বইমেলায় এসেছে রুহুল আমিনের ‘মোহ কাঠের নৌকা’
Published: 20th, February 2025 GMT
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এ প্রকাশিত হয়েছে কবি ও কথাসাহিত্যিক রুহুল আমিনের প্রথম উপন্যাস ‘মোহ কাঠের নৌকা’। বইটি প্রকাশ করছে বাংলানামা প্রকাশনী। ১০ ফর্মার এ বইটির প্রচ্ছদ করেছেন কমল ঠাকুর। এটি মূল্য রাখা হয়েছে ৪৫০ টাকা। মোহ কাঠের নৌকা রুহুল আমিনের তৃতীয় গ্রন্থ।
বাংলানামার স্বত্বাধিকারী লেখক-সাংবাদিক হোসেন শহীদ মজনু বলেন, ‘‘আমরা সবসময় গুণগতমান সম্পন্ন বইকে প্রাধান্য দেই। লেখকের বয়স বা নাম, খ্যাতি আমাদের কাছে কোনো ফ্যাক্টর নয়, কনটেন্টই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে রুহুল আমিনের ‘মোহ কাঠের নৌকা’ ও ব্যতিক্রম নয়। লেখক রুহুল আমিন তার উপন্যাসে একটা নির্দিষ্ট সময়কে সুচারুরূপে উপস্থাপন করেছেন। ছোট ছোট বাক্যে, ছোট ছোট শব্দে মনের গভীর অনুভূতিকে ভিন্নভাবে অনুভব ও উপস্থাপনে সাংবাদিকতা সুলভ সক্রিয় বৈশিষ্ট্য তার উপন্যাসেও বিবৃত হয়েছে।রুহুল আমিন নিজেও সাংবাদিক; তাই তার লেখনীতে সাংবাদিকের দৃষ্টিভঙ্গি, দৃষ্টিকোণ প্রাধান্য যেমন পেয়েছে, তেমনি বিশ্লেষিত হয়েছে সাধারণ এক তরুণের চিত্ররূপও! একজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকরের সময় এক তরুণ সাংবাদিকের মনোভাব, আবার পেশাগত জীবনের খুব ছোটখাটো বিষয় এবং যাপিত জীবনের নানা অনুষঙ্গ মিলেমিশে একাকার হয়েছে মোহ কাঠের নৌকায়। মননশীল, সৃজনশীল ও নির্মেদ তরুণকে যাপিত-জীবনের নাড়িনক্ষত্রসহ সুন্দর-সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। বইটির বহুল প্রচার ও পাঠকপ্রিয়তা প্রত্যাশা করছি।’’
উপন্যাসটি সম্পর্কে রুহল আমিন বলেন, ‘‘একজন সংবাদকর্মীর পেশাগত, সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখানোর চেষ্টা করছি। একেকজন মানুষের চিন্তা জগৎ একেকরকম। মনোজগৎও ভিন্ন। একটি ঘটনাকে ভিন্ন মানুষ, ভিন্নভাবে দেখে। এই যে দেখার এই ভিন্নতা তারও একটা সৌন্দর্য আছে। উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্রও তার জীবনের নানা ঘটনাকে নিজের মতো করে দেখে। সে দেখাটা কেমন হয়েছে তা পাঠকের প্রতিক্রিয়াতেই বুঝতে পারব। আশা করছি, উপন্যাসটি পাঠকের কাছে ইতিবাচক সাড়া ফেলবে।’’
আরো পড়ুন:
বইমেলায় মোজাফ্ফর হোসেনের দুইটি বই
রিয়াজুল হকের ‘দ্য আর্ট অব পিস’ একুশে বইমেলায়
‘মোহ কাঠের নৌকা’ উপন্যাসটি বইমেলায় পাওয়া যাবে ৫৬০ নম্বর স্টলে।
উল্লেখ্য, রুহুল আমিন মূলত কবিতার মাধ্যমে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। একসময় লিটলম্যাগ করতেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ফিচার, গল্প ও প্রবন্ধ লিখে থাকেন। বর্তমানে কাজ করছেন দৈনিক কালবেলা পত্রিকার অনলাইন বিভাগের শিফট ইনচার্জ হিসেবে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র হ ল আম ন র উপন য স জ বন র ত জ বন বইম ল
এছাড়াও পড়ুন:
দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’
তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’
ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।
ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’
পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।
গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।
তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।
দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫