ভারতের মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করে শান্তি ফিরবে কি
Published: 20th, February 2025 GMT
মণিপুরে অবশেষে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলো। এই নিয়ে ১১ বার ভারতীয় সংবিধানের ৩৫৬ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হলো। অর্থাৎ নির্বাচিত সরকার ব্যর্থ হওয়ায় রাজ্য সরাসরি কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে গেল। মণিপুরে শেষ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছিল ২০০১ সালের ২ জুন। এই শাসন ২৭৭ দিন স্থায়ী হয়েছিল।
গত বছরের মে মাস থেকে চলা সহিংসতার জেরে আড়াই শর বেশি মানুষ মারা গেছেন মণিপুরে, গৃহহীন হয়েছেন ৬০ হাজারের মতো মানুষ। এরই জেরে পদত্যাগ করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংকে। রাজ্যে জারি হয়েছে রাষ্ট্রপতি শাসন।
মেইতেই সমাজের প্রতিক্রিয়া
বীরেন সিংয়ের পদত্যাগ এবং তার এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়েও মতবিরোধ চলছে। রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সমাজের প্রতিনিধিরা প্রথম আলোকে জানান, সিংকে সরিয়ে দিলেও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে মেইতেই সমাজের একটা বড় অংশ এখনো মনে করে, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিক দায়িত্বের ঊর্ধ্বে উঠে তাঁর নিজের সমাজ, অর্থাৎ মেইতেইদের জন্য কাজ করেছিলেন।
সে কারণে তিনি তাঁর সমাজে এখনো জনপ্রিয়, যদিও দলের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে একটা গোষ্ঠী কাজ করেছে। যেমন, বিধানসভায় বিজেপির স্পিকার থোকচম সত্যব্রত সিং বা মণিপুরের গ্রামীণ উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী ইউমনাম খেমচাঁদ সিং মুখ্যমন্ত্রীর কট্টর সমালোচক ছিলেন।
বিজেপির এই দুই নেতা মেইতেই সমাজের হলেও সিংয়ের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন। বিশেষ করে সিংয়ের পদত্যাগের প্রধান কারিগর হিসেবে থোকচম সত্যব্রত সিংকে দেখা হচ্ছে। কারণ, বীরেন সিং-বিরোধী গোষ্ঠীর এই নেতা জানিয়েছিলেন যে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলে স্পিকার হিসেবে তিনি তাতে বাধা দেবেন না। অর্থাৎ অনাস্থা প্রস্তাব আনতে দেবেন। আর এ ছাড়া বিজেপির কুকি এমএলএসহ অন্যান্য আদিবাসী এমএলএ আগেই বীরেন সিংয়ের বিরোধিতা করেছিলেন।
তবে গোটা মেইতেই সমাজই যে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চলে গেছে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই বলে প্রথম আলোকে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেইতেই সমাজের এক গবেষক-অধ্যাপক, যিনি পুরো সমস্যাটিকে তাঁর মতো করে বিশ্লেষণ করেছেন।
প্রথম আলোকে ওই গবেষক জানান, পুরো মেইতেই সমাজ সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নয়। (সরকারের) নিষ্ক্রিয়তায় তারা অসন্তুষ্ট ঠিকই, কিন্তু তারা জানে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। এটা বিরোধীরা এবং ভিন্নমতাবলম্বীরা (দলের মধ্যে বিক্ষুব্ধরা) যারা মুখ্যমন্ত্রীকে উৎখাত করতে চায় এবং ক্ষমতা দখল করতে চায়, তাদের একটা পরিকল্পনা। বিরোধীরা নতুন করে জনসংযোগ করতে চায়, যাতে তারা নতুন নির্বাচনে লড়ার একটা সুযোগ পায়।
অর্থাৎ পদত্যাগ করা মানেই যে বীরেন সিংয়ের রাজনৈতিক জীবন এখানে শেষ হয়ে যাচ্ছে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই বিজেপিই তাঁকে ভবিষ্যতে ফিরিয়ে আনতে পারে বা আবার নতুন করে নির্বাচনে জিতে ফিরে আসতে পারেন সিং। কারণ, সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সমাজের মধ্যে তাঁর একটা ভালো প্রভাব রয়ে গেছে বা বলা যেতে পারে যে তাঁর জনপ্রিয়তা মেইতেইদের মধ্যে বেড়েছে, কুকিদের মধ্যে কমলেও।
‘বীরেন সিংকে কিছুটা রাজনৈতিক শহীদ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেটা ভবিষ্যতে তাঁকে ফিরে আসতে সাহায্য করবে বলে এই মুহূর্তে মনে করা হচ্ছে’ এমন মন্তব্য করেছেন ওই গবেষক।
স্বাভাবিকভাবেই মেইতেই গোষ্ঠীগুলো বলেছে যে তারা আশা করেছিল, তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করবে। কিন্তু তা না হওয়ায় তারা হতাশ। দ্রুত রাষ্ট্রপতি শাসন শেষ করে নতুন নেতৃত্ব, অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের দাবি তুলেছে মেইতেই সমাজের পক্ষে সমন্বয়কারী সংগঠন কো-অর্ডিনেটিং কমিটি অন মণিপুর ইন্টেগ্রিটি (কোকোমি)।
‘বীরেন সিং পদত্যাগ করার পর একজন যোগ্য ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দায়িত্ব দেওয়া উচিত ছিল। মণিপুরের বিধায়কদের বিধানসভার নেতা নির্বাচন করার অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল’, বলেছেন কোকোমির সাবেক প্রধান সমন্বয়ক সোমরেন্দ্র থকচম। তিনি আরও বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজের মধ্য থেকে নেতা নির্বাচনের পরিবর্তে বিধায়কদের একে একে দিল্লিতে ডাকা হয়। ক্ষমতা (দিল্লিতে) কেন্দ্রীকরণ করে একটা সমস্যা তৈরি করে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হলো।
কুকিদের অবস্থান
অন্যদিকে কুকিসহ আদিবাসী ও উপজাতীয় নেতাদের ফোরামের মুখপাত্র গিঞ্জা ভুয়ালজং বলেছেন, রাষ্ট্রপতির শাসন তাঁদের পক্ষে আর একজন মেইতেই মুখ্যমন্ত্রী মেনে নেওয়া প্রায় অসম্ভব। কুকি-জো আর মেইতেইকে বিশ্বাস করে না, তাই একজন নতুন মেইতেই মুখ্যমন্ত্রী থাকা স্বস্তিদায়ক নয়।
এই অবস্থায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করাকে স্বাগত জানাচ্ছে কুকিসহ অন্যান্য আদিবাসী সংগঠন। এখানে প্রশ্ন হলো, এর পরে কুকিসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী পৃথক প্রশাসনের দাবি বা আদিবাসী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করার দাবি থেকে ভবিষ্যতে সরে আসবেন কি না। এখন পর্যন্ত এই দাবিতে মণিপুরের কুকিসহ অন্যান্য জনজাতি গোষ্ঠী অনড়।
তাঁরা এটা জানিয়েছেন যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই নেতৃত্বাধীন রাজ্যে তাঁদের পক্ষে বাস করা সম্ভব নয়। কারণ, তাঁরা মেইতেই নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাস হারিয়েছেন। যদিও রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পরে এই নিয়ে তাঁরা পথে নামেননি। ভুয়ালজং শুধু বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি শাসনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা বিশ্বাস করি সহিংসতার অবসানের কাজ শুরু হবে, যা রাজনৈতিক সংলাপের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশের পথ প্রশস্ত করবে।’
তবে কোকোমি ইতিমধ্যে স্পষ্ট জানিয়েছে, বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর দাবি অনুযায়ী পৃথক প্রশাসন বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি নিয়ে কোনো আলাপ–আলোচনাতেই তারা যাবে না। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তারা জনমত গড়ার কাজে বিবৃতি দিতেও শুরু করেছে। অর্থাৎ দুই প্রধান গোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই একটা বিভেদ স্পষ্টভাবে সামনে এসেছে এবং কেন্দ্রীয় স্তরেও জানানো হয়েছে যে রাজ্যের মধ্যে পৃথক প্রশাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়।
কেন্দ্রীয় স্তরে বিজেপির তরফে সম্বিত পাত্র স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে কুকিসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোনো অবস্থাতেই পৃথক প্রশাসন পাবে না। তিনি শুক্রবার বলেছেন, মণিপুরের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে কোনো সমঝোতা করা হবে না।
পৃথক প্রশাসন বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল না পেলেও তারা তাদের লড়াই স্থগিত করবে কি না, তা নিয়ে কুকিসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী এখনো মুখ খোলেনি। অর্থাৎ দুই পক্ষের মধ্যে মৌলিক বিষয়গুলোতে বিবাদ থেকেই যাচ্ছে। এ রকম একটা অবস্থায় দুই পক্ষের নাগরিক সমাজ নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
নাগরিক সমাজের আলোচনার বিভিন্ন ধাপে কলকাতা, গুয়াহাটি এবং উত্তর ভারতে তিনটি বৈঠক হয়েছে কুকিসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী ও মেইতেই সমাজের মধ্যে। বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনা হয়নি বলে ওই বৈঠকে উপস্থিত এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি যে ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে, তা মেটানোর কাজটা আমরা শুরু করতে পেরেছি। কিন্তু এটা শেষ করবে সরকার।’
তবে এখনো বলা মুশকিল, এর ফলে মণিপুরে শান্তি ফিরবে কি না। কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসনের ফলে বিজেপির একটা বড় সুবিধা হলো। আর প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের একটা বড় সমস্যা তৈরি হলো।
বিজেপির সুবিধা কী?
এটা নিয়ে কোনো পক্ষেই আর কোনো দ্বিমত নেই যে বিজেপি সেখানে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছিল। গত লোকসভা নির্বাচনে মণিপুরের দুটি লোকসভা আসনের দুটিতেই কংগ্রেসকে জিতিয়ে মানুষ আগেই বিজেপির প্রতি তাঁদের অনাস্থা প্রকাশ করেছিলেন।
গত সপ্তাহে বিজেপির মেইতেই, কুকিসহ অন্যান্য উপজাতীয় নেতাদের বড় অংশ বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারে অনাস্থা প্রকাশ করার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেন। মোটামুটি ঠিক হয়ে যায় যে কংগ্রেস বা অন্য কোনো দল অনাস্থা প্রস্তাব আনবে এবং বিজেপির ভেতরে মুখ্যমন্ত্রীবিরোধী গোষ্ঠী ও প্রধান রাজনৈতিক বিরোধীরা সেই অনাস্থা সমর্থন করে সরকার ফেলে দেবে। এই পরিস্থিতি এড়াতে চাপ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সরায় কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু এরপর রাজ্যে দলের দায়িত্ব তারা ৭২ ঘণ্টাতেও কারও হাতে তুলে দিতে পারেনি।
এই রকম একটা অবস্থায় নির্বাচনের দিকে এগোনোর একটা বিকল্প পথ বিজেপির সামনে ছিল। কিন্তু সেই পথে তারা না হেঁটে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করল, যার অর্থ এখন সরাসরি কেন্দ্র সরকার মণিপুরকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
মণিপুরে নির্ধারিত সময় নির্বাচন হলে তা হওয়ার কথা ২০২৭ সালের মার্চ মাসে। আর রাষ্ট্রপতি শাসন দফায় দফায় নবায়ন করা হলে, তিন বছর পর্যন্ত তা টেনে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ ২০২৮ সালের মার্চ মাসের আগে ওই রাজ্যে নির্বাচন না–ও করা হতে পারে। ভারতের সংবিধান বলছে, ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া তিন বছর সময়কালের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে। সংসদের অনুমতি সাপেক্ষে এই পুরো সময় যদি বিজেপি নেয়, তাহলে ২০২৮ সালের মার্চ মাসের আগে মণিপুরে নির্বাচন হচ্ছে না।
এক বছর আগের লোকসভা নির্বাচনে ওই রাজ্যে দুটি আসনেই হেরেছে বিজেপি। এর থেকেও ধরে নেওয়া যেতে পারে যে বিধানসভা নির্বাচন হলে সেখানেও হারত বিজেপি এবং জিতত কংগ্রেস। সেটা মাথায় রেখেই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হলো বলে মনে করছেন মণিপুর পর্যবেক্ষকেরা, যাতে আপাতত নির্বাচন করতে না হয়। কারণ, নির্বাচন হলে অবধারিতভাবে এই রাজ্যটি চলে যেত কংগ্রেসের হাতে।
সরকার ভেঙে দেওয়া হয়নি, স্থগিত করা হয়েছে
এর মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বীরেন সিংয়ের সরকারকেও যে আবার ফিরিয়ে আনা যেতে পারে, যেটা স্পষ্ট ভাষায় উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপির দায়িত্বে থাকা ওডিশার এমপি সম্বিত পাত্র জানিয়েছেন। তিনি শুক্রবার বলেন, বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হয়নি, এটি স্থগিত রাখা হয়েছে। যার অর্থ হলো, বিজেপির অধীনে একটি নতুন রাজ্য সরকার গঠনের সম্ভাবনা রয়ে গেছে।
পাত্র বলেন, ‘বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হয়নি এবং ভবিষ্যতের যেকোনো সময়ে তাকে পুনরুজ্জীবিত করা যেতে পারে, যদি ভারতের রাষ্ট্রপতি তা সঠিক সময় বলে বিবেচনা করেন। সেটা বিবেচনা করা হবে কি না, তা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপরে।’
অর্থাৎ এখানে দুটি সম্ভাবনাই খুলে রাখল বিজেপি। এক, ভবিষ্যতে নেতা খুঁজে পেলে বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা এই বিধানসভাকেই পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। আর তা যদি না হয় তবে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে যেতে পারে। এই মুহূর্তে নির্বাচন করলে নিঃসন্দেহে কংগ্রেস এগিয়ে থাকত। কিন্তু সেই রাস্তায় না হেঁটে বিধানসভা স্থগিত করে খানিকটা সময় নিল বিজেপি।
কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আক্রমণ করে কংগ্রেস বলেছে, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে বিজেপি এটা প্রমাণ করল যে সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। দলের প্রধান নেতা রাহুল গান্ধী এবং অন্য শীর্ষ নেতা জয়রাম রমেশ ও কে সি বেনুগোপাল সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু এর ফলে বিজেপি যে সুবিধা পেল সেটা নিয়ে কংগ্রেস কোনো মন্তব্য করেনি। বেনুগোপাল বলেছেন, সব পক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা বলে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। কিন্তু সেই আশা পূর্ণ হবে কি না, তা এখনই বলা মুশকিল।
শুভজিৎ বাগচী প্রথম আলোর কলকাতা সংবাদদাতা
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র র ষ ট রপত র জন ত ক পর স থ ত পদত য গ ব ধ নসভ অবস থ য বল ছ ন মন ত র অন স থ য গ কর কর ছ ল র একট সরক র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
পাশাপাশি খোঁড়া হচ্ছে মা-ছেলের কবর, সেই দৃশ্য কাঁদাচ্ছে এলাকার মানুষকে
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে কেনেন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা। সেটি চালিয়ে স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন জিয়া উদ্দিন (২৭)। সঙ্গে ছিল তাঁর এক চাচাতো ভাই। পথে নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বালুবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন জিয়া উদ্দিনের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম (১৬)। জিয়া উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী ফারজানা আক্তার (২৩), মেয়ে মাহমুদা কায়সার (৮) ও ছেলে মানারুল ইসলামকে (৩) গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জিয়া উদ্দিনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার ও ছেলে মানারুল ইসলাম।
গতকাল শনিবার বেলা তিনটার দিকে মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চিনকিরহাট এলাকায় ঘটে এই সড়ক দুর্ঘটনা। এরপর রাত আটটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়া উদ্দিনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার ও ছেলে মানারুল ইসলাম মারা যান। জিয়া উদ্দিন উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের বামন সুন্দর এলাকার দোস্ত মোহাম্মদের ছেলে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর এলাকায়।
আহত জিয়া উদ্দিনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জিয়া উদ্দিনকে। সেখানে চিকিৎসাধীন তাঁর মেয়ে মাহমুদা কায়সারের অবস্থাও শঙ্কাজনক। এর মধ্যেই তিনজনের লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছে পারিবারিক কবরস্থানে। পাশাপাশি খোঁড়া হয়েছে ফারজানা আক্তার ও তাঁর ছেলে মানারুলের কবর।
কাটাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলেয়া বেগম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় বামন সুন্দর এলাকার মা-ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে মা-ছেলের জন্য পাশাপাশি কবর খোঁড়ার দৃশ্য দেখে স্বজন ও প্রতিবেশীদের চোখ সিক্ত হচ্ছে। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় পুত্রবধূ, নাতিসহ পরিবারের তিন সদস্যকে হারিয়ে আহাজারি করছেন বিবি হালিমা। আজ সকালে