বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা, দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কোনো প্রত্যাশা নেই। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক সরকার ছাড়া সম্ভব নয়। যে সরকারের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা কিংবা দায়বদ্ধতা নেই তাদের পক্ষে তা সম্ভব নয়।

সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের বাহন। নির্বাচিত সরকারের সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ক্রমান্বয়ে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধরী বলেন, ১৬ বছর বিএনপির নেতাকর্মীরা গুম, খুনের শিকার হয়েছেন। ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। জেলখানায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। ১৬ বছর তারা বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি। বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে, দেশের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য তারা জীবন দিয়েছেন, আত্মত্যাগ করেছেন।

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সমাবেশে তিনি আরও বলেন, জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থান সম্পর্কে এখন নতুন বয়ান শোনা যাচ্ছে। যে বয়ানে বিএনপির ১৬ বছরের লড়াই সংগ্রামের কোনো কথা নেই, ৩৬ দিনের আন্দোলনে বিএনপির নেতাকর্মীদের যেন কোনো আত্মত্যাগ নেই।

আন্দোলন হাইজ্যাক হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ আন্দোলন কোনো দল বা গোষ্ঠীর নয়। এ আন্দোলন সবচেয়ে বেশি অবদান বিএনপির নেতাকর্মীদের। সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমান। এ আন্দোলনে বাংলাদেশের সব মানুষের অবদান রয়েছে। আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। অভ্যুত্থান শেষে আমরা সবাই মিলে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সমর্থন দিয়েছি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী দিনের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য।

সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনারা সংস্কারের গল্প শোনাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক সংস্কারের কোনো অধিকার নেই। বিএনপির ৩১ দফা সংস্কারের মধ্যেই সবকিছু রয়েছে। বাংলাদেশে যত সংস্কার হয়েছে তা বিএনপির মাধ্যমেই হয়েছে। ভবিষ্যতে যে সংস্কার হবে তা বিএনপির মাধ্যমেই হবে। বিএনপি জনগণের আস্থার রাজনীতি করে। বিএনপি উৎপাদনের, উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করে। বিএনপি ঐক্যের রাজনীতি করে।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সাবেক এমপি এম এ খালেক, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক (কুমিল্লা বিভাগ) সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, বিএনপির কেন্দ্রী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, সাঈদুল হক সাঈদ, তদদির হোসেন জসীম, অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক জিয়া, শেখ মো.

শামীম, জেলা বিএনপির সদস্য কবীর আহমেদ ভূঞা, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ন ত কর ম ব এনপ র স সরক র র জনগণ র র র জন

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি। আগামী বছর নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। আর নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মাইকেল মিলার এ কথা বলেন। বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ফরমার অ্যাম্বাসেডরস (এওএফএ) বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউর সম্পর্ক নিয়ে ওই মতবিনিময়ের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এওএফএর সভাপতি আবদুল্লাহ আল হাসান।

ইইউ রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরেছি। সেখানে তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা এবং আকাঙ্ক্ষা লক্ষ করেছি। বাংলাদেশের সামনে এখন তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের সময় এসেছে। তরুণদের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, উন্নয়ন সহযোগীসহ সব পক্ষের এক সঙ্গে কাজ করা উচিত।’

আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশ এখন রাজনৈতিক উত্তরণের দিকে এগোচ্ছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বদ্ধপরিকর। গণতন্ত্রে উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন হওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই রাজনৈতিক ঐকমত্য দরকার।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের স্বার্থে স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। যেকোনো বিনিয়োগকারী তার বিনিয়োগের সুরক্ষার পাশাপাশি একটি স্থিতিশীল পরিবেশ চায়।

বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্কের বিষয়ে মাইকেল মিলার বলেন, ‘আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল ভিত্তি মানবাধিকার, উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও বাক্‌স্বাধীনতা। ভবিষ্যতেও আমরা এই বিষয়গুলোতে আরও জোরালোভাবে কাজ করে যাব।’

ইইউ সব সময় বাংলাদেশ থেকে বৈধ অভিবাসন প্রত্যাশা করে উল্লেখ করে মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। বিশেষ করে কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইইউ বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে সামরিক ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন।’

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইইউ তার সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে উল্লেখ করে মাইকেল মিলার বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান মিয়ানমারে তাদের প্রত্যাবাসন। তবে এই প্রত্যাবাসন হতে হবে স্বেচ্ছায় এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • ১৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজার সদস্য
  • ফরিদপুরে অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
  • আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ