জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার)। সেদিন বিকেল ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ হবে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। রাজধানীর বাংলা মোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন চলছে।

নতুন দলের বিষয়ে জনমত জরিপ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। এ লক্ষ্যে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি কর্মসূচি চলছে। এই কর্মসূচির আওতায় জনমত জরিপ করা হচ্ছে। অনলাইনের পাশাপাশি জেলায় জেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত (প্রশ্নোত্তর) সংগ্রহ করা হচ্ছে। জরিপে রোববার বিকেল পর্যন্ত তিন লাখের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছেন বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র বলছে, নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন নাহিদ ইসলাম। আর দলের সদস্যসচিবের পদে আখতার হোসেনের নাম অনেকটাই চূড়ান্ত। তিনি এখন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্ট বেশির ভাগ মার্কিন, অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যুতে অসন্তোষ বাড়ছে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা এক সপ্তাহ ধরে অপরিবর্তিত আছে। তবে তিনি যেভাবে অর্থনীতি পরিচালনা করছেন ও অভিবাসন ইস্যুতে যে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন, তাতে তাঁর প্রতি অসন্তোষ ক্রমাগত বাড়ছে।

রয়টার্স/ইপসোসের করা সবশেষ জনমত জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তিন দিনের জনমত জরিপটি গত রোববার শেষ হয়। ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ৫৩ শতাংশ। এর এক সপ্তাহ আগে রয়টার্স/ইপসোস জরিপে একই ফল পাওয়া গিয়েছিল। অর্থাৎ তখনো ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা সন্তোষ এবং ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা অসন্তোষ জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প যে কৌশলে অর্থনীতি পরিচালনা করছেন, তার প্রতি ৩৬ শতাংশ মানুষের সমর্থন আছে। এ হার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বর্তমান মেয়াদ ও ২০১৭-২০–এর প্রথম মেয়াদের মধ্যে সবচেয়ে কম। গত সপ্তাহের জনমত জরিপের তুলনায় এ সমর্থন ১ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, ট্রাম্পের অর্থনীতি পরিচালনার কৌশলের প্রতি অসন্তোষের হার ৫ শতাংশ বেড়ে ৫৬ শতাংশে পৌঁছেছে।

নতুন জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২২ শতাংশ বলেছেন, অর্থনীতি তাঁদের প্রধান উদ্বেগের জায়গা। আগের জরিপের তুলনায় এ হারের ক্ষেত্রে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মন্দার আশঙ্কা বেড়েছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ট্রাম্প শুল্কহার এত বেশি বাড়িয়েছেন যে কিছু দেশ, বিশেষ করে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

মূল্যস্ফীতি এখনো ট্রাম্প প্রশাসনের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে আছে। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প বিজয়ী হন। তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেন সরকারের সময়েই মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরও মূল্যস্ফীতির গতি খুব একটা কমেনি।

সবশেষ রয়টার্স/ইপসোস জরিপে দেখা গেছে, ৫৯ শতাংশ মার্কিন নাগরিক জীবনযাত্রার খরচ কমাতে ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর সন্তোষ জানিয়েছেন ৩২ শতাংশ।

জরিপ অনুযায়ী, যেসব ইস্যুতে ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থন বেশি, সেসবের একটি অভিবাসন। এই খাতে ৪৫ শতাংশ উত্তরদাতা তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। আগের সপ্তাহের জরিপেও সমর্থনের হার একই ছিল। তবে এখানেও অসন্তোষ বেড়েছে। জরিপে দেখা গেছে, এ ইস্যুতে ট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্টির হার ২ শতাংশ বেড়ে ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই কঠোর অভিবাসন নীতি চালু করেন। তিনি দক্ষিণ সীমান্তে সেনা পাঠান ও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত লাখ লাখ অভিবাসীকে বিতাড়িত করার অঙ্গীকার করেন।

ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য ও মানবাধিকারকর্মীরা ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব থাকার পরও বেশ কয়েকজন শিশুকে তাদের মা-বাবার সঙ্গে বিতাড়িত করার ঘটনায় সমালোচনা হয়েছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের তথ্য অনুসারে, বিতাড়িত শিশুদের একজন একটি বিরল ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত।

জরিপে দেখা গেছে, ৫৯ শতাংশ মার্কিন নাগরিক জীবনযাত্রার খরচ কমাতে ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর সন্তোষ জানিয়েছেন ৩২ শতাংশ।

রয়টার্স/ইপসোস জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ১১ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, অভিবাসন এখন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। জানুয়ারির শেষ দিকে হওয়া জরিপে এ হার ১৪ শতাংশ ছিল।

নতুন জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২২ শতাংশ বলেছে, অর্থনীতি তাঁদের প্রধান উদ্বেগের জায়গা। আগের জরিপের তুলনায় এ হারের ক্ষেত্রে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।

আরও পড়ুনক্ষমতায় বসার পর ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে কমে ৪৩ শতাংশে০৩ এপ্রিল ২০২৫

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২৬ শতাংশ মনে করে, গণতন্ত্রের ওপর হুমকি ও রাজনৈতিক চরমপন্থার মতো বিষয়গুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সমস্যা। গত জানুয়ারিতে ২০ শতাংশ উত্তরদাতা এমন মত দিয়েছিলেন।

সবশেষ এ জরিপের জন্য মোট ১ হাজার ২৯ জন মার্কিন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মতামত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের ১০০ দিন: বিশ্বজুড়ে টালমাটাল অবস্থা ২৯ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনপ্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প ও তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশির ভাগ মার্কিনের মনোভাব নেতিবাচক: সিএনএনের জরিপ০৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্ট বেশির ভাগ মার্কিন, অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যুতে অসন্তোষ বাড়ছে