোফোনে বিজিবির হাবিলদার শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিজিবির এক সদস্যের স্ত্রী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ওই সদস্যসহ তিনি সোহাগ ফার্মেসি থেকে ওষুধ ও ইনজেকশন কেনেন। হাসপাতালে ফিরে এসে দেখেন একটি ইনজেকশন আগে ব্যবহার করা। বিষয়টি ফার্মেসিতে জানাতে গেলে তাঁরা খারাপ আচরণ করেন। ইনজেকশনটি বদলে দিলে তাঁরা ফেরত চলে আসেন এবং সিভিল সার্জনকে ফোনে জানান। পরে শুনছেন সব ওষুধের দোকান বন্ধ করা হয়েছে।

সোহাগ ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিজিবির ওই সদস্য ১০০ এমএলের সাতটি ম্যাক্সসাল ইনজেকশন কিনে নিয়ে যান। ঘণ্টাখানেক পরে ফেরত এসে দেখান একটি ভায়েলের (ইনজেকশনের) মুখ খোলা এবং অর্ধেক ওষুধ নেই। আমরা তাঁকে ইনটেক ভায়েল দিয়েছি। তাঁর অভিযোগটি সত্য নয় দেখেও আমরা পরিবর্তন করে দিয়েছি। ক্ষমাও চেয়েছি। তারপরও তিনি দোকান সিলগালা করবেন, ভ্রাম্যমাণ করাবেন, যাঁকে–তাঁকে ফোন করাসহ নানা হুমকি দিয়েছেন। আমার বাবাও বিজিবির সদস্য ছিলেন। তাঁকে আমরা যথেষ্ট সম্মান দেখিয়েছি।’

প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনেরা। দুপুর সোয়া ১২টায় চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র হাতে নুরবানু আক্তার বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে নার্স ওষুধের স্লিপ দিয়েছে। বাইরে ওষুধ কিনতে এসে দেখি সব দোকান বন্ধ। এখন যাচ্ছি ফুলবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে। সেখানকার ওষুধের দোকানগুলো নাকি খোলা রয়েছে।’

এ বিষয়ে দিনাজপুর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ড্রাগ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, মুঠোফোনে এক বিজিবি সদস্য পুরাতন ওষুধ বিক্রি এবং রোগীর স্বজনের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ করেছিলেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁরা উভয় পক্ষের কথা শোনেন। তাঁদের ফার্মেসি খোলা রেখে উভয় পক্ষকে বসে বিষয়টি সমাধানের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মেডিকেল মোড় দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাসিনুর রহমান বলেন, ২৯ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ফোনে জানানো হয়েছে, ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে ওই বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে বেলা ৩টায় দোকান খুলে ওষুধ বিক্রি শুরু করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইনজ কশন

এছাড়াও পড়ুন:

বরাদ্দের ১০ দিনের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের বাসা ‘দখলে’ নিতে হবে

বরাদ্দ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে খালি বাসার ‘দখল’ নিতে হবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। অথবা ‘দখল’ নিতে ইচ্ছুক না হলে সেটাও জানাতে হবে আবাসন পরিদপ্তরকে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি বাসা-বাড়ি কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর

সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান

বরাদ্দপত্রে উল্লিখিত শর্ত অনুযায়ী, বাসা খালি হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বাসার দখল গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু, অনেক সময় বরাদ্দপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কিছু বরাদ্দগ্রহীতা বাসা খালি থাকা সত্ত্বেও বাসার দখলভার গ্রহণ করেন না।

তাছাড়া, অনেক বরাদ্দগ্রহীতা বরাদ্দ করা বাসাটি খালি থাকা সত্ত্বেও বাসার দখল গ্রহণ না করে দীর্ঘদিন পর বরাদ্দ করা বাসাটির পরিবর্তে অন্য একটি বাসা বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন কিংবা বাসাটির বরাদ্দ বাতিলের আবেদন করেন। এতে বাসাটি দীর্ঘদিন খালি থাকার কারণে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব আহরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে বাসার দখল ধরে রাখার কারণে অন্য কর্মচারীকে বাসা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

সরকারি আবাসনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং সরকারি রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন বাসা-বাড়ির বরাদ্দপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন বরাদ্দ পাওয়ার পর বরাদ্দপত্রের শর্ত মোতাবেক বাসাটি খালি হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে দখলভার গ্রহণ করেন কিংবা দখলভার গ্রহণে ইচ্ছুক না হলে তা দ্রুততার সঙ্গে আবাসন পরিদপ্তরকে অবহিত করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ