২০২৭ সালের মধ্যে সড়ক নিরাপত্তা আইন করবে সরকার
Published: 20th, February 2025 GMT
বাংলাদেশে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
তিনি জানান, ২০২৭ সালের মধ্যে এ আইন প্রণয়ন করা হবে। ইতিমধ্যে সরকার এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে মরক্কোর মারাকাসে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিশ্ব সড়ক নিরাপত্তা সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশে একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হবে। সরকার ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে একটি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কৌশলগত কর্মপরিকল্পনাও রয়েছে, যার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনা।
জানা যায়, সরকার ২০৩০ সালের লক্ষ্যগুলোর মধ্যে বিশেষ করে লক্ষ্য ৩.
এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য সরকার আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করছে। বাংলাদেশ ২০২৭ সালের মধ্যে প্রথম জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা আইন চূড়ান্ত ও অনুমোদন করবে, যা নিরাপদ ব্যবস্থা (সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ) অনুসরণ করে প্রণয়ন করা হবে।
বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভিত্তিক ডেটাবেইস ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা হবে।
২০২৬ সালের মধ্যে একটি গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা প্রণয়ন করবে, যা ২০২৪ সালের মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকার কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে। মানসম্মত হেলমেট ব্যবহারের জন্য ২০২৬ সালের মধ্যে একটি বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ নির্দেশিকা তৈরি করবে।
এই সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের অ্যানফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের পরিচালক নাজনীন হোসেন, গ্লোবাল রোড সেফটি অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গ্রান্টস প্রোগ্রামের ম্যানেজার তাইফুর রহমান, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ড. শরিফুল আলম, নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, ব্র্যাক রোড সেফটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার খালিদ মাহমুদ ও সিআইপিআরবি’র ড. সেলিম মাহমুদ চৌধুরীসহ বাংলাদেশ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি এবং বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন বা বিধি নেই। তাই এই বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০২৭ সালের মধ্যে একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করবে।
ঢাকা/হাসান/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অনিরাপদ ওয়েবসাইটে ঢোকার আগে সতর্ক করবে গুগল ক্রোম
ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে গুগল। ২০২৬ সালের অক্টোবর থেকে প্রকাশিতব্য ক্রোম ব্রাউজারের ১৫৪তম সংস্করণে ডিফল্টভাবে সব ওয়েবসাইট নিরাপদ এইচটিটিপিএস (হাইপারটেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল সিকিউর) সংযোগে লোড হবে। কোনো ওয়েবসাইট যদি এখনো অনিরাপদ এইচটিটিপি (হাইপারটেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল) প্রোটোকলে চলে, তবে সেই সাইটে প্রবেশের আগে ব্যবহারকারীর অনুমতি চাইবে ক্রোম।
গুগল ২০২১ সালে ‘এইচটিটিপিএস ফার্স্ট মোড’ চালু করে। ওই সুবিধা চালু থাকলে ব্যবহারকারীরা চাইলে ব্রাউজারে ‘অলওয়েজ ইউজ সিকিউর কানেকশনস’ অপশনটি সক্রিয় করতে পারতেন। এতে ক্রোম প্রথমে নিরাপদ সংযোগে সাইটে প্রবেশের চেষ্টা করে। সংযোগ না পাওয়া গেলে সতর্কবার্তা দেখায়। এবার গুগল ফিচারটি ডিফল্টভাবে সক্রিয় করতে যাচ্ছে, যাতে ব্যবহারকারীরা অনিরাপদ সংযোগে কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ না করেন এবং মাঝপথে কেউ ডেটা চুরি বা বিকৃত করতে না পারে।
গুগলের ক্রোম নিরাপত্তা দল এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২৬ সালের অক্টোবর মাসে ক্রোম ১৫৪ সংস্করণ প্রকাশের সময় থেকে ডিফল্টভাবে অলওয়েজ ইউজ সিকিউর কানেকশনস চালু করা হবে। এর ফলে কোনো ওয়েবসাইটে নিরাপদ সংযোগ না থাকলে প্রথমবার প্রবেশের আগে ক্রোম ব্যবহারকারীর অনুমতি চাইবে। গুগল আরও জানিয়েছে, অনিরাপদ সংযোগের সুযোগ নিয়ে আক্রমণকারীরা ব্রাউজারের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং ব্যবহারকারীর অজান্তে ক্ষতিকর কনটেন্ট, ম্যালওয়্যার বা বিভ্রান্তিকর তথ্য পাঠাতে পারে। এতে তথ্য চুরি বা সামাজিক প্রকৌশলভিত্তিক আক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
তবে ক্রোম একই ওয়েবসাইটে বারবার সতর্কবার্তা দেখাবে না। কোনো অনিরাপদ সাইট নিয়মিত ব্যবহার করলে সেই সাইটে আর সতর্কতা দেখানো হবে না। নতুন বা খুব কম দেখা ওয়েবসাইটে ঢোকার সময়ই কেবল সতর্কবার্তা দেখানো হবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে শুধু পাবলিক ওয়েবসাইটের জন্য এই সতর্কতা চালু রাখতে পারবেন অথবা পাবলিক ও ব্যক্তিগত দুই ধরনের সাইটের জন্যই সেটিংটি সক্রিয় করতে পারবেন। যদিও ব্যক্তিগত বা অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যেও কিছু ঝুঁকি থাকে, তবু সেগুলো সাধারণত পাবলিক সাইটের তুলনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এসব সাইট সাধারণত গৃহস্থালি ওয়াই–ফাই বা কোনো প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে সীমাবদ্ধ থাকে, যেখানে বাইরের আক্রমণের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম।
গুগল জানিয়েছে, এই পরিবর্তনে ব্যবহারকারীদের ঘন ঘন সতর্কবার্তা দেখার আশঙ্কা নেই। বর্তমানে ইন্টারনেটে ৯৫ থেকে ৯৯ শতাংশ ওয়েবসাইট ইতিমধ্যে নিরাপদ এইচটিটিপিএস প্রোটোকল ব্যবহার করছে, যেখানে ২০১৫ সালে এই হার ছিল মাত্র ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ।
সব ব্যবহারকারীর জন্য সুবিধাটি চালুর আগে, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিতব্য ক্রোমের ১৪৭তম সংস্করণে ‘এনহান্সড সেফ ব্রাউজিং’ সুবিধা ব্যবহারকারী এক শ কোটি মানুষের জন্য প্রকাশ্য ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘অলওয়েজ ইউজ সিকিউর কানেকশনস’ চালু করা হবে। গুগল বলেছে, ‘আমরা আশা করছি, এই পরিবর্তন অধিকাংশ ব্যবহারকারীর জন্য নির্বিঘ্ন হবে। তবে কেউ চাইলে ব্রাউজারের সেটিং থেকে “অলওয়েজ ইউজ সিকিউর কানেকশনস” বন্ধ করতে পারবেন। ওয়েব ডেভেলপার বা তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবীদের এখনই এই ফিচারটি সক্রিয় করে রাখা উচিত, যাতে আগেভাগেই অনিরাপদ ওয়েবসাইট শনাক্ত করা যায়।’
ইন্টারনেট নিরাপত্তা বাড়াতে গুগল আগেও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ক্রোমে ‘এইচটিটিপিএস আপগ্রেড’ নামের ফিচার যোগ করা হয়, যা ওয়েবপেজের অভ্যন্তরীণ এইচটিটিপি লিংক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপদ সংযোগে রূপান্তর করে।
সূত্র: ব্লিপিংকম্পিউটার ডটকম